দোঁহা

মারুফ আহমেদ নয়নের কবিতা

 

তোমাকে পেয়ে গেলে

ঈশ্বর প্রদত্ত বরে, যদি পেয়ে যাই তোমাকে। কেমন হতো সবকিছু। তুমি বহুমূল্যের শাড়ী, গহনা ও গোলাপের মুকুট পড়ে, হেঁটে যেতে সম্রাজ্ঞী, বিবাহ প্রাঙ্গণে। তোমাকে ঘিরে হাসি-উচ্ছ্বাস। উঠোনে পায়রার বাক-বাকুম। প্রাচীন চাঁদের পৃষ্ঠা হতে পাঠ করা হচ্ছে, শুভময় বাক্য, কবুল। তুমি উচ্চারণ করছো। যেনো একটা দোলনচাঁপার বন মৌনতায় নত করেছে মাথা।

আর থিবস নগরের সেই দ্বাররক্ষী স্ফিংক্স খেয়ে ফেলেছে নিজেকে। হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে সমস্ত জটিল ধাঁধার গোলক ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে সব। তুমি কি এমন ধাঁধা, সমাধান জানি না। শুধু ভ্রম প্রিয় সেই খরগোশ ছানার মতো আলোর বল দেখলে ছুটে যাই। ঘাস, লতা-পাতা আহার করি। প্রার্থনা করি, বাঁচিয়ে রাখুন, অজগরের চেরা জিহ্বা থেকে।

মূলত তা হলো মৃত্যুগুঞ্জন। মহাপ্লাবনের দিন শেষে, শরীর থেকে খসে পড়বে মাংস। পোকামাকড় স্পর্শ করবে না। আমি তোমার ভয়ে একটা ত্রিভুজাকৃতির পাথরের ভেতর লুকিয়ে পড়বো। আমাকে হত্যা করো না। জেনো, আমার ঈশ্বর তোমাকে ক্ষমা করবেন না।


শামুকদের যৌনতা



এইসব ঝঞা বিক্ষুদ্ধ রাতে কেনো আসো তুমি। আমি পর্যবেক্ষণ করি, শামুকদের যৌনতা। বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে, তাদের কর্শিকা, খুঁজে নিচ্ছে সঙ্গিনীকে, বিঁধিয়ে দিচ্ছে শরীরি সূচ। তখন নিজের জন্যে একটা কফিন প্রস্তুত করছি। যে কফিনে আমি ঢুকে যাবার পরে, তুমি মেরে দেবে শেষতম পেরেক। তারপর ভাসিয়ে দেবে গভীর সমুদ্রে।

তারপর স্বপ্নের ভেতরে, কফিনের ছূতোরকে বলবো। অপেক্ষা করো, পৃথিবীর শেষ কর্ম দিবসে দেখা হয়ে যাবে। আঁকো কাঠের শরীরে জলপাই ফুলের নকশা। সাপেদের মল্লযুদ্ধ সবুজ ঘাসের ভূমিতে। জানো তো, গাছেরা প্রাণহীন নয়। অনাদিকাল জেগে থাকে। যদিও এই মগ্নতার পাঠশালায় শিস দেয়, হাওয়ার শিষ্য দোয়েল। এসো, নৃত্য করি। শরীরে পাতার পোশাক, ঝনঝন বাজে। আগুনে পোড়ে হরিণের কঙ্কাল।

আমার এমন রাত্রিতে, আদি পিতা আদম এবং মাতা ঈভের কথা স্মরণে আসে। কেনো তারা ভক্ষণ করলেন সেই নিষিদ্ধ ফল। পূর্বে কেমন মধুময় ছিলো স্বর্গে তাহাদের দিন। জানি, তুমিও প্রলুব্ধ করবে আমাকে মৃত্যুর নিকটে যেতে। অথচ আমি দিক চিহ্ন ভুল করে কেবল তোমার কাছে যাবো। আমার ধারালো ছুঁড়ি আমাকে তুলে নাও তোমার বুকে।

2 মন্তব্যসমূহ

  1. মারুফ আহমেদ নয়নের লেখা ভাল লাগল। "শামুকদের যৌনতা" কবিতাটিতে তৃতীয় স্তবকটির কোনো প্রয়োজন নেই বলে আমার ব্যক্তিগত মত। কবির জন্য শুভেচ্ছা।

    উত্তরমুছুন
  2. বেশকিছু কবিতাই পড়লাম। পড়ে মনে হলো, কবিতাগুলো কবিদের আরো অভিনিবেশ কামনা করছে।

    উত্তরমুছুন
নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন