অনির্বাণ দে
আমার জন্ম আর বেড়ে ওঠা যেহেতু নদিয়া জেলার কল্যাণী উপনগরীতে, ছোটোবেলায় ইচ্ছে থাকলেও কলকাতা বইমেলায় যাওয়ার সুযোগ হত না। একা যাওয়ার তো প্রশ্নই নেই, বাবা-মাও নিয়ে যাননি কখনও। আসলে চট করে কলকাতায় যাতায়াতের ব্যাপারটাই তখন সীমিত ছিল। বাবা বই কিনে দিতেন ঠিকই, কিন্তু ওই আমাদের ওখানে যেটুকু আসত সেটুকুই। খবরের কাগজে আর পত্রপত্রিকায় শুধু বিজ্ঞাপন দেখেই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হত। সেসব দেখে তখন শুধু তালিকা বানাতাম আমার পছন্দের বইয়ের। সে-তালিকা আজও শেষ হয়নি, বরং ক্রমবর্ধমান। যতদূর মনে আছে, কল্যাণীতে প্রথম বইমেলা চালু হয় ১৯৯৬ সালে। তখন একাদশ শ্রেণির বয়ঃসন্ধিতে আমি। সেই প্রথম বইমেলার আস্বাদ। বইমেলার ‘রক্তের স্বাদ’ একবার পেয়েই সাধ জাগল মহানগরী কলকাতার বিশ্বখ্যাত বইমেলা দেখার। শুনেছিলাম, সে-বইমেলা নাকি বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল বইমেলা! বন্ধুদের নিয়ে জোট বেঁধে সেই প্রথম কলকাতা যাওয়া ‘একা একা’ (মানে বাড়ির লোকেদের না-নিয়ে আরকি)। সেটা ছিল ১৯৯৭ সালের কলকাতা বইমেলা, আদতে যার সরকারি নাম ছিল ‘কলিকাতা পুস্তকমেলা (Calcutta Book Fair)’। শহরের নামবদলের পর এই নাম সামান্য বদলে হয়েছিল ‘কলকাতা পুস্তকমেলা (Kolkata Book Fair)’। আরও পরে নামের আগে বসেছে ‘আন্তর্জাতিক’ তকমা।
১৯৯৭ সালের বইমেলার theme country ছিল ফ্রান্স। আর theme pavilion হয়েছিল বিশ্বখ্যাত ল্যুভ্র জাদুঘর (Louvre Museum)-এর আদলে। সেই ল্যুভ্র যার মধ্যে স্বয়ং মোনা লিসা (Mona Lisa)-র বাস। তারই অবিকল প্রতিরূপের শৈল্পিক স্থাপত্য দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। আর বইমেলার আয়তন আর ভিড় দেখে তো মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ার জোগাড়! কোথায় কল্যাণীর টাউন ক্লাবের ছোটো খেলার মাঠ, আর কোথায় কলকাতার ময়দান! কূপমণ্ডূকের দল যেন সমুদ্রে ঝাঁপ দিল এতদিনে! এত দোকান আর বই দেখে বুঝলাম এতদিন কী জিনিস miss করে এসেছি। কলকাতায় প্রথম স্বাধীনতাভোগের আনন্দভ্রমণের মধ্যেই ঘটে গেল দুটো দুর্ঘটনা। প্রথমে আমরা লোকাল ট্রেন থেকে দমদমে নেমেই মেট্রো রেলের দু-টাকার টিকিট কাটলাম পার্ক স্ট্রিটের জন্য। মেট্রোয় উঠেই আমার এক বন্ধু অনমিত্র ঘটক বলল, বইমেলাটা আসলে পার্ক স্ট্রিট আর ময়দান স্টেশনের মাঝামাঝি অঞ্চলে হয়, তবে ময়দানে নামলেই নাকি বেশি সুবিধে। তা মাধ্যমিকের school topper ঘটক আমাদের চেয়ে কলকাতা বেশি চেনে বলে ওর পরামর্শেই আমরা পার্ক স্ট্রিটের বদলে ময়দানে নেমে যেই-না বেরোতে গেছি, magnetic gate তো আর খোলে না! দৌড়ে এলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষের লোকজন। আমাদের টিকিট দেখে বললেন, “তোমাদের দু-টাকার তো টিকিট পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত! ময়দানে তিন টাকার অঞ্চল শুরু হয়ে গেছে। এখানে বেরোতে পারবে না। আবার ওখানেই ফিরে যাও।” আমরা আবার ফিরতি ট্রেনে পার্ক স্ট্রিট স্টেশনে নেমে তবে বেরোতে পারলাম। তারপর বইমেলায় ঢুকে তো আনন্দে আত্মহারা হয়ে আমরা সবাই মশগুল বই দেখতে। কখন যে আমাদের এক বন্ধু আমাদের দল থেকে আলাদা হয়ে গেছে, বুঝতেই পারিনি। হঠাৎ কানে এল মাইকের (মানে লাউডস্পিকারের) ঘোষণা। সেখানে আমাদের বাকি কয়েকজনের নাম শুনে নিজেরাই হতবাক হয়ে গেছি। দেবাশিস সানকি হারিয়ে গিয়ে আমাদের খুঁজে না-পেয়ে অফিসে গিয়ে ঘোষণা করাচ্ছে। তারপর তো আমরা গিল্ড অফিসে গিয়ে আবার পুনর্মিলিত হলাম। এবার আমরা একসঙ্গে ঘুরে প্রচুর ভারী ব্যাগ নিয়ে কল্যাণী ফিরে এলাম মানে-মানে। সেই ব্যাগে অবশ্য কেনা বইয়ের চেয়ে বিনামূল্যের catalogues বা পুস্তকতালিকাই বেশি ছিল (আজকাল বই কিছু বেশি কিনলেও মূল আগ্রহ কিন্তু থাকে ওই catalogues সংগ্রহ করায়)। আর সেই পুস্তকতালিকার মধ্যে ছিল আমার এখনকার অফিস ভারতী ভবনও। তখন কি আর জানতাম, ঠিক ন-বছরের মাথায় আমি সম্পাদনার কাজ নিয়ে যোগ দেব এই ভারতী ভবনেই!
বাড়ি ফেরার দু-দিন পরেই দূরদর্শনে আর-এক বিপত্তির খবর দেখে হতভম্ব হলাম: আমাদের দেখে-আসা সেই বিশাল বইমেলার অধিকাংশটাই নাকি আকস্মিক আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে! আর পুড়ে-যাওয়া দোকান থেকে চলছে যথেচ্ছ লুটপাট। একেই বোধহয় বলে, কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ। শুনেছি, বইচুরি নাকি তেমন ঘৃণ্য অপরাধ নয়। কিন্তু বড়ো প্রকাশক থেকে ছোটো বইদোকানির সেই সর্বনাশের সুযোগ নিয়ে বই ছিনতাই করে যারা পরবর্তী সময়ে চড়া দামে পুরোনো বই ‘rare’ তকমা সেঁটে বিক্রি করে চলেছে তাদের আদৌ ধোয়া তুলসীপাতা বলা যায় কি?
পুরোদস্তুর সরকারি মেলা না-হওয়া সত্ত্বেও আজ থেকে ঠিক ছাব্বিশ বছর আগে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের তৎকালীন বইপ্রেমী মন্ত্রী তিন দিনের মধ্যে যেভাবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে (এবং অবশ্যই প্রকাশক সবিতেন্দ্রনাথ রায়ের সহায়তায়) ফিনিক্স পাখির মতো বইমেলার পুনর্জন্ম ঘটানোর বেনজির জাদু দেখিয়েছিলেন তা বিশ্বের বইমেলার ইতিহাসে বিরল। পরবর্তী সময়ে ক্রমান্বয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী হয়েও তিনি নিয়মিত বইমেলায় যাতায়াত করতেন অবাধে। প্রচারের আলোয় নিজেকে আনার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বইমেলার উদবোধকের ভূমিকায় তাঁকে দেখা যায়নি কোনোদিনই। বরাবর বিশ্ববরেণ্য শিল্পী-সাহিত্যিকরাই এই মেলার সূচনা করেছেন (হ্যাঁ, উদবোধনের হাতুড়ি না-ভেঙে ও না-সারিয়েই)। ১৯৯৭ সালের উদবোধকের নামটি প্রণিধানযোগ্য: জাক দেরিদা (Jacques Derrida)। সাধারণত theme রাষ্ট্রের কোনো প্রাজ্ঞ ব্যক্তিই মেলার শুভসূচনা করতেন তখন।
যেসব সর্বজ্ঞ অতিদক্ষিণপন্থী ও নব্যবামপন্থীরা উদবোধকদের নামের ভ্রান্ত তালিকাটি (অ)সামাজিক মাধ্যমে গণবণ্টনের গুরুদায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন তাঁরা আমার ওপরের বক্তব্য দেখে আনন্দে উদবেল হয়ে উঠবেন না এখনই। এ-বিষয়ে আমার ভাষণ আর-একটু বাকি আছে। আচ্ছা, ১৯৭৮ সালে যিনি উদবোধন করেছিলেন বলে এই তালিকাটি দেখাচ্ছে সেই ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তো ১৯৭৭ সালের ২৯ মে তারিখে প্রয়াত হন! তাহলে তাঁকে কি পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড (হ্যাঁ, এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানই কলিকাতা পুস্তকমেলার নিয়মিত আয়োজক) প্রেতলোক থেকে প্ল্যানচেট করে ভূলোকে নিয়ে এসেছিলেন? এ-প্রশ্নের উত্তর হোয়াট্সঅ্যাপ বিশ্ববিদ্যালয়ে খুঁজে লাভ নেই, উত্তর দিতে হবে আয়োজক সংস্থাকেই। শুধু উইকিপিডিয়া নয়, গিল্ড-প্রকাশিত fair directory-তেই তো এই ভ্রান্ত তালিকা দেওয়া হয় প্রতিবার! আজ সেই মহাগ্রন্থের একাধিক সংস্করণ খুঁজতে গিয়েই বুঝতে পারলাম, সর্ষের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভূত। তবে হ্যাঁ, ২০১৪ সালের আগে রাজ্যের সরকারি শাসক কখনোই কলকাতার এই বেসরকারি মেলার উদবোধনের দায়িত্ব নিতে দুঃসাহস দেখাননি। এ-ঘটনাটি আমার জীবদ্দশাতেই ঘটে চলেছে নিয়ম করে। কিন্তু আমার জন্মের ঠিক আগের বছর কে মেলার শুভসূচনা করেছিলেন, সেটা জানার প্রত্যক্ষ সুযোগ আমার ঘটেনি বলেই আমি সেই আমলের প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের শরণাপন্ন হতে চাইছি। কেউ এগিয়ে আসবেন কি?
এবার অন্য-একটি প্রসঙ্গে আসি। কলকাতায় কিংবা রাজ্যে সরকারি বইমেলা তাহলে কি হয়নি কখনোই? হ্যাঁ, হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন কলকাতার বুকে বছরে দুটো প্রধান বইমেলা হত। গিল্ড-আয়োজিত ‘কলিকাতা পুস্তকমেলা’-র প্রতিযোগী হিসেবে ময়দানে হাজির ছিল রাজ্য সরকার-আয়োজিত ‘পশ্চিমবঙ্গ গ্রন্থমেলা’। বেসরকারি পুস্তক বনাম সরকারি গ্রন্থের এই রেষারেষির সুফল অবশ্য ভোগ করত বইপ্রেমী মানুষেরাই। কল্যাণীতে থাকার কুফল হিসেবে ছোটোবেলায় আমার অবশ্য সরকারি গ্রন্থমেলায় আসার সুযোগ হয়নি কখনও। তবে এই লড়াইয়ের ময়দানের ডার্বিটা কিন্তু শেষমেশ জিতে নিয়েছিল বেসরকারি মেলাটিই। অচিরেই সরকারি ‘গ্রন্থমেলা’ নিজেকে বিলীন করে দিয়েছিল বেসরকারি ‘পুস্তকমেলা’-র বুকেই। এর পর থেকে সরকারি বইপত্রের স্টলও বসতে লাগল এই বেসরকারি বইমেলায়। কলকাতার একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বইমেলাটি আদতে বেসরকারি উদ্যোগে হলেও প্রত্যেক জেলাতেই কিন্তু সরকারি বইমেলা আয়োজিত হয় আজও। এমনকি ইদানীং ‘কলকাতা জেলা বইমেলা’-ও শুরু হয়েছে। যত বইমেলাই হোক, তাতে দিনের শেষে আপামর বইপোকা ও বইবিক্রেতারই লাভ।
কলকাতা বইমেলার অনেকগুলো চরিত্রগত বদল এসেছে। আগে টাকা দিয়ে টিকিট কেটে বইমেলায় ঢুকতে হত। ময়দানে যখন বইমেলা হত তখন তো মেট্রো রেলের চৌম্বক টিকিটের সঙ্গে বইমেলার প্রবেশপত্রও কিনতে পাওয়া যেত। মনে আছে, আমি ২০০৬ সালে ভারতী ভবনে ঢোকার পর থেকে বইমেলার অংশগ্রহণকারী প্রকাশক হিসেবে বিনামূল্যের pass পেতাম। নিজেকে বেশ privileged মনে হত সেই pass হাতে নিয়ে সসম্মানে ঢোকার সময়ে। এখন অবশ্য বইমেলার প্রবেশদ্বার অবাধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন ছোটো-ছোটো প্লাস্টিকের পাউচে জল পাওয়া যায় বিনামূল্যেই (তাতে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে কি না, পরিবেশবিদরা ভেবেছেন কি?)। কলকাতা বইমেলা ‘আন্তর্জাতিক’ তকমা পাবার পর থেকে আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডার অনুসারে প্রত্যেক বছর জানুয়ারি মাসের শেষ বুধবারে শুরু করা বাধ্যতামূলক বলেই জানতাম। কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষমতার জাদুবলে গত কয়েক বছর ধরে সেসব নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না গিল্ড কর্তৃপক্ষ। ভয় হয়, এই বেনিয়মের পর কষ্টার্জিত খেতাবটা থাকবে তো আর?
বোধহয় সবচেয়ে দুঃখ হয়েছিল যখন পরিবেশবিদদের মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাই কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে ময়দান থেকে বইমেলাকে উৎখাত করা হল। মনে আছে, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব গুহ, মৃণাল সেন-সহ বুদ্ধিজীবীরা বইমেলাকে ময়দানে রেখে দেবার দাবিতে হেঁটেছিলেন। ২০০৭ সালে অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে গিল্ড পার্ক সার্কাস ময়দানে বইমেলা করার সিদ্ধান্ত নিলে সেখানেও পরিবেশবিদদের আপত্তিতে বইমেলা হতে পারেনি। বইমেলার অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়লেও তৎকালীন ক্রীড়ামন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে ‘কলকাতা পুস্তকমেলা’-র পরিবর্তে শুধু ‘বইমেলা’ নাম দিয়ে একটি বিকল্প মেলা আয়োজিত হয়েছিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। ২০০৯ থেকে ইস্টার্ন বাইপাসের ধারে সায়েন্স সিটির কাছে মিলন মেলা কমপ্লেক্সে চলে গেল কলকাতা বইমেলা। আর আমাদের মতো মফস্সলের পাঠকদের যাতায়াতের নরকদর্শন শুরু হল সেই থেকে। আরও পরে বিধাননগরের করুণাময়ীর সেন্ট্রাল পার্কে সরে এলেও যাতায়াতের সেই যন্ত্রণাটা কিন্তু বদলায়নি এতটুকুও।
অবশেষে ১৭ বছর পর এই ২০২৩ সালের বইমেলায় সেই নরকযন্ত্রণার উপশম হল ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রো লাইনের সৌজন্যে। কী যে আনন্দ পেলাম শিয়ালদহ থেকে আরামে মেট্রো রেলে করুণাময়ী যাতায়াত করে! ময়দানের বইমেলার হারিয়ে-যাওয়া সুখ যেন ফিরে এল আবার। সেইসঙ্গে সেন্ট্রাল পার্কে ‘বইমেলা প্রাঙ্গণ’ নামে স্থায়ী জায়গা পেল ‘কলকাতা বইমেলা’ (কোনো-এক অজ্ঞাত কারণে গত ২০১৭ থেকে ‘কলকাতা পুস্তকমেলা’ নামটি বদলে গিয়ে ‘কলকাতা বইমেলা’ নামটিই বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত হতে দেখছি)। এ-বছর ধুলোবালিও কম উড়েছে বলে স্বস্তিতে ঘুরলাম। কংক্রিটের মেঝে হওয়ায় কাদা পেরিয়ে হাঁটার ব্যাপারটাও উধাও।
তবে এতসব পরিবর্তনের ফাঁকে একটা ব্যাপার কেউ লক্ষ করলেন কি? কলকাতা বইমেলা কিন্তু আর কলকাতা পৌর অঞ্চলে হয় না, হয় পার্শ্ববর্তী উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বিধাননগর পৌর অঞ্চলে!
হ্যাঁ, ঠিকই পড়লেন: কলকাতা মহানগরীর বুকে আর আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তকমেলা হয় না! আর ফিরবে কি কখনও? বোধহয় না।