প্রার্থনা
বয়স পালানো মেয়ে পা ঝুলিয়ে
বসেছে ঐ শরীরের ডালে
যত রঙ বয়ে যাচ্ছে নদী হয়ে,
ফুল হয়ে, আকাশ, বাতাস, পাখি হয়ে
সব কুড়িয়ে মেখে নেবে সে মুখে
যদি বলিরেখা ঢাকে তার কিছু
যদি চিবুকের ত্রিবলি পেরিয়ে
ভালোবাসা উঠে আসে চোখের মণিতে!
বসন্ত বোঝে না এসব কিছুই
লাল রঙ তার কবেকার প্রিয়; তাই
আবিরে, পলাশে রঙ খোঁজে শুধু;
না পেলে মুখ ঘুরিয়ে চলে যায় অবহেলে
বয়স পালানো মেয়ে, ভাবে, শুধু ভাবে
শীত কি কোন ঋতু নয়, তাহলে? কিংবা প্রখর গ্রীষ্ম!
জোড়হাতে শুধু বলে, ‘হে শালিকঠাকুর,
মেনোপজ একটা ঋতু বলে ঘোষিত হোক এবার থেকে...'
আশাবরি
আমি মেনোপজের দিকে হাঁটি
না, মেনোপজ আমার দিকে হাঁটে
এসব প্রশ্নের ভেতর দীর্ঘ হয়ে আসে বিকেলের ছায়া
দেখি, পলাশ ঘুমিয়ে পড়েছে কেমন
শরীরের ডালে ডালে ক্লান্তিতে
সে জানে, সন্ধ্যা নামবে এখনই
সমস্ত লাল রঙ নিভে গেলে,
এসব নদী, গিরি, বন আর গুহাখাতে
কিছু রুপোলি তারের জোছনা ঝিলিক
দেবে চুলে, চোখেমুখে; লন্ঠন দুলে উঠবে কিছু,
কিছু ছায়া কায়াকে পেরিয়ে চলে যাবে
দ্বিধা আর বিষণ্ণতার দিকে অনন্ত
অস্তিত্বের রন্ধ্রে রন্ধ্রে চারিয়ে যাবে
এক আশ্চর্য গভীর শিকড়হীনতা
তবু, এখানেই নটেগাছ মুড়োয় না কখনো
ইশারাও রূপকথা হয় ভালোবাসায়
আঙুলে আঙুল ছুঁয়ে থাকলে শেষপর্যন্ত
বসন্তই অফুরন্ত গন্তব্য হয়ে যায়