দোঁহা

জ্যোতির্ময় শীলের গুচ্ছ কবিতা

 

 

অধরা নবান্ন

আয়েশের ভাদর চালে 

সালতামামি ডুমুর ফুল।
তৃষ্ণাকারার রাঘব বোয়াল,
সাঁজআঁধারে ফিকে লাল শাড়ির পাড়,
তখন কয়েক পশলা আদলে 
স্পন্দনখানিক জোড়া শালিক;
বাঁধের ওপার কেমন নিঝুম আখ্যান—
ফ্যানের উপছে পরা আবদার।

ভাবলেশহীন দুপুরবেলার কোড়াক পাখি;
মেঘলা আনাগোনায় 
ভেসে আসা বিবর্ণ পাতায় 
উপোসী গায়ে অভ্র ছিটিয়ে যায়;
ঘাসের আলতো রঙ যেমন
সুতো বাঁধা অমোঘ শ্রমণ
বিকিয়ে দেওয়া স্পর্শকাতর
সাধ জাগে এমন পান্তায় কাঁকড়।

খোই আর আউশ ধান বিকনোর পালা গান
ক্রিয়াপদ চতুর্ভুজে থানে মোড়া আখ্যান।


শেষের শিউলী

ইদানীং বোঝাপড়া শেষে 
আবদার নিভে আসে। 
তোমার অন্য ভাষা
চৌকাঠ পেরিয়ে এড়িয়ে যাওয়া একটু আধটু
(পেরোনো সহজ নয় তবুও)।

কখন এক বেড়াল পাঁচিল কিনারায়
চুপিসারে দোটানায়
দেওয়ালের কিনারে বা গ্যারাজের কোনায়
সেঁধিয়ে কাটাবে হিম রাত উপবিষ্টতায়।

বকুল ঝরার কালেও
ঘাস আর বাড়তি খড়কুটো
কাঁচা সবুজে ভোরের গঙ্গাফড়িং 
এলোমেলো জমকালো 

তবু মন অমোঘ উদাসীন শিউলিভাবে আসীন।



মধুবাতা ঋতায়তে

আউলা বাতাসে রেণু ভেসে
ঋতু জমে শার্সির কাঁচে;
রোজনামচা আস্বাদ নির্বাক।
টেবিলের কাগুজে ফুল-পাতায়
উঁকি দেওয়া এককালের কোলাজ মরশুম।
কখনো একঘর লোডশেডিংয়ে সন্ধ্যে;
পড়া সেরে ফিরতি পথের ইচ্ছে নুড়ি পাথর।
ঝাপসা ফানুস কালি 
দখিন খোলা জানালা—
বিন্দু শিশির কচুপাতায় বর্ষার জলছবি কিশলয়।
কাশফুল আনন কিংবা কখনও আলপনা পৌষ পাবন
বেসুরো তালের মাঝে,
গল্প-স্বল্প মোড়কে জড়ির সুতোর;
দেওয়াল আঁকা নকশীকাঁথা

সহজ পুঁইবীজের রং যেমন।














একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন