দোঁহা

মন্দিরা ঘোষের কবিতা



অনাদি

১.
এই যে এক একটা সমীকরণ
অঙ্ক মিলিয়ে দেবার এক সমান্তরাল প্রয়াস
যেখানে আকাশ মানে উচ্চতা
নদী মানে নিরন্তর সরলতার দিকে
ধাবমান ইচ্ছেরাশি
আলোর কাছে মেলে রাখা ইহকাল
এই যে বর্ণে গন্ধে ডুবিয়ে রাখা মন
 ব্যাপ্ত নৈঃশব্দ্যরাজিতে বেঁধে দেওয়া স্বর  
সুরের কারসাজিতে গড়িয়ে যাচ্ছে অন্তর্লীন মুহূর্ত
পাতায় পাতায় ভোরের সমীহ নিয়ে
বেজে উঠছে আলোর উদগীথ
তবু্ও কেবলই শুরুর কসরতে
 ফুরিয়ে যাচ্ছে এই শুঁয়োপোকা জীবন

২.
তোমারই  আত্মজ এই জল
জন্ম দিলে বায়ু আর তেজ
দিলে বিবৎসা গ্রাম সবুজ শস্য
আর রেতোধা পুরুষ
প্রতিটি প্রাণ পূর্ণ হলো ললিত শাখায়
স্তোতাদের দিলে ধ্বনি মন্ত্র
ঐশীগুণ বুনে দিলে আলোর তন্ত্রীতে
কাম কলা সোমরসে সেবার আয়োজন
 তবু বিষাদ আর কান্নায়
ছাপিয়ে গেল দুখজাগানিয়া গাঙ
আগুনপাখির ডানা মুড়ে আসার মুহূর্তে
নত হোলো চোখ

আমাদের ধাতুমগ্ন আধার
 এই করঞ্জাস্তনের মোহ
এত প্ররোচনা গান
 সবই কি শেষের প্রশ্রয়

 
৩.
নিটোল জলের কাছে শান্ত ধীর
বয়ে যাওয়া শিখে নিতে নদীজন্ম সার
ঘর খোঁজে তবু পুষে রাখা যত্ন
গ্রহ তারা গাছপালা
পাখির  রমণ আকাশ
শিশুর নরম ঠোঁটে পবিত্র দুধলিপিগুলি
খেলাঘরে জন্ম জন্ম আঁক কাটা
ঝাড়ফুঁক কবজ জীবন
 
মৃত্যু মারীচ আসে দরজার গান নিয়ে  
ফুলে ফুলে এঁকে দেয় ছায়ার প্রণাম
অন্তহীন আদি জেগে থাকে
শেষ বলে কিছু নেই থাকা বলে কিছু নেই
নিজেকেই আজ ভাবি কাল ভাবি
শোক ধুয়ে জেগে ওঠে নিজের অনাদি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন