দোঁহা

কৌশিক সেনের কবিতা

 

ভাঙাকাচের উৎসব


-১৯৮৬-

 

ভিজে পাতলুন মেলে দিই উঁচু তারে

বারবেলায় স্বপ্ন দেখেছে কৈশোর,

মেঘ আর বুথফেরত ঠাকুমার হাতে

শান্তিজলের পসরা। 

স্রোত মেশে অনতিদূরেই,

ফ্রি প্রাইমারি স্কুলের দরজায়।

 

এবার পাকা রাস্তা হবে

বাড়তি বিদ্যুৎ খুঁটি,

আঁশগন্ধে উপচে পড়বে এলাকা।

ফুলকাকু ভোটে দাঁড়িয়েছে

নির্দল। মৎস্য চিহ্নে।

 

স্মৃতিটুকু উস্কে দেয়, অবোধ ঈশ্বর।

ছোটপিসি বলেছিল,

বাইরে যাসনা, খবরদার!

উঁকি দিয়ে দেখি, ভাঙা কাচ

কারা যেন ছড়িয়ে গেছে সদর দরজায়!

 

ভাঙা কাচে কৈশোরস্মৃতি...

 

-১৯৯৮-

 

হেঁটে গেছি বহুদূর,

যতটা দুরত্ব অতিক্রম করে

লক্ষ্যভ্রষ্ট তরুণেরা।

 

সেই মৎস্য,

বিলঘেরা মৎস্যদপ্তর

ভোটের লাইনে...

 

ঘণ্টা পার হয়

ঈশ্বর গলে যায় দুপুর বারোটার আগুনে,

সদ্য তরুণ বুথের দরজায়।

 

চিৎকার। গড়িয়ে যায় কলাপ্সিবেল গেট!

মুহূর্তে উপচে পড়ে ব্যালট বাক্স

কারা ওরা! তরুণ, তারই সমবয়সী!

পরিচিত! গেটের ফাঁক দিয়ে অপার বিস্ময়।

 

ভাঙা কাচে ভরে ওঠে তারুণ্য...

 

-২০০৯-

 

হরিয়ানাসংলগ্ন দিল্লি দেহাত

ভরা বৈশাখে মহিষের ধারাস্নান

বুথের বাইরে।

 

ঘুঙ্ঘটে আবৃতা ঔরত

সে নয়, মর্দরাই বোতাম দাবাবে ইভিএমে!

একটি নাদান বালক সঙ্গী হবে তার!

 

পহচানপত্র আনেনি, অনেকেই

পোলিং অফিসার নারাজ

ছুটে আসে গুণ্ডা

চেপে ধরে কলার।

“তেরি হিম্মত!”

ভয়ে থত্থর প্রৌঢ়া পিঠাসিন অধিকারী...

 

পিছনে এসে দাড়াই

যুবক মাইক্রো অবজার্ভার।

পালিয়েছে শয়তানগুলো!

মাফি মাঙে লোকাল এস আই...

 

...কাচের গুঁড়ো ছড়িয়ে পড়ে

জীবনজোড়া উৎসবের আনাচে কানাচে

 

ছোটোপিসিগো, লক্ষণরেখা পার করেছি কবেই!



 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন