দোঁহা

লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডলের কবিতা

  


রাত ন'টায় দুজনেই একা
 

চাঁদের গা'য়ে মেঘ লেগেছে। সুধাদাদু বললেন ঠিক করে বল-চাঁদটা তো লুকাচ্ছে। আমিও ভাবছি লুকাচ্ছে তো বটেই, মেঘের পেছনে দৌড়াচ্ছে একটু আড়ালের জন্য-কখনো পাতলা কখনো ঘন ছোপ কালো। আবার সটান দৌড়ে যাচ্ছে উত্তর দিকে-উত্তর কি জানিস?  উত্তর মানে সম্মূখ, উত্তর মানে ভবিষ্যৎ- যাদের জন্য অতীত অর্থাৎ আমরা বেঁচে থাকবো, উত্তরই আমাদের বাঁচিয়ে রাখবে।           

রাত নটায় দুজনে একা। উনি ফিরছেন ঘরের দিকে, আমিও-ভারসাম্যহীনে হাঁটছেন, ধস পার হচ্ছেন একা একা।  কালচিতি সাপটা বেরিয়ে যাচ্ছে ঢালাই রাস্তা ডিঙিয়ে। গরমে চাঁদটাও ভালো নেইরে, নাহলে আকাশকে দাঁড় করিয়ে রেখে অন্য কোথাও চলে যেতে পারে- বেচারা আকাশ-কেবল বুকটা ঢাকতে পারল না কোনদিন-সরাইখানা হয়ে থেকে গেল চিরকাল।


 কারো পাসে হেঁটে যাবো একদিন
 

তিলফুলে লেগে আছে চাঁদ। তার কাছ দিয়ে রাস্তাটা সাপের মতো এঁকেবেঁকে ঢুকে যাচ্ছে বরদার ভিতর। এখানেই আমি ও কঙ্কনা-ঝড় টপকে শীতল বাতাস ছুঁয়ে যাচ্ছে ইলেকট্রিক পোস্ট। আমি  ভেসে  যাচ্ছি হৃদয় অতলান্ত ফুল। বৃষ্টিতে একা ভিজে পাঞ্জাবির বোতাম, কারো পাশে হেঁটে যাবো একদিন-দূর থেকে আসে তারই ভেজা ত্বকের ঘ্রাণ-কেবল ফুলে ডুবে যাচ্ছ আমাদের চাষাবাস।

একমুঠো পাঠিয়েছিলাম তাও।  বলেছিলেন-আমার মৃতদেহের উপর ছড়িয়ে দিও, আসলে তিল তামা তুলসীর ওই নির্দিষ্ট ব্যবহার তিনি ভুলতে পারছেন না আজও-আমি সেই  গেঁয়ো উদাসীনতায় পথে  রাখি পথ-এই আমার জন্মগ্রাম;  অন্য কেউ  গ্রামমোহিনী সে। দাঁড়িয়ে থাকে  সমস্ত ঝড়ের পর নতস্তনী–হেলান দেয় বাঁশবেড়ায় ।  সাদা বাতাসে বাজে আধ-পাগলা হরিদাসের বাঁশি  ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন