দোঁহা

কুশল মৈত্রের গুচ্ছ কবিতা



 তৃষ্ণা

তোমার বিষাক্ত চুম্বন এখনও পুড়িয়ে দেয় প্রতিটি বিকেলকে। ঠোঁটের অশ্লীল মেরুকরণ ভাসিয়ে নিয়ে যায় বেলাভূমির গোপন রহস্য! ফিরে আসে প্রতিটি ভোরে নতুন অন্ত্যমিলে যৌনতার রঙিন সাজে! পুরনো ভালোবাসার গন্ধ বাড়িয়ে দেয় নতুনত্বের অভিসারে। চাতকপাখির মতো তাকিয়ে তোমার চোখের কাজলতায়— বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিয়ে যায় বুকের গভীরে। মিলন পুড়ে ছাই! সময়টুকু ভাবায়। সারাজীবন আগুন জ্বলতে থাকে বুক-অলিন্দে! দাগ এতোটা যে গভীর হবে তা মনে মনে গোপন সহমতে।

জীবন গভীর থেকে গভীরতর ছুঁলে ক্ষুধার-পাতালে নতুন পালক শরীরী অক্ষর হয়ে ঝরে। যৌবত খেলা করে তাপে-অনুতাপে মেঠো আলপথ ধরে। স্রোত বইছে অলিন্দের পালতোলা নৌকার ভাটিয়ালি গানে। পলাতক সময় আফিম নেশায় বুঁদ হয়ে আছে ঢেউয়ের নুপূরের স্পর্শ।



অপেক্ষা

শব্দহীন কান্নারা মায়াবী শাওয়ারের জলের সাথে
স্নানরত আছড়ে পড়ছে বুক-বারান্দাতে
বাথরুমের এই একলা জায়গাটিকে বড় শ্বাপদ মনে হয়।
ক্ষণিকের নীরবতায়...তোমার কণ্ঠ আর নরম ছোঁয়ায়
জ্যান্ত হয়ে উঠি এখনো মাঝে মাঝে...

চোখের চাহনি আজও সাজিয়ে রেখেছি হৃৎপিণ্ডের ফুলদানিতে।
অনুভূতি এখনো দাঁড়িয়ে প্রাচীন শিরদাঁড়ায় রয়েছে ঘ্রাণ
সময়ের জলছবিতে হারিয়ে যায়নি তা...
তোমার লিপস্টিকের রক্তিম ঠোঁট ঘেঁষে
নির্গত কথামালা আজও জেগে আছে বুকযাপনের বারান্দায়।
নস্টালজিয়ায় সেগুলিকে জাগিয়ে রেখেছে মনঃঅন্তর্বাস...
বিকেল-বারান্দায় সেই স্নিগ্ধ রাস্তাগুলি
আজও প্রতীক্ষায়; শুধু তোমার আর আমার।

সময়ের জলছবিতে সব দহনের মায়াছবি জ্বলছে অনর্গল
আদিগন্ত মনে হয় যেন লাশ হয়ে বেঁচে আছি।

শুধুই তোমার পরছায়ায় ছোঁয়ার প্রতীক্ষায়...



পোষা আয়নায়

গোপন কথারা ধরা দেয় ফেসবুকে
ইচ্ছে আর অনিচ্ছের চারপাশ ঘিরে রয়েছ তুমি।
নির্জনে তুমি আসো আমার পাশে
দাঁড়াও চোখের পাতায়।
অনির্বচনীয় ইচ্ছেগুলিকে আমি চাষ করি প্রতি রাতে
তুমি অনুভবে ধরা দাও আমার গোপন রাতে!
বিছানার ওপর জ্বর আসে
নিয়ন্ত্রণহীন জীবন শুধু খোঁজে তোমায়!
অন্তরালের আড়াল থেকে
তুমি সবসময় দেখে চলেছ!
মাস দিন বছর রাতগুলো চুরি হয়ে গেছে
হয়তো বোধের ঘরে।
আয়নায় ক্যানভাসে জলছবিতে তুমি বেরিয়ে আসো
আমার বুকের মধ্যে থেকে।
তোমাকে আমি রেখেছি আয়নায় জড়িয়ে...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন