দোঁহা

মৌমন মিত্রের গুচ্ছ কবিতা

 

 

শক্তি 


১. 

শিখেছি সময়। নারী, নক্ষত্র। মনের অংশ বিশেষ। 

তবে কেন সময়ের ভিতর বাস করে পশু? কেন যে, 

চামড়ার প্রতিটি ভাঁজে আজও, এইদিনেও, মত্ত 

হস্তীদেহ আক্রমণ করে দুর্বল ভাবা এ রমণীয় রূপ!


২.

কে জাগে? কারা করে প্রতিবাদ? কতটা আঁধার ঘনিয়ে এলে 

নিদারুণ প্রলেপ পড়ে, আর্তনাদ? চারিদিকে শব্দের হাহাকার। 

ফাটল ধরেছে বিশ্ব ইতিহাসে। বর্ম পড়া অসভ্য সমাজ। সভ্য সাজে। 


৩.

মেয়েটা ভুল। মেয়েটা পাপী। মেয়েটা নষ্ট। মেয়েটা বজ্জাত। 

অনেক তো হল। চাকার তলায় পিষে ফেলা এই যন্ত্রণা লিখি,

পড়ি। দিনরাত। বলো, তাতে কী হয়? হবে কিছু কোনও দিন? 


৪.

হয়তো হয়। হবে একদিন। 

শক্তি প্রবাহমান। অগ্নি সদৃশ সত্তা।শ্যামার মতো উজ্জ্বল। 

মনে রেখো, প্রকৃতি মায়ের মহিমায় বধ করবে এককেকটি দানব।  

তাঁর জিভ জুড়ে বহু যুগের যক্ষ-টিকা। এই তড়িৎ শিখার কন্যা, 

আমারই গর্ভের সমষ্টিগত মূল্য।জেনো, সে পবিত্র। দীপাবলির দূত।  


বেলা গড়ালে সময়ের বুকে স্বতন্ত্র স্বর। অলৌকিক। অগ্নি বন্যা। 


৫.

পোড়া কপাল বলে কেউ। বলে নিয়তির খেলাও। ফিরে চাও…

দেখবে একই দোষারূপ। একই তর্জমা-তীর। সমস্ত ভাইরাল পথ, নারী-কলঙ্ক ঘিরে। কখনও রাজনীতি। কখনও ভয়। নয় মতান্তর। 


খানিক বয়।শুকনো পাতার গন্ধ।কিছুক্ষণ পর সেও উবে যায়। 

আকাশ পথে। তখন নিথর দাঁড়িয়ে দেখি আমরা। ফানুস ফোয়ারা। প্রতীক্ষা করি ফের। 

আসছে বছর—লজ্জার বাণ ছুঁড়ে দেবেন সেই আদিপরাশক্তি। 


৬.

এ এক তৃষা। এ এক অধর-ভাষা। অঞ্জলি দিই নগ্ন আরাধ্য—


তবু কেন তাঁর খুন হয়, কেন ভেসে যায় রক্ত-রং গহ্বরের ভিতর?  


লজ্জা—তুমি কার? লড়াই, ধারাপাত, অক্ষর-জ্ঞান, কেউ শেখাতে পারল, আদতে তুমি কার? এ শুক্লপক্ষে তাঁর চিহ্ন খোঁজো বার বার।  


দেখো, মেয়েটির কেশ-ভার। নাভি কুণ্ডলীর পাক, ও, তীক্ষ্ণ আলো।  

আত্মস্থ করো। ভাবো...লজ্জা, আজ আদতে কার? 





1 মন্তব্যসমূহ

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন