দোঁহা

অরিত্র দ্বিবেদীর কবিতা

 


বেনামী চিঠি

প্রতি,-
 
খুব গোপনে নয়, তবু কিছু লুকিয়ে
পরিশ্রান্ত পাখি সেসব জানে
প্রথমে, দেবীর আয়ত চোখটি
দ্বিতীয়ে, দেবীর গলিপথ

খুব গোপনে নয় মোটেই
সোচ্চার এ পৃথিবী 
সকৌতুকে দেবীর পানে নির্লজ্জ...

পীতবর্ণ হাতদুটি;
অলৌকিক গজমতিমালা কিছুবা ভিজে,

বাইরে আপদ কুয়াশা নিঃঝুম

বাইরে তখন বসন্ত পঞ্চমী...


প্রথম 

রাসায়নিক দূষণের Acidic Property 'র ওপর থিসিস লিখতে হচ্ছে, শেষ বিকেলটা এসে পড়ছে উৎকন্ঠী কাঁচের জানলার গায়ে মণিরত্নমের ছবির মত। চশমাটা চেপে ধরতে হল চোখে, ইচ্ছে হল বধিরসুখ নেমে আসুক, রহমানের বাঁশি ফিরে যাক অসংখ্য অচেনা সমুদ্রের পাড় ধরে ধরে; 

এই যে তোমার আপাত অস্থিরতা, বুকে ডেকে নিয়ে এল অলোকরঞ্জনের কবিতা স্নিগ্ধ প্রতিশোধে; নরম হয়ে এলে তুমি! যেন ভেতর থেকে ছুট্টে বেরিয়ে গেল কেউ দরজা দিয়ে, মনে পড়ল:

এইরকমই বিকেলবেলা, ১৪ তারিখ, এইরকমই বাসন্তী পুজো আর এইরকমই পলকা হাতের প্রাথমিক আবছা আঁচড় কিছু...


দ্বিতীয়

ফেসবুকে কেমন চেয়ে দেখো সোজা।
সরাসরি ফিরিয়ে নাও মুখ;
তোমার বাড়িতেও হয় সরস্বতী পুজো,
১৪ তারিখ আসে ইংরিজি ক্যালেন্ডারে?

একমুঠো জ্যোৎস্না ধরে রেখে যে ছেলেটা 
ছুটে গেছিল বাবার লাশ শনাক্ত করতে,
তার আকুতি ফিরিয়ে আফসোস হয় না?
করুণা কি সপ্তসাগরের লাইটহাউস,
খুব দূরবর্তী তোমার কাছে?

ছন্নছাড়া লিখতে পারা বেকারের ফুৎকারে
জ্বলে ওঠে তোমার সমাজের কথিত শুদ্ধ মুখ
আগুনে দগ্ধ হয়ে যায় বড় বড় শহর!
আপাত প্রেমিককে চেপে ধরো কি ভয়ে, অলিতে-গলিতে?

জানতে বড় সাধ যায়,
এসব পুড়িয়ে জানতে বড় সাধ যায়-
কোথায় তুলে রেখেছ গোঁসাইয়ের 'প্রেমের কবিতা'?


ইতি, স্বাক্ষর ____

চিররুগ্নের শিয়রে গান বাজে রোজ
টিভিতে দর্শক আর বাজেট বিক্ষোভ,
মনের কোণে বাবার জমা আলোহীন, কত আলো
বাইরে চাঁদফেনিল জ্যোৎস্না প্রতিরাত

নাড়া কাটা হয়ে এল প্রায়;
এখন সময়, ঘরে ফেরো।
শক্তি নেই কিছু, আসক্তিও শেষ
নালিশ শিয়রে চিররুগ্ন, গানে ঘুমে রোজ...

পড়ে থাকে এই সব জমি
নাবাল বা অকর্ষিত।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন