দোঁহা

দেবাশিস সাহার কবিতা

 

 
আপাত আড়াল


সেদিনগুলো আর ফিরে আসে না। নির্জন বোশেখি দুপুরে মনে হয়; তোমার প্রত্যাখ্যানের চেয়েও নরম ছিল সেইসব আশাহত আগুনের ঝাপটা। জল ঢেলেছি উপুর করে কতো। স্রোতহীন নির্বিকার কথাগুলো মোম হয়ে জমে যায় চোখের পাতায়। আমি আর চোখ মেলতে পারিনা। অন্ধকার নেমে আসে চারপাশ, ফেনার মতন সব স্মৃতিগুলো ভেসে যায় ক্ষয়ে আসা অবাধ আলাপ। কি বলবে তুমি? যেভাবে হরিণ ছাপা সমতল বিরহ, দুঃখের কাছে চেয়ে নেয় ক্ষমা?



বেশ তো। আমাদের বুনিয়াদি আবেগে এখন আর কল্মিলতার মতো গা বেয়ে ওঠে না জায়মান বিশৃঙ্খলা। ধূসর বর্ণের বসন্তবিলাপ নিশ্চিন্তে নিদ্রা যায় পরিপাটি প্রহসন বেলায়। তোমার কি কিছুই বলার নেই, অচেতন এই ভাঙ্গা পরিখায়? বাঁধা পড়ে আছে শুধু নিমেষের তরঙ্গ প্রবাহ- জাত নেই কূল নেই, নেই কোনো  হাহাকার নিকষ রাত্রি বেলায়।



বৃষ্টির শরীর ভেঙে নরম, খুব নরম পাতার মতো চাহনি ভিজিয়েছে আমাদের কত কত প্রভাতী পদ্য। যেভাবে অক্ষর বিদীর্ণ হয়-সেভাবেই ফুটেছিল সোঁদা মাটির অপেক্ষারত সপ্তপদী অঙ্কুরগুলো। বর্ষা মন্দ্রিত কোন এক মোমবাতি সন্ধ্যায়, পায়ের আলতা ছুঁয়ে বেজে ওঠে ঝুমুরের কুহেলিকা। তুমি কি বিষণ্ণ সেতার? নাকি অকস্মাৎ কেঁদে ওঠা; আড়াআড়ি ভাগ হয়ে দ্বিখন্ডিত নীলপদ্ম?



তোমাকে বাসিনা সেভাবে, যেভাবে বাকিরা ভালোবাসে। ছোটোখাটো খেয়াল কিংবা অতি আদরের ছায়া পড়ে না জ্যোৎস্নামাখা ময়ূরের পেখমে। তুমি তো অবুঝ নও...তবুও তো ভাঁটফুল উঁকি দেয় অনাদর বিস্তীর্ণ যাপনে। আমাদের নবান্ন পাতে, গরম ধোঁয়ায় ওঠে কাঁঠালি চাঁপার সেই অভিমান। তোমার দমবন্ধ হয়ে হাঁপিয়ে ওঠার কাছে; খুলে দিই মেঘেদের আড়াল। কৃষ্ণপক্ষ বারবেলায় আনাগোনা বেড়ে যায় যুগপৎ বনাঞ্চল।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন