দোঁহা

অরিত্র দ্বিবেদীর কবিতা



 ঈশ্বরকে পাঠানো ভয়েস নোট



ঘুমন্ত নাবিক
অশণি সঙ্কেত

দেখো দেখো...তোমরা দেখেছ

কীভাবে পাখি নেমে এসেছে
জলে মিশেছে পুরোনো গান
আর মায়ের আঁকা আল্পনা

সত্যি সত্যি সত্যি

অন্ধ প্রদীপ তু-ল-সী মঞ্চে
ব্যথায় মুচড়ে ওঠে যে ঢেউ

হে অনাবিল বয়স সন্ধি...

আমি...

রাতের আঁধারে
ঈশ্বরকে নয়
মানুষ দেখেছি!



খাতার পাতায়
মৃগী বসন্ত মন্দিরে তুমি
এসেছিলে জানি।

আঁচল এলিয়ে
পায়ে পায়ে ছাপে ছাপে যেন
বর্ষা। আমার। একার। বর্ষা।

দূউউরেএ কার নৌকো ভেসে যায়...

'ওও মাঝিইইইইই শোনোওও গোওওও'

রবীন্দ্র সঙ্গীত
শুনতে পাচ্ছি জোরে...

হাতে পুরোনো রেডিও নিয়ে
দাদাই চলে যাচ্ছে পিছনে

আরও আরও অনেক অনেক পিছনে তাই না!



খেতে দেবে?
একটু দেবে কী খেতে, বলো!

নাড়িটান উথলে উথলে উপচে পড়ে

বিষম যুদ্ধে লড়াই লড়াই...আমি ক্লান্ত ভীষণ!

হে পরমেশ্বর হে ত্রিকাল,
শান্তি দাও অল্প শান্তি শুধু...

আর কখনো না খেতে চাইব আমি, কথা দিচ্ছি গো...

একটা নেউল
সাপের বাচ্চা মুখে ধরে নিয়ে চলেছে



তিরস্কার বেশ খানিকটা একত্রে সহ্য করি রোজ
কিছুটা ভেসে আসে বাতাসে
কিছুটা ভেসে আসে অন্দরে

অপমানে অপমানে এত!

অপমানে দারুণ শক্তি জানতাম কিন্তু
কখনো এভাবে
ভেসে যাইনি...কক্ষনো নয়

সকালের পাখি
আসে ডাকে, ডাকে
অপমান করে
আমি জানি, বুঝি
সকাল হয়েছে



কাউকে শ্মশানে দিয়ে আসি
ফিরে এসে জল
ডুব ডুব ডুব

হোমাগ্নি সেজেছে অস্ত সূর্য

ঠাণ্ডা জল...ডুব।

চোখ খুলে দেখি
 
কীভাবে পাখি নেমে এসেছে
জলে মিশেছে পুরোনো গান
আর মায়ের আঁকা আল্পনা...



শেষের আগে এ কথা বলা
খুব খুব দরকার ছিল:

শীতের পাখিরা
আসে ধান খোঁটে

আমার অঙ্গে অঙ্গে ধান অসহ্য ধান

ফসল ফলাই
খুঁটে খুঁটে লুঠে
নিয়ে যায় পাখি

তাদের ওদিকে বয়ঃসন্ধি
তাদের ওদিকেই জীবন

কান পেতে থাকি

শুনতে পেয়েছি
হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ পেয়েছি :

"এবার নীরব করে দাও..."

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন