দোঁহা

ড. শুভায়ু দের কবিতা

 


শুনতে পাচ্ছ, একুশ

বাদামি ধানের গোলা, জমি কার জমি কার!
দূর্যোধনের হাতে রাইফেল বন্দুক
সজোরে চেঁচিয়ে ওঠে হয়তো ভোরের লাশ
তুলসিও নিভে যায় বলে সব নিন্দুক

অনিল বাগচী নয়, আপামর বাংলার
কন্ঠ তুবড়ে দিয়ে অনাচার শৃঙ্গ
মা-বোন কাপড় চায়, থিকথিকে লালাময়
জালিম। বোনের দিকে তাক করে লিঙ্গ।

কোণঠাসা মুক্তির দাঁতে দাঁত বর্ডার
নিংড়ে ট্যাকশো দিয়ে কাঁধে নিয়ে কাচ্ছা
অশ্রু শুকিয়ে গেলে তাই ক্ষেপণাস্ত্র
জানেনি তো কতগুলো বরাহের বাচ্চা

একুশ রক্ত দেয়, একুশ রক্ত নেয়
একুশেই অন্তিম, একুশই শুরুর গান
রজ্জু লজ্জা পায়, মঞ্চও ভয় পায়
কসাইয়ের চোখে নাচে ভাষাগলাকাটাপ্রাণ।

 

আরামকেদারা

 কেদারাই সামলাই। দায়িত্ব দোলা দেয়। ছুটি তো আপেক্ষিক। কবে কোন ছোট কোল বলেছিল আমাকে, "সাবধানে থাকবেন। ওপারে নতুন ঘর। কোনদিন আসবেন।" তারপর দেশ-দেশ। পাশাপাশি বাড়ি-ঘর, আমাদের নদী সব, ভাষাকে জিন্দা রাখে ইছামতী-তিস্তা।ঠাম্মারা বুড়ো হয়, দাদুরা ফটোর কোণ। হারিয়ে ভেস্তে যায় এক যুগ এক দেশ। নতুন যুগের কেউ জানবেনা কখনোই, ছিল এক ছিল একই। একই সে নতুন দেশ, ঘাসে ঘাসে সীমানা।

 

সীমানা

প্যাকেটে পকেটে নাকী মসলিন আসত, এই তো চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মনবেড়িয়া। ফরিদপুরের ঘর, মাছ-জল সাঁতরাই।চোখেদের দোষ কী। এখনো যাবর নেয়। সবই তো অস্থাবর। বাবারা গল্প বলে। মনে হয় এই তো। এই তো আমার দাদু, যাকে আমি দেখিনি। এই তো আন্দোলন, এই তো সামাল-রব, এই তো ধানের ক্ষেত, দীঘি জোড়া কল্লোল।এই তো ক্ষয়ের রাত, "স্যার কী বাড়ি আছেন?", "কথা ছিল, মাস্টার"। তারপর রক্ত। দুচোখ গঙ্গা হয়। ওপারের মসলিন শুনি খুব জ্যান্ত। এত সরু কেটে যায়। কাটেনা তবুও কেন ঘাসে ঘ্যাঁষা সীমানা?

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন