সায়নী ভট্টাচার্য
“কই দেখি? কেমন ছিরির মুখখানা?” নীলিমা ঝুঁকে পড়ল নাতনির মুখের ওপর। থুতনির পাশে আলগা তর্জনী ঠেকিয়ে মুখটা একপাশ থেকে অন্যপাশে ফিরিয়ে চোখের দেখা দেখল একবার। ভুরুযুগল ঈষৎ ঘন হয়ে এসেছে। নাকের ওপর দিকটা কুঁচকে গেছে অল্প। বিরক্তিতে কি? সন্ত্রস্ত জড়তায় শাশুড়ির মুখের প্রতিটা রেখার সূক্ষতম পরিবর্তন মেপে মেপে পড়তে চায় হৃতি। এই বুঝি ভুল হয়ে গেল কিছু! এই বুঝি সমালোচনার বাণে বিদ্ধ হতে হল ফের।
“তা কদ্দিন বয়স? কি বলে ডাকবো এনাকে?” একরত্তি ছানাটার ফিনফিনে মাথার চুলে আঙুল চালিয়ে পরখ করতে করতে জানতে চাইল নীলিমা।
“এই ন'মাস,” বউয়ের আগেই ঝট করে উত্তর দিল পীযুষ। লিভিং রুমের মধ্যিখানে ছড়ানো ছেটানো বসার জায়গা। একটা থ্রি-সিটার চামড়া সাঁটা সোফা, দুটো বেতের মোড়া। মধ্যিখানে চলতি প্লাস্টিকের চাকা লাগানো কফি টেবিল। হৃতি দুহাতের ওপর একরত্তি মেয়েটাকে নিয়ে সোফার একদিকে বসেছে। পীযুষ দাঁড়িয়ে রয়েছে বউয়ের গা ঘেঁষে। হৃতি বরের দিকে তির্যক তাকায়। তারপর ভুল ধরিয়ে দিয়ে বয়সের নিখুঁত হিসেব দেয়, “আট মাস, আঠাশ দিন। ও আমাদের মেঘু বুড়ি, ভালো নাম মেঘলীনা। ভালো না নামটা?” প্রশ্নটা শাশুড়ির উদ্দেশ্যে।
নীলিমার ঠোঁটজুড়ে একটা ব্যাঙ্গাত্মক হাসি ফুটে উঠল। ঠোঁট উল্টে বলল, “বাবা...আবার ভালো নামটাও নিজেরাই ঠিক করে ফেলেছো! বাড়ির বড়োদের জন্য কি কিছুই ফেলে রাখতে নেই, নাকি সেসব শিক্ষা পাওনি?”
লজ্জা-ভয় মাখানো দৃষ্টি নিয়ে হৃতি আড়চোখে একবার পীযুষের দিকে তাকিয়েই ঝুপ করে নামিয়ে নিল চোখ। যুতসই কি বলবে বুঝতে পারল না। নীলিমা অবশ্য উত্তরের অপেক্ষা না করেই রান্নাঘরের দিকে দ্রুত পা চালিয়েছে। এমনধারা বাচ্ছার ওপর তার যে বিন্দুমাত্র টান নেই, সেটা আজ ভালো করে বুঝিয়ে দেবে বউমাকে। ছি...ছি... নিলীমার বড্ড আফসোস হয় আজকাল। কেন যে তখন তাড়াহুড়ো করে এই মেয়ের সাথেই ছেলের বিয়েটা ঠিক করেছিল! তার স্বামীর অফিস কলিগ সোমেস্বর বিশ্বাসের মেয়েটার হয়তো বিদ্যের দৌড় ছিল না এতটা, কিন্তু মেয়েটা ঘরোয়া হত। বাড়িতে থেকে ঠিক সংসারটা গুছিয়ে নিত। আর এই মেয়ে তো উড়নচণ্ডী। সারাদিন টইটই করে ঘুরতে পারলেই বেঁচে যায়। এনার নাকি কাজের ইয়ত্তা নেই। বাড়ির বাইরে এত কিসের কাজ বাপু! মেয়েমানুষ দিনের মধ্যে বারোটি ঘন্টা যদি বাড়ির বাইরে থেকে সংসারের হাল না ধরে, তবে কি সংসার টেকে! আর পীযুষকেও বলিহারি। তেনার যত বুকনি ছিল মায়ের বেলায়। যত জোরজুলুম সব বিয়ের আগে। এর বেলা দেখ, কেমন মিইয়ে আছে। যেন মুখে বুলি ফোটে না। রান্নাঘরের দরজা থেকে আড়চোখে একবার ছেলে-বউমাকে দ্যাখে নীলিমা। ছেলে একটা মোড়া টেনে বসেছে, বউমার কোলের ওপর বাচ্ছাটা, তার মুখের ওপর বাপ-মা ঝুঁকে পড়ে হাসি হচ্ছে। গা জ্বলে যায় নীলিমার। আজকাল ছেলের কথা উঠলেই সবাইকে দুঃখ করে বলে সে, ছেলে আর সে ছেলেটি নেই। মায়ের আঁচল ছেড়ে সে এখন বউয়ের কথায় উঠছে-বসছে। এখন আর মায়ের কথার কদর কই!
গ্যাসে চায়ের গরম জল চাপিয়ে চিনির কৌটোটা নেড়ে-চেড়ে দেখল নীলিমা। মনের ভিতর যে মন, তাতে কেমন যেন অস্বস্তি হয়। বউমা তো আবার চিনি খায়না। কি? না, ওজন বেড়ে যাবে। আদিখ্যেতা যত! কে জানে, ছেলেটাকেও ওই তেতো রসটা খাওয়ায় নাকি! মনে মনে ভাবে, আজ ছেলেকে খুব করে দুধ চিনি দিয়ে গাঢ় করে চা বানিয়ে দেবে নীলিমা। যেমনটা ও ভালোবাসতো। কৌটোতে চিনির পরিমাণ দেখে অস্বস্তিটা ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। যা চিনি আছে তাতে নতুন প্যাকেটটা না খুললেও হপ্তাখানেক অনায়াসে চলে যাবে। কৌটোটা রান্নাঘরের তাকে তুলে রেখে ফ্রিজ খুলে দুধের বাটিটা বের করল। ঢাকনাটা সরাতেই মুখটা হাসিহাসি। পেয়েছে, খুঁজে পেয়েছে! গলায় জোর এনে ছেলেকে ডাকল নীলিমা, “এক্ষুনি একবার সত্যনারায়ণ থেকে দুটো দুধের প্যাকেট নিয়ে আয় তো।”
মায়ের হুকুম শিরোধার্য। পীযুষ ঘটঘট ঘাড় নেড়ে রান্নাঘর থেকে বেরুতেই হৃতি ধরেছে ফের, মেঘুর ডায়াপারটা পাল্টাতে হবে যে। নীলিমা বউমার গলা শুনে রান্নাঘর থেকে মুখ বাড়িয়ে দৃশ্যটা দেখে নিল টুকুন সময়ে। ছেলে দুহাত বাড়িয়ে বাচ্ছাটাকে ধরতে যাচ্ছে। রাগে রি রি করে সমস্ত শরীর। যেই বউ ডাকল, মায়ের কথাখানা বেমালুম ভুলে গেল! আজ এই বয়সে এসে এভাবে হেরে যাবে? তাও ওই একরত্তি মেয়ের কাছে? গলায় বেশ একটু ঝাঁজ নিয়েই ছেলের উদ্দেশ্যে কথাটা ছুঁড়ে দিল নীলিমা, “তোর ওপর ভরসা করে ভুল করলাম নাকি বাবু? এর থেকে তো আমি নিজেই চলে গেলে ভালো হতো। জোয়ান ছেলে বাড়ি বসে বউয়ের হুকুম তামিল করবে। আর বুড়ি মা এই রোদে বেড়িয়ে দুধ আনতে যাবে? তোর কি লজ্জাশরম সব গেছে নাকি রে বাবু? তোকে এক্ষুনি একবার যেতে বললাম না? চায়ের জল ফুটছে। দৌড়ে নিয়ে আয় গিয়ে।”
মায়ের গলা কানে যেতেই মেয়ের দিকে বাড়ানো হাতদুটো ঝট করে গুটিয়ে নিয়েছে পীযুষ। চোখের ছোট্ট ইশারায় একবার কি কিছু বোঝাতে চাইলো হৃতিকে? তারপর পাঞ্জাবির ওপর দিয়েই পকেটে টাকার ব্যাগটা আছে কি না পরখ করে নিয়ে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে গেলো ঘর থেকে। ছেলে বেরিয়ে যেতেই নীলিমার মুখে একটা তেরছা হাসি ফুটেছে। নিশ্চিন্তির হাসি। কাউকে হারিয়ে দেওয়ার হাসি। নিজের হৃত আসন পুনর্দখলের হাসি। যাক, ছেলে যে এখনো তারই আছে, এটা হৃতিকে হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দেওয়া গেছে। পীযুষ অবশ্য এত প্যাঁচ বোঝে না। কিন্তু হৃতি? সে টের পায় সবটা। তারপরও মুখ বুজেই থাকে। তার দুঃখ শুধু একটাই, কোনোদিন যে সে বোঝাতেই পারল না, এসব ছোটছোট বিষয়ে কোনো রেষারেষি ওর নেই। সংসারের এই সংকীর্ণতা, অধিকার বোধের টানাপড়েন-এসব ওকে মোটেই ছোঁয় না। ওর জীবনটা, জগৎটা অনেকটা বড়, দেখার গণ্ডিখানা অনেক বড়। বড় মাঠের প্রতিযোগিতাগুলোও যে আরও বড় হয়। সেই লড়াইয়ে সামিল হয়ে সংসারের এসব ছুটকোছাটকা ব্যাপারে আর আটকা পড়া যায় কি? যায় না। যেতে নেই। সবটা জানে হৃতি। তবু খারাপ লাগে, একটু হলেও লাগে। সেখানেই হয়তো জয়লাভ নীলিমার। নিজের অস্তিত্বটুকু টিকিয়ে রাখতে পারার উল্লাস। নিজের এই পরিচয় আর অধিকারটুকু আঁকড়ে না ধরলে আর কীই বা আছে নীলিমার! শাশুড়ির এই অসহায়তাটুকু হৃতি বোঝে। বোঝে ঠিকই, তবু খারাপ লাগাটা থেকে থেকে এক একটা ছোট্ট দীর্ঘশ্বাস হয়ে বুক থেকে বেরিয়ে আসে হৃতির।
নীলিমা আরও কিছু বলতে এগিয়ে আসছিল, আচমকা দরজায় পাড়ার প্রমীলাবাহিনীকে দেখে থমকে গেল। অবাক হয়েছে হৃতিও। এভাবে সবাই মিলে একসাথে...বাচ্ছার খবর তো কাউকেই দেওয়া হয়নি। তবে?
বয়োজ্যেষ্ঠা মানসীদেবী যেন ওর চোখের ভাষা পড়ে ফেলেছেন। হাসিমুখে এগিয়ে এসে বললেন, “এসব খবর কি চাপা থাকে, মা? ও সব তোমাদের দক্ষিণ কলকাতার পায়রার খোপে গা ঘেঁষাঘেঁষি মানুষগুলোর শিক্ষা। ওরা অনায়াসে স্বার্থপর হতে পারে। আমাদের এ পাড়ায় এখনও সবাই সবার খবর রাখে, বুঝলে? তুমি বাচ্ছা কোলে ট্যাক্সি থেকে নামলে, সুমিতা তখন ছাতে। ওই তো আমাদের বলল। আর আমরাও চলে এলুম ছা-এর মুখ দেখতে। তুমি ডাকবে সেই অপেক্ষায় কি আর থাকা যায়! এত বড় একখান খবর। খবর কেন, বলি সুখবর। কই দাও তো দেখি দেখি...” বলেই এগিয়ে এসে হৃতির কোল থেকে বাচ্ছাটাকে তুলে নিলেন নিজের হাতে। ওমনি কম করে দশ বারোজন মহিলা ঘিরে ধরল ওঁকে। কেউ বাচ্ছার হাত দেখছে, কেউ চুল। ভিড়ের মাঝখান থেকে বছর সাতেকের বুল্টি এই একরত্তি ছানার খুদে খুদে আঙুলের আরও ছোট ছোট নখ দেখে তো খিলখিলিয়ে হেসেই অস্থির। এত সবের মধ্যে কি আর তেনার ঘুম হয়! তিনিও আধখেঁচড়া ঘুমের প্রতিশোধ নিতে জুড়ে দিলেন চিল চিৎকার। অবশ্য তাতে কাজ হল, মানসীদেবী সন্তানের মায়ের হাতে তার সবে ধন নীলমণিটিকে ফিরিয়ে দিয়ে নীলিমার উদ্দেশ্যে বললেন, “তোমার তো দারুণ মজা গো, দিদি। নাতনি এসেছে প্রথমবার। যাই বল, এ যে আমাদের বাবু গো। চোখ দুটো মায়া মাখা, একেবারে তোমার ছেলের ছোটবেলার মুখটা যেন কেটে বসানো।”
“বাবুর মতো?” বউমার দিকে তেরছা তাকিয়ে ফের ব্যাঙ্গাত্মক হাসি ছুঁড়ে দিল নীলিমা, “সে গুড়ে বালি। ওটা ওদের নিজের বাচ্ছা নাকি? দত্তক নেওয়া হয়েছে। দত্তক,” শেষ কথাটুকু বলার সময় নীলিমার মুখটা রাগে দুঃখে লাল হয়ে উঠল, দেখেই বুকটা কেমন মোচড় দেয় হৃতির। কথাটা বলে আর এক মুহূর্তও দাঁড়াল না নীলিমা। সোজা রান্নাঘরে ঢুকে গেল।
বসুবাড়ির লিভিংরুমে যেন হঠাৎ বোম পড়েছে। ক্ষণিকের জন্য সবটা চুপ। কানে তালা লাগার মত। তারপরই উন্মত্ত লোকজনের চিৎকারের মতো হাজার হাজার নিঃশব্দ মুখের এক এক জোড়া চোখ বিস্ময়ে, কৌতূহলে সরব হয়ে উঠেছে। কানাকানি, ফিসফাস, সবটাই কানে আসছে হৃতির। কান ছুঁয়ে শ্বেততপ্ত লোহার মতো কর্ণকুহর পথে মাথায় গিয়ে দুমদুম আঘাত করছে, তীব্র উষ্ণতায় গলিয়ে দিচ্ছে সবটুকু। স্বামীর সাথে সম্পর্ক নেই? না কি নেই মা হওয়ার ক্ষমতা? চুলচেরা অভিজ্ঞ বিশ্লেষণ, সাথে উড়ে আসা অযাচিত পরামর্শ। কেউ একজন বললো, “তাই ভাবি, বাচ্ছার গায়ের রংটা এমন তামাটে কেন? বাপ-মা তো কেউ এমন না।” কথাটা কে বললো ঠিক ঠাহর করতে পারেনি হৃতি। মেয়েকে জড়িয়ে কেবল অপলক তাকিয়ে থাকল একটা তামাটে রঙের একরত্তি মুখের দিকে। চোখগুলো টানা টানা, ঠিক যেন ছোট্ট হৃতি। মনে মনে হাসল হৃতি, মেঘুবুড়িকে চুপিচুপি বলল, “আমাদের সবকিছু আছে এই মনের ভেতর, বুঝলি? একটু আগেই কেমন তোর মুখে তোর বাব্বাইয়ের মিল পেল, আর এখন বলছে গায়ের রংটা আলাদা। তুই তো জানিস, তুই আমার, আর বাব্বাইয়ের, আমাদের মেঘুবুড়ি। তুই আমাদের। বুঝলি?” কি জানি কি বোঝে মেঘু, গোলাপি মাড়ি বের করে ফোকলা হাসল।
মেঘলীনার সাথে কি আজকে আলাপ হৃতির! প্রথম দেখেছিলো শাইনিং ষ্টার অর্ফানেজে। তখন মেঘু আরও ছোট। একেবারে মাসখানেকের এইটুকু মেয়ে। পুতুল পুতুল হাত-পা। সরু একজোড়া গোলাপি ঠোঁট। মাথাময় কালো চুল। শুয়ে শুয়ে চোখের ওপর নিজের হাতদুটো শূন্যে ভাসিয়ে আপন মনে খেলা করে। এনজিওর সূত্রে অর্ফানেজে হৃতির ছিল নিত্যদিনের যাতায়াত। কাজের ফাঁকে ঠিক সময় করে হপ্তায় অন্তত দুবার ঢুঁ মারতো। কি যে ভালো লাগতো বাচ্ছাগুলোর সাথে সময় কাটাতে। যেন পৃথিবীর বুকে একটুকরো স্বর্গ। প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে গেছিল মেঘুকে। আরও বেড়েছিল যাতায়াত। শেষে গেল মাসে একরত্তি পরীটাকে কাগজে কলমে নিজের করে পেয়েছে হৃতি। খবরটা জানা থেকে হৃতির মা-ও অনেকবার বুঝিয়েছে মেয়েকে, “নিজের সন্তান নিজেরই হয়। তার প্রতি অন্য টান থাকে। রক্তের টান।” এসব কথা দুর্বোধ্য লাগে হৃতির। কই ওর তো এমন মনে হয় না! চাইলে কি মা হতে পারত না হৃতি? কিন্তু এতগুলো অনাথ শিশু...ওদের কি দোষ? ওদের বুঝি অধিকার নেই বাব্বাই মাম্মাম বলে কাউকে ডাকার? সব হৃতিরাই কি পারে না ওদের এই সুযোগটুকু করে দিতে? পৃথিবীর বুকে সম্মান নিয়ে বাঁচতে? মেঘুকে দেখে ওরা স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এই মেঘুবুড়ি একদিন ওদেরই হবে। নিজের-পরের এসব জটিল হিসেব কোনোদিনই মাথায় ঢোকেনি হৃতির। পীযুষকেও তো ক'বছর আগে ও চিনতই না। তাই বলে আজ কি ও নিজের নয়? আসলে সবটাই তো মনে। সবটাই এই মনে।
আশেপাশের শব্দগুলো কান ঘেঁষে সাঁই সাঁই বেরিয়ে যাচ্ছে হৃতির। মৌমাছির গুনগুনের মত। যেন কানে তালা লেগে গেছে। কতকটা আবছা কোলাহল। এক একটা শব্দ আলাদা ভাবে ধরা যায় না। সমষ্টিগত শব্দেরা কানের মধ্যে একটানা গানের পেছনের সুরের মত বেজে চলে। কখনো ব্যথা দেয়। আবার কখনো মধু ঢালে। এই যেমন বাচ্ছাগুলোর কাছে গেলেই ওরা খিলখিল করে হেসে ওঠে। একটানা হাসির মধু মধু শব্দ কানের ভেতর ঘুরে বেড়ায়। ঘুরতেই থাকে। কারোর কাছে পুরো পৃথিবীটাই তো একক পরিবার। আদিম কোনো সৃষ্টিরহস্যের পাতায় সবটা মিলেমিশে সেখানে কেমন বিরাট এক হয়ে যায়। ভেদাভেদের জন্ম তো এই মনেই। নিজের নিজের বলে চিৎকার করতে থাকা আগাছা সম সংকীর্ণতা ঘিরে আসা পথের মতো মনে। এই আগাছা সরিয়ে চোখ মেলে দ্যাখে হৃতি। একটা উন্মুক্ত আকাশের নিচে দৌড়োচ্ছে, খেলছে মেঘলীনারা। ‘মা’ বলে কি অগাধ ভরসায়, নির্দ্বিধায় দৃঢ় আলিঙ্গনে আবদ্ধ করছে তাকে। মেঘুবুড়ির ফোকলা হাসিতে একরাশ সতেজ আলো মাখামাখি। মেয়েকে বুকের আরও কাছে সস্নেহে চেপে ধরে হৃতি, তারপর ধীর পায়ে নিজের ঘরে চলে যায়। পিছনে পড়ে থাকে হতভম্ব কিছু আগাছা-সংকীর্ণ পথ।
- প্রথম পাতা
- বিষয়
- _গল্প
- _কবিতা
- _প্রবন্ধ
- _ভ্রমণ
- _ফটোফিচার
- _বাংলাদেশের কলম
- _ধারাবাহিক
- _ফিল্ম রিভিউ
- _পাঠ পরিক্রমা
- Editions and Archive
- _২৫শে বৈশাখ
- _বৈশাখী সংখ্যা
- _স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা
- _প্রাক শারদ সংখ্যা
- _ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংখ্যা
- _শারদ সংখ্যা
- _মাহশা ইরান সংখ্যা
- _দীপাবলি সংখ্যা
- _ঋত্বিক ঘটক সংখ্যা
- _শক্তি চট্টোপাধ্যায় সংখ্যা
- _শীতকালীন সংখ্যা
- _প্রথম বর্ষপূর্তি সংখ্যা
- _বইমেলা সংখ্যা
- _ভাষা দিবস সংখ্যা
- _দোলযাত্রা সংখ্যা
- _পয়লা বৈশাখ সংখ্যা
- _কার্টুন সংখ্যা
- _শারদ সংখ্যা ১৪৩০
- _বিশেষ সংখ্যা
- _রক্ত করবী সংখ্যা
- Contact Us
- Editorial Team
- About Us