কলঙ্ক
এভাবেই কাঁদবে সে। এভাবেই কাঁদবে আশরীর।
এমনই অ-বোধি, ছোঁয়ার আগে বুঝতে পারেনি, এত ফাঁকা
মাটি ছাড়া, জল ছাড়া, কে হয়েছে কাদা, কোনকালে?
এভাবেই কাঁদবে...আর তার সফেদ আঙরাখা-
দূর...বহুদূর অবধি ছড়িয়ে ছড়িয়ে যাবে বৃন্দাবন ঘ্রাণ।
কি করবো বলো, এতটা অসাড় হাতে মাধব লেখা যায়?
তাই তো স্পর্শহীন। তাই তো খুলিনি তার অথৈ নিচোল।
অথচ বাঁশরী বাজলে কাদা লাগে কাদা সারা গায়...
দেখেছো করতল, যা যা ছুঁয়েছিলে এতকাল সব অসাড় ও বৃথা।
তবে, কলঙ্ক লেখো এইবার। লেখো তুমি মোহক মোহক...
আখরে আখর তুলে কাদাজন্ম নাচাও তো দেখি।
লিপ্সা লেখো। ছন্দময়। দিকে দিকে লাম্পট্য হো'ক।
রতি। পুষ্প। ব্রজ। নর্মাচার মাখামাখি করো প্রগলভে...
বলো তো কবিতা, আরও কতটা কলঙ্ক দিলে তুমি রাধা হবে?
সম্যক্
এবং লেখার কথা ভাবছি
লেখার শরীরে রাত দেড়টা
এখানে লুকিয়ে আছে সংকেত
কোন ফুল? অচেনা সুগন্ধ।
অথচ লেখার কথা ভাবছি
আখর জলের নিচে মগ্ন...
সহসা উঠছে ভেসে ফের ডুব
নদীকে লিখতে হয় ছন্দে ।
জীবন, লেখার কথা ভাবছি
জ্যোৎস্না পড়ছে...আহা! খয়রাত
তবু কি শূন্য করঙ্ক-
'আমার আকাশদশা চলছে'...
এখনও লেখার কথা ভাবছি
উপমা, নিদ্রা ভাঙো। তৃষ্ণা...
ঘুরিয়ে রেখো না শম, বিশ্বাস।
আর কতটা ব্যাকুল হলে, শুনবে?
ব্যাকুল...লেখার কথা ভাবছি।
এই তো আমার দিকে ফিরলো।
লেখার নিগূঢ় ভাবে ঝুঁকলাম-
তোমার মুখের মতো সম্যক্...
মাটি
এসো ফসলের পাশে বসি। বসে থাকি...
এসো গান গাই ধানের ভাষায় ।
এসো ইবাদতে। এসো লালন মাখি দেহ দেহ...
এসো করতালি দিয়ে নাচি নবজাতকের মতো উৎসাহ ।
এসো হে প্রণয় জলে ও নিষেকে। এসো কৃষিবাসনায়...
এমনই তো হয় শ্রীলা। দিবানিশি এমনই তো হয়।
কবিতা ছোঁয়ার প'রে সেই ঠোঁট ছোঁয়ালে তোমাকে...
তোমার মুখে-বুকে-তলপেটে মাটি মাটি মাটি লেগে যায়।
বন্ধ্যা
আয় দেখি লিপিমালা। দেখি আয় কাব্য চেতনা।
সৃষ্টি। জনন সুখ। উন্মাদনা। ছন্দ ছলাৎ ছল।
আয় স্ফুলিঙ্গরাশি। মহানন্দ হাতে তুলে নাচি।
কিন্তু, কই লিপি? কই সুখ? আনুকূল্য? লিঙ্গ গলে জল ।
নিবীর্য। অক্ষম। ক্লীব। হে ঘৃণ্য সত্তা। অসহায়...
মাখ মাখ আরও মাখ আশরীর শূন্যতা অগাধ।
অবক্ষীণ, হতভাগ্য, দে থুতু, দে থুতু নিজ মুখে।
হ্যাঁ, এই দশাই সত্যি। নেই নেই...কত কাঁদবি কাঁদ।
কত অশ্রু? কত আর্তি? কী হবে হাহাকার করে ?
এ তো নিয়তিরই অভিপ্রায়। পোড়ামুখ কোথায় লুকোবি?
মাখ মাখ আরও মাখ আশরীর শূন্যতা অগাধ।
রে জন্ম অভিশাপ আমরণ বন্ধ্যা থেকে যাবি...