রাত ন'টায় দুজনেই একা
চাঁদের গা'য়ে মেঘ লেগেছে। সুধাদাদু বললেন ঠিক করে বল-চাঁদটা তো লুকাচ্ছে। আমিও ভাবছি লুকাচ্ছে তো বটেই, মেঘের পেছনে দৌড়াচ্ছে একটু আড়ালের জন্য-কখনো পাতলা কখনো ঘন ছোপ কালো। আবার সটান দৌড়ে যাচ্ছে উত্তর দিকে-উত্তর কি জানিস? উত্তর মানে সম্মূখ, উত্তর মানে ভবিষ্যৎ- যাদের জন্য অতীত অর্থাৎ আমরা বেঁচে থাকবো, উত্তরই আমাদের বাঁচিয়ে রাখবে।
রাত নটায় দুজনে একা। উনি ফিরছেন ঘরের দিকে, আমিও-ভারসাম্যহীনে হাঁটছেন, ধস পার হচ্ছেন একা একা। কালচিতি সাপটা বেরিয়ে যাচ্ছে ঢালাই রাস্তা ডিঙিয়ে। গরমে চাঁদটাও ভালো নেইরে, নাহলে আকাশকে দাঁড় করিয়ে রেখে অন্য কোথাও চলে যেতে পারে- বেচারা আকাশ-কেবল বুকটা ঢাকতে পারল না কোনদিন-সরাইখানা হয়ে থেকে গেল চিরকাল।
কারো পাসে হেঁটে যাবো একদিন
তিলফুলে লেগে আছে চাঁদ। তার কাছ দিয়ে রাস্তাটা সাপের মতো এঁকেবেঁকে ঢুকে যাচ্ছে বরদার ভিতর। এখানেই আমি ও কঙ্কনা-ঝড় টপকে শীতল বাতাস ছুঁয়ে যাচ্ছে ইলেকট্রিক পোস্ট। আমি ভেসে যাচ্ছি হৃদয় অতলান্ত ফুল। বৃষ্টিতে একা ভিজে পাঞ্জাবির বোতাম, কারো পাশে হেঁটে যাবো একদিন-দূর থেকে আসে তারই ভেজা ত্বকের ঘ্রাণ-কেবল ফুলে ডুবে যাচ্ছ আমাদের চাষাবাস।
একমুঠো পাঠিয়েছিলাম তাও। বলেছিলেন-আমার মৃতদেহের উপর ছড়িয়ে দিও, আসলে তিল তামা তুলসীর ওই নির্দিষ্ট ব্যবহার তিনি ভুলতে পারছেন না আজও-আমি সেই গেঁয়ো উদাসীনতায় পথে রাখি পথ-এই আমার জন্মগ্রাম; অন্য কেউ গ্রামমোহিনী সে। দাঁড়িয়ে থাকে সমস্ত ঝড়ের পর নতস্তনী–হেলান দেয় বাঁশবেড়ায় । সাদা বাতাসে বাজে আধ-পাগলা হরিদাসের বাঁশি ।