দোঁহা
৪৫৪
দলা মোচড়ানো কাগজের পাতা-
খুলে পাই মুখোশের জালে মানুষের মুখ,
প্রেমের কাহিনী যমুনায়, রাধা কি বুঝেছে
কাগজি অন্তর ফোঁড়ে কতটা অসুখ!
৪৫৫
কি করে তোমার মনেরে চিনিব, পাইব তোমারে রাখিতে!
বিন্দু আঁকিল জলের পদ্ম-পাতার ছায়াতে ঢাকিতে,
তোমার দিলের পাতার বাঁশিতে বিধুর কাদার বালক
খুঁজে খুঁজে তার ক্লান্তি জমায়, কে যেন ছড়ায় পালক।
৪৫৬
যে আমাকে অতলান্তিক দরিয়া কূলে ফেনার ধাঁধায় বাঁধে
তার জন্যে কাগজের নৌকা ভাসাতে ভাসাতে আমি
ডুবে যাই নুড়ি পাথরের অমসৃণ খাপে,
একজন অভিকর্ষ ঘেষে ডুবতে ডুবতে
নাকে মুখে জলের উষ্ণতা পান করে
তাকে খুঁজে পাই বধির ও বোবা, অনিবার্য ক্ষত চিহ্নের তাপে।
৪৫৭
খেলছো পাশা দূরে বসে, হরগৌরীর ভুল তাস
কঙ্কণে তোর লেখা আছে আমার সর্বনাশ।
৪৫৮
হাঁড়ি ঘর খাঁখাঁ, উনুন জ্বলে না
অভাবী নগর, কোথা গেলে পাবো সুখ!
আমি ভুলে যাই ইষ্ট-দেবের
নামের যজ্ঞ ক্ষুধা যদি জাগরুক।
৪৫৯
পেটে থাকে যদি পিঠের রোয়াক
সয়ে যাবে ধর্মের ছড়ি বারোমাস,
অনাথ পিঠের প্রতিটি আঘাত
লিখে যাবে কষ্টের লাল ইতিহাস।