দোঁহা

পৌষালী চক্রবর্তীর কবিতা


ল্যান্ডমাইনের পরিচয়পত্র

তাহার দাওয়ায় মোতে সারিবদ্ধ উর্দির ঠ্যাং
দুপুরের ভাতঘুমে ক্যামোফ্লেজ মুশকিল আসান
রাতচরা ডাক দিলে,অন্নগন্ধে নেমে আসে ছায়া মানুষেরা
কে কাহাকে ফেলে  আর 
কে কাহাকে রাখে!
এখানে চারণভূমি ঘাসহীন; বুনো ময়ূরীর ঢল
পাহাড় ডিঙিয়ে চলে কাঁখে-বাচ্ছা, মেষপালিকার দল
তাদের জীবিকা নেই স্থির;
গমখেত বহুদূর, হাটবার চাঁদের আয়ু
তারা শুধু সংখ্যাতত্ত্ব; এক -দুই, দুই-এক-তিন
এস্টিমেট অতিভার; রাস্তা হবেক লাই বটে!
একদিন ভোর ভোর করোটিতে দো'নলা বন্দুক
রাজার চিঠিটি পড়ে দেয়
এ গ্রাম উচ্ছেদ হবে, পাহাড়তলিতে নেমে যাবে
তাদের টোটেম মেরে কী ফিস্টি,  জিভ চুকচুক
গুরুভার ব্লাসফেমি পিতা কভু সইতে কি পারে?
হাঁড়িকুড়ি তুলে নাও, কোলের মেয়েকে বাঁধো পিঠে।
বাঁশের গেরস্থ খাঁচা পাহাড়েই পরে থাক
প্রত্ন জাহের স্থানের পাশে।

কোনওদিন যদি ফেরো, 
দেখবে কেমন আছে তোমার সংসার 
ভিটে মাটি 

পাইন্যা লতার সাজ গায়ে ধরে

সে অচেনা গোধূলিতে ময়ূর নৃত্য করে পূর্ব-পূর্বতর নারীদের সাথে সাথে
এভাবেই ভেসে যায় হাঁস আর হাঁসিলের ডিম 
প্রলয়পয়োধিজলে

আগস্ট ১৫ আর একুশ শতক 

একটি বিরুদ্ধ গ্রাম
ছাউনি হারায়...



 চাঁদের শলাকা


এখন শান্ত বসি জলের পাশে এসে
মনে হয় এই যেন অনিবার্য নিয়তি
ভারহীন হবে বলে তুমি এক চাঁদের শলাকা
পুতিগন্ধ,  আঁশগন্ধ,অন্নগন্ধ ফেলে
তোমার গভীর শ্বাস ঘন কৃষ্ণ নীল
ভেসে গেল দূরাগত সংকেতে একা।
কী দারুণ বৃষ্টি হল; নিদারুণ বৃষ্টি হল
অভিকর্ষ নেই তাই
বৃষ্টি জল উর্দ্ধে উঠে গেল।

এখন চাঁদের পিঠে বসে, উলঙ্গ তুমি 
দেখো পৃথিবীর মুখ

কলঙ্করেখা ফোটে 
মৃত্যু জেগে বসে থাকে, দেহটি আগলায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন