দোঁহা

বায়া ও হায়াসিন্থ



ঊর্ণনাভ তন্তু ঘোষ

ছেঁড়া আকাশের নীচে শুয়ে শুয়ে দেখছি, শূন্যের উপর ঝুলছে অগুনতি বাবুই বাসা। প্রথম মামারবাড়িতেই দেখেছিলাম। গোপালপুরে। যেহেতু আমার মামারবাড়ি খুব দূরে নয় সেহেতু গরমের ছুটি হোক বা বর্ষার ছুটি সবটাই কেটেছে সেখানে।

তো এইসব গরমের ছুটিতে। একক্রোশ পথ পেরিয়ে বিরাট হাইড্রেন টপকে মাধবীলতায় সাজানো মামারবাড়ির সদরদরজা। আর তারপরেই বিরাট উঠোন। ধান ও সরষের মড়াই। শ্বেতকরবী। কলকে। আম। জাম। লিচু। নারকেল। তুলসীমঞ্চ। যেমন হয় গ্রামের ক্ষয়প্রাপ্ত বনেদি পরিবার।

বিরাট দোতলা বাড়ির অংশত জায়মান কবেকার পুরানো বৈঠকখানা, বনেদিয়ানা। বিকেলের মানুষজন এসে জিরোয় এখানে। পথচলতি মানুষকে ডেকে হালহকিকত শুধায়। আসর বসে। পালাগান। সংকীর্তন। একদিকে হারমোনিয়াম দোতারা অন্যদিকে জমিয়ে আড্ডা। গ্রামের শেষ দয়াময়দের কয়েতবাগান পর্যন্ত শোনা যেত সে বচসা-সরগম।

এককালের মোড়ল পরিবার দিনেভদ্রে তখন ম্রিয়মাণ। তবুও একে অপরের ওপর সকলের আন্তরিক বাৎসল্য শ্রদ্ধা কিছুমাত্র কম নয়। আমার দিদিমা অর্থাৎ সে বাড়ির বড়-জেঠুই। তিনি ছিলেন সকলের শেষ আশ্রয়। আশ্চর্য এক স্নেহমহী নারী। যেমন সুরেলা কণ্ঠ তেমন মায়ার নজর। এই যেমন মামারা, তাদের দুঁদেপনার তো অন্ত ছিলনা। তারজন্য বিড়ম্বনাও কম ছিল না। ঘরে ও স্কুলে ঠ্যাঙানি খাওয়ার পর কচিকাঁচা ছেলেমেয়েদের একমাত্র আশ্রয়দাত্রী , স্নেহদাত্রী আমার দিদিমাই। এমনকি বড় যারা-উৎপল মামা, অর্জুন মামা, উজ্জ্বল মামা, তাদের পুকুরের মাছ ধরা থেকে বাগানের আম পাড়া সমস্ত যজ্ঞের আগে বড়-জেঠুইয়ের আদেশ নেওয়া সর্বপ্রথম কর্তব্য।

এখন সেই দিদিমার নাতি এবং পরিবারের একমাত্র ভাগ্নে হওয়ার সুবাদে (যদিও গরবনেদি) আদরযত্ন কিছুটা বাঁধনছেঁড়া; দুয়ারে পা রাখা মাত্র একজনের কোল থেকে অন্যজনের ঘাড়ে-পিঠে চেপেই কেটে যেত সারা সারা দিন।

কোথায় মৃত্যু পুকুর, কোথায় শিকার পুকুর, কোথায় শিবতলা, কোথায় দুর্গাদালান, দুনিয়ার বাগানবাড়ি, মাঠ-ঘাট ঘুরে, খুকুমাসির কুলগাছে ইট পাটকেল মেরে বাড়ি ফিরতে তিন-সন্ধ্যেবেলা। ততক্ষণে ডিডি বাংলায় শুরু হয়ে গেছে 'জন্মভূমি' সিরিয়াল।

জ্যোৎস্না আঁধারে প্রতিবেশীরা বিষ্ণুপুরী লণ্ঠন সিঁড়িতে দম-খাটিয়ে রেখে বসে গেছে PHILIPS 33DC এর সামনে। একবারান্দা ঘন মাথা। কোলাহল, গুঞ্জন ছাপিয়ে ডিডি বাংলার টাইটেল ট্রাকে বেজে উঠেছে -

'আজকাল পরশু একদিন সময়ের সমুদ্রে মিশে যায়। ইটকাঠ পাথরের পাঁজরে ইতিহাস ফিসফিস কথা কয়। দিন বদলায়। রঙ বদলায়। মন তবু খোঁজে জন্মভূমি...'

যাক, এভাবে লিখতে গেলে উপন্যাসের পাতাও কম পড়বে। এসব টপকে আমি বরং উৎপল মামার সঙ্গে চলে আসি উপরের বারান্দায়। আমের কুশি তখনও আঁটি হয়ে যায়নি। জামরুল গাছের আলোছায়ার ভিতর নীল সাদা মেঘ। তার নীচে বাবু-কোলের ওপর ফণীভূষণ ঘোষের 'ছাত্রবন্ধু' সুর করে পাতার পর পাতা মুখস্থ করছে বিলু, অর্থাৎ আমি। আমার থেকে সাত বছরের বড় উৎপল মামা আচমকা মাথায় একখানা আম-গাট্টা মেরে বলতে লাগল-ছাত্রবন্ধু রাখ। ওসব মুখস্থ পড়ে কিছু হবে না বিলু। আগে লেখার বিষয়বস্তু উপলব্দি করতে শেখ। শব্দগুলোর মান বুঝতে শেখ। তা নাহলে ওই গাদা গাদা নম্বর পেয়ে আস্ত একখানা গাধা তৈরী হবি তুই। তোকে একটা পরের ক্লাসের কবিতা শোনাই, শোন। ক্লাস ফাইভের কবিতা। মন দিয়ে শোন-

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখা একটি কবিতা 'ধনধান্য'। — 'ধন্যধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা; তাহার মাঝে আছে দেশ এক- সকল দেশের সেরা।'

মামার কণ্ঠে জাদু আছে। আকর্ণ শিহরিত করে শরীরে যেন ঠান্ডা বাতাস বয়ে গেল। সদ্য মাঠ-ঘাট ঘুরে আসা পাখ-পাখালির ডাক, ধু ধু মোরাম, শুষ্ক গন্ধ, মেঘ, প্রজাপতি, রোদ্দুর সব যেন চোখে-মুখে আবিষ্ঠ শব্দের মায়া লেপে দিয়ে বলে গেল। পরের ছত্রে মামা পাঠ করল, 'তারা পাখির ডাকে ঘুমিয়ে ওঠে, পাখির ডাকে জেগে, এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি; সকল দেশের রানী সে যে- আমার জন্মভূমি।'

-বুঝলি? এমন বাতাস এমন আকাশ এমন তরুলতা ঢাকা দেশ আর কোনোদেশে কোনোখানে নেই রে বিলু। 'পুষ্পে পুষ্পে ভরা শাখী; কুঞ্জে কুঞ্জে গাহে পাখি ; গুঞ্জরিয়া আসে অলি পুঞ্জে পুঞ্জে ধেয়ে- তারা ফুলের ওপর ঘুমিয়ে পড়ে ফুলের মধু খেয়ে।'

কিন্তু মুস্কিলটা কী জানিস-আশৈশব আমাদের পড়ানো হল সত্যেন্দ্রনাথ, রবিঠাকুর, নজরুলের শস্যশ্যামল বাংলাদেশ। পরে জানলাম সে্টা আমার দেশই নয়। তারকাঁটায় ঘেরা, বিদেশ। ততদিনে কনশাস চাইল্ডহুডের ভ্রূণটিও তছনছ হয়ে গেছে। আজকের বাংলাদেশও সম্পূর্ণ আলাদা। ক্ষমতাধর আলাদা একটি দেশ। সেখানে আমাদের না আছে যাপন, না আছে জন্ম-মৃত্যু-ক্ষুধার আখ্যান। আছে লক্ষ কোটি মানুষের দেশান্তরের গল্প পারাপারের কাহিনি। মূল নেই, শেকড় নেই, আছে শুধু সন্তান লালনের স্বপ্ন। ইতিহাস এদেরকেই বলে রিফিউজি। উদ্বাস্তু। শরণার্থী। কিন্তু আমরা? যারা জন্মালাম এদেশে, বেড়ে উঠলাম এদেশে, অথচ স্বপ্ন দেখলাম বুড়িগঙ্গার, পদ্মার, তিতাসের-স্বাধীন চিন্তার মূল কোথায় আমাদের? সম্পূর্ণ একটা ভুল জগতের শিক্ষা, স্বপ্ন নিয়ে জীবনের উন্মেশপর্ব। আর এইটুকু শালীনতা নিয়ে বাকি জীবনটাও শেষ হয়ে যাবে। আমরা সবাই উদ্বাস্তু বিলু। আমরা সবাই সময়ের স্রোতে ভাসমান একএকটি রুটলেস হায়াসিন্থ। কচুরিপানা।

মামার এসব কথার সব অর্থ না বুঝলেও,  এটুকু বোঝা গেল-আমরা সবাই একএকটা কচুরিপানা! মানে, ঐ নর্দমায় ঠাসাঠাসি গাদাগাদি করে বড় হয় যারা! তারপর হরপা বানে কোথায় কোনদিকে ভেসে যায় সব! আমিও তাদের একজন জেনে মনটা খারাপ হয়ে গেল।

ততক্ষণে বারান্দার রেলিঙে উড়ে এসে বসেছে একখানা বাবুই পাখি। যে বাবুইয়ের কথা বলতে গিয়ে এইসব আবোলতাবোল স্মৃতিকথা। ছোট্ট চড়াই সমান পাখি। মাথায় টকটকে হলুদ চাঁদি। পিঠের রঙ কালচে বাদামি। পেটের নীচে নরম পালক-বোনা। প্রকট ভ্রু-রেখা। কী চমৎকার রূপ পাখিটার! এমন রূপ ভাষায় প্রকাশ করা দুরূহ। -ও মামা! এটা কী পাখি? এত্ত সুন্দর, আগে দেখিনি তো!

মামাকে জিজ্ঞেস করায় উত্তর দিল- 'ওটা বাবুই। বাবুইপাখি! ইংরেজি নাম 'BAYA WEAVER', গাঁ-গেরামে যাকে বলে তাঁতি পাখি। তুই আগেও দেখেছিস। শুধু দেখিসইনি পড়েওছিস। রজনীকান্ত সেনের লেখা 'স্বাধীনতার সুখ' কবিতা মনে কর। -ইশশশ্‌! তাই তো! একদম খেয়াল করিনি।

-তোর তখন খেয়াল করার মতো মন তৈরি হয়নি বিলু। ওই দেখ, বৌটখানার ওপাশে তালগাছগুলো দেখ-সাপুড়ের বীনের মতো কেমন ঝুলছে, সব এদেরই বাসা। বাবুইপাখির বাসা। মনে আছে কবিতাটা?

-হ্যাঁ। 'বাবুই হাসিয়া কহে...নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা।'

ব্রাভো! কাঁচা ঘর তবু বৃষ্টিতে ভিজবে না। ঝড়ে পড়ে যাবে না। এমনকি একই পাতায় দুটো বাসা থাকা সত্ত্বেও হাওয়ায় ধাক্কা লেগে ভিতরের ডিম মাটিতে পড়ে যাবে না। তুই আগে বাসাগুলো ভালো করে দেখ তারপর বলছি।

দেখলাম, নৈর্ঋতে সার দিয়ে উঁচু তালগাছের পর্বত। পাতার ডগে অগুনতি বাসা। বাদুড়ের মতো ঝুলে আছে গাছের পাতায় পাতায়। কোনোটা ঘন সবুজ। কোনোটা তামাটে ধূসর। ঠিক যেন আমার পড়ার টেবিলে কাচের লণ্ঠনটার মতন। পেটমোটা। ওলটানো। অবিকল!

তা প্রায় শ'খানেক পাখি হবে। সবাই বাসা বোনায় ব্যস্ত। খুব ব্যস্ত। কোথা দূর দূর থেকে কাশ, নারকেল, নলখাগড়ার সবুজ শির কেটে নিয়ে উড়ে আসছে তালগাছের মাথায়। তারপর অসীম ধৈর্য্যে খুদে ঠোঁট দিয়ে বুনে চলছে একমনে। কী আশ্চর্য মনোবল ওদের! কী নিখুঁত শিল্পক্ষমতা! একটি একটি করে ঘাসের সুতো বুনে বুনে নির্মাণ করে 'কাঁচা ঘর খাসা'। অপূর্ব! অপূর্ব!

বারান্দার অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে উৎপল মামা বলল-সুন্দর একেই বলে। যার কোনো জ্যামিতিক পরিভাষা নেই, বস্তুগত সংজ্ঞা নেই। দেয়ার ইজ নো ডেফিনেশন অভ বিউটি হোয়েন ইউ ক্যান সী সামথীং আনএক্সপ্লেইনবল দ্যাট ইজ দ্য ফিলিংস অভ বিউটি। যা দেখে মন আন্দোলিত হয়, আবিষ্ট হয় তাই সুন্দর। মনের এই সৌন্দর্যই সব। ভালো করে দেখ, বাসাগুলোর কয়েকটা ধরণও রয়েছে। কোনোটা দোলনার মতো। কোনোটা একমুখো গোলাকার। আবার কোনোটা পেটমোটা সাপুড়ে-বাঁশির গড়ন। যদি সুবিধার্থে ধরে নেওয়া হয়-একতলা, দোতলা এবং তিনতলা। অর্থাৎ যেটা একতলা সেখানে পুরুষপাখিরা অবসরে বিশ্রাম নেয়, দোল খায়, চারদিক নজর রাখে। দেখতে খানিকটা দোলনার মতো। ওই বাসাগুলো সবে মাত্র তৈরি হচ্ছে।

ছাদ হয়ে যাওয়ার পর, নীড়ের পেট বোনা হয়ে গেছে যে গুলোর-ওগুলো সব দোতলা। ইংরেজিতে 'CANOPY'। দেখ, কীরকম পেট দিয়ে ঘষে ঘষে নরম তুলতুলে বিছানা তৈরি করছে। বাবুইযুগল সেখানে রাত্রে একসঙ্গে ঘুমোতে যায়। খেয়াল কর, প্রতিটি বাসার মুখ কিন্তু হাওয়ার অভিমুখে। অর্থাৎ যত বৃষ্টিই হোক তারা ভিজবে না। এমনকি হাওয়ায় উল্টেও যাবে না। আবার এইসব বাসার মুখ দেখে বলে দেওয়া যায় এবছর বর্ষার চাপ কোনদিকে থাকবে। গ্রামের চাষিরা এ থেকেই অনুমান করে নেয়, সেইমতো বর্ষার চাষে না। ভাব! আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর যে পূর্বাভাস ঠাওর করতে হিমসিম খেয়ে যায়, ওরা কত সহজেই বুঝে যায়।

পুরুষরা স্থপতি নির্মাণ করে । আর স্ত্রী পাখি হল আবহাওয়াবিদ। CANOPY তৈরির পর পুরুষ বাবুই বাসার ছাদে বসে গান গেয়ে স্ত্রী বাবুইদের আকর্ষণ করে। বাসা দেখতে ডাকে। এখন তার ডাকে সারা দিয়ে মেয়েরা আসে। এসে বাসার নির্মাণ নিরাপত্তা তদন্ত করে। কারো বাসা পছন্দ হলে যদি সুরে সুর মেলায় উৎসাহ দেয় তাহলে বুঝতে হবে বাসা পছন্দ হয়েছে। অর্থাৎ গাঁটছড়া বাঁধতে ইচ্ছুক। পুরুষটিও তখন আনন্দে মাথার হলুদ চাঁদি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। কিন্তু যদি এমন হয় বাসা দেখার পর স্ত্রীপাখি যদি চুপ বসে থেকে, সাড়াশব্দ না দিয়ে উড়ে পালায় তাহলে বেচারা পুরুষের সব অঙ্ক ওলটপালট তখন। বিষাদে ডুবিয়া যায় মন।

আর ওই বীনের মতন লম্বা ওটা তিনতলা। ওর ভিতরে ডিম থাকে। বাসার প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য একটাই মুখ, নীচের দিকে। পেটের দিকটা কেমন পোয়াতি-গোল দেখ। বর্ষার সময় এলে, স্ত্রী-বাবুই সেখানে ডিম পাড়ে। দুটো কি চারটে। তারপর যতদিন ডিম থাকে ততদিন স্ত্রীপাখি ডিমের খেয়ালে ডুবে থাকে। কবে বাচ্চা ফুটবে? কবে ডানা মেলবে? কী খাবে? কেমন দেখতে হবে? এইসব স্বপ্ন। আমাদের মায়েদের মতন। পুরুষটি তখন অন্যবাসা গড়ার কাজে মনোনিবেশ করে। তার কাজ শুধু একের পর এক বাসা গড়া আর স্ত্রী পাখিকে বাসা দেখিয়ে আকৃষ্ট করা। বাসা পছন্দ হলে কেল্লাফতে নাহলে দোজবরে বুধাই কাকার মতো পণ্ডশ্রম ছেড়ে চলল বায়া নতুন বাসা বাঁধতে। এটাই ওদের জীবন।

এখন ওদের বিজ্ঞান-চিন্তা দেখ, তুই যে কোনো একটা বাসা ধর। বাসাটা দেখ তালপাতার একদম ডগে। যাতে প্রচণ্ড ঝড়েও কোনোভাবেই গাছের কাণ্ডে অথবা অন্যডালে আঘাত না লাগে। পাশের বাসার সঙ্গে ধাক্কা খেলেও অসুবিধা নেই। কারণ সব বাসার মুখ যেহেতু একদিকে, সেহেতু হাওয়ার অভিমুখে ধাক্কা লেগে বিপরীত প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনাও নেই। সে কারণে ডিমগুলো কখনই পড়ে যায় না। এই জটিল অঙ্কটা ওই ছোটমাথায় কীভাবে করে ভাব! এরজন্য ওদেরকে তোর মতো ছাত্রবন্ধুও মুখস্থ করতে হয়না আবার নিউটনের গতিসূত্রও জানতে হয় না।


 রাতেরবেলা বারান্দায় এসে সমস্ত আলো নিভিয়ে দিয়ে দেখবি-বাসার ভিতরে টিমটিম করে আলো জ্বলছে। ওগুলো আসলে কিন্তু জোনাকি। ঘর আলো করে রাখার জন্য বাসার দেওয়ালে গুঁজে রাখে। সাধে কী আর বলে-ইঞ্জিনিয়ার বার্ড! সারারাত জ্যোৎস্নার আলোয় ভিজে যায় স্ত্রী-পুরুষের পালক। তাই হয়তো এত নরম। এত পেলব পালকের শরীর।

আজ উনিশ-কুড়ি বছর পর ঊর্ণনাভ নামের কে একজন বোলপুর থেকে ফেসবুকে ভিডিও দিয়েছে দেখে মানুষের শোকের শেষ নেই। অথচ চোখ মেললে সেই ইট মার্বেলে ঘন জঙ্গল। সেসব তালগাছও নেই। আর সেসব বাসাও নেই। আসলে আমাদের স্বাধীনতার সুখ বলো জন্মভূমি বলো সব আমরা নষ্ট করেছি নিজের হাতেই।


1 মন্তব্যসমূহ

  1. নিবিড় মায়াঅঞ্জনের গাঢ় প্রলেপে নিকিয়ে তকতকে হয়ে আছে দাওয়াখানি, রোজ চাঁদ পড়তে পড়তে যে দাগ ধরেছে, তাকে অনিবার্য মনমাঝির নৌকোয় বসে পাড়ি দিলাম অকুল দরিয়ার দিকে...আহা! এ যেন এক ভালবাসার সফর! লেখককে আগে কখনো পড়িনি। এ এক তীব্র অপরাধবোধের মত ধাক্কা দিল, ভাগ্যিস সুযোগমত 'বায়া ও হায়াসিন্থ'-কেই আঁকড়ে ধরতে পেরেছিলাম!

    উত্তরমুছুন
নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন