দোঁহা

শ্যামাশীষ জানার কবিতা

 


আহ্বান 

ভস্ম
কিভাবে আগুন উড়িয়ে জেগে ওঠো
নষ্ট মেখে উঠে দাঁড়ায় গভীর অভিমান
একে অপরের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে 
দেখো, আমরা কেমন সাজানো মোমের পুতুল গলে পড়ছি ঘৃণা আর অপ্রেমের উত্তাপে
হৃৎপিণ্ড থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসা কার্তুজ
ছুটে যায় উদ্ধত বন্দুকগুলোর দিকে

জল
স্পর্শ করো, আরও গভীরে ধুয়ে নিয়ে যাও
উপড়ে ফেলো কাণ্ডসহ সমস্ত গোপন 
শেকড় তবু এত দাগ লেগে থাকে
এত বজ্র, এত মেঘ জমে আছে
স্রোতে সংকেত ভেসে যায়
আর এই গতিবিধির উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই
পর্দার ওপারে ঢুকে পড়ে পরস্পরবিরোধী জল
কারা যেন গেয়ে ওঠে অনিবার্য ভাঙনের গান,
এ ভূমির ভেতর অনাদিকাল বহে যাওয়া নদীর- 
দুই কুল ছাপিয়ে এবার আসুক বান



হাওয়ার সাথে কথা 

একা একা হাওয়ার সাথে বলি কথা
খুঁজে বেড়াই নিজের ভেতর সুবিধার গোপন ডেরা 
চঞ্চুতে ঠুকরে ঠুকরে ভেঙে দেখি নষ্ট ডিমের খোসা
ডুবতে ডুবতে খুঁজতে থাকি অতৃপ্তির প্লবতা

ঘাসের শিশির মেখে হয়েছি এক নির্জন মাঠ
এমনই বুঝি ছিল অনিয়মিত প্রণয়ের ঢেউ 
জিভের নীচে লুকিয়ে রেখেছো বিস্তীর্ণ ভুট্টার ক্ষেত
এক শীষ থেকে অন্য শীষে নেচে যায় অদৃশ্য কেউ 


ইনকিউবেটরে শান্ত শুয়ে আছে একটি বিরাট ঘাস ফড়িং
তার রঙিন ডানা কেটে নিয়ে আমরা উড়ানের স্বপ্ন দেখি 
উড়তে উড়তে জেনে নিই আবহাওয়ার আগাম সতর্কবাণী 
তোমার কাছে আজকাল আসতে দেয় না অহং এর নিষেধ
কোথাও কি উড়ে যাওয়ার কথা ছিল অসীম ছাড়িয়ে 
গতজন্মে ঘাস হয়ে জন্মানোর স্মৃতি এখনো তাড়া করে

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন