দোঁহা

বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা



 রাত্রি দূরে ঠেলে

রাত্রি দূরে ঠেলে
দুপুরবেলা এলে
আমার মতো আছে যত
খারাপ খারাপ ছেলে
তাদের মাথার ভিতর আবার
উনুন দিও জ্বেলে...

কুড়িয়ে এনেছিলাম ঝিনুক
মুক্তো যদি মেলে
এখন শূন্য খোলসটাকে
কোথায় দেব ফেলে?

স্মৃতির ভিতর ঝলক
দিচ্ছে চোখের পলক

এই মাঘে শীত ফুরোবে না
তোমায় কাছে পেলে...

 
 

উপন্যাসের শেষে

মাছি পড়ল ভাতে
কোদাল দিলাম তাতে
হাজার চুমু খেয়েছিলাম
হয়তো বা সাক্ষাতে

হাজার একের আগে
বলতে খারাপ লাগে
আরব্য রজনীর ভিতরও
একটা সূর্য জাগে

চেনো তুমি তাকে,
ঘুরেছ সাতপাকে?
স্বর্গদ্বারে জল না আগুন
কোনটা বেশি থাকে?

পোড়ায় যদি এসে
ফেলব ভালবেসে
তুমিও কি কবিতা চাও
উপন্যাসের শেষে?



তোমাকে হয়নি বলা

ছাদের ছোট্ট ঘরে
রাখা ছিল থরে থরে
আমসত্ত্বের ভিতরেও আম
বুঝেছি অনেক পরে

গয়নাবড়ির গয়না
ভালবেসেছিল ময়না
পোয়াতি পিসিমা জানত, আচার
রোদ না উঠলে হয় না

আমি বৃষ্টিতে ভিজে
নিজেকে খুঁজেছি নিজে
জানলার পাশে তোমাকে দেখেও
থেমে গেছি দহলিজে

থেমে থাকা মানে চলা
রথ থেকে রথতলা
চুরি করে আমসত্ত্ব খেতাম
তোমাকে হয়নি বলা...
 


প্রার্থনা

প্রার্থনা তো ভিতর থেকে শোনা
শাড়ির গায়ে রাধাকৃষ্ণ বোনা
সমুদ্দুরে মিশে গেলে পরে
নদীর পানি যেভাবে হয় নোনা...

হাত লেগেছে, তিন ছক্কা পুটে
জিভ লেগেছে ময়দার বিস্কুটে
ইচ্ছে করে আবারও যাই ছুটে
করলে তুমি, এমন জাদুটোনা

বইছে শ্মশান নদীর আশেপাশে
জলের মতো ছাই মিশেছে ঘাসে
মৃত লোকের জীবন্ত নিশ্বাসে
ফুরিয়ে যাওয়া মুহূর্তকে গোনা

সোনার জলে ধাতুও যদি সোনা
তোমার আমার একই তো প্রার্থনা...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন