দোঁহা

চন্দ্রানী গোস্বামীর কবিতা

 


তোমায় ভেবে 

১.
যখন গোপনই 
করতে চাও বিস্ময় বা মুগ্ধতা

একমাত্র তুমিই
টের পাও
নিঃশ্বাসের গন্ধে পরাগ লেগে থাকে

তখনও কেন যে 
মিলনের সময় 

নিপুণ ভাবে আন্ধারে ডুব দাও অমন...


২.
শীত
তেমন কিছুই নয়

শালিখের দু'একটা উস্কোখুস্কো পালক
অথবা
বাবুইয়ের বাসার খড়কুটো

জড়ো করি
ওম দেই
শরীরের নিভু আঁচে

অসময়ে
'চরণ ধরিতে দিও গো'
মনে পড়ে...

ঠিক তখনই গানের গহীন থেকে জেগে ওঠে পৌরুষদৃপ্ত গ্রীবা।


৩.
তোমার বুকের ঘাম ঘন হয়ে উঠলে

...সাধ ছিল দু'আঙুলে মেখে নিয়ে
বাঁজা জমিতে ফসল ফলাব...

জমি ফসলে ভরাট হয়ে এলে
দস্যুর মতো দুহাতে লোপাট করে
রাখব তোমার লাজুক গ্রীবায়...

আজীবন তোমার বুক বরাবর 
ভরাট শীষের বাহার দেখবে
আকালের গর্ভে জন্মানো আমার দুচোখ...


৪.

যতোবার চোখে চোখ, ততবারই জলস্রোত আর অপূর্ব আলো
মিশে যায় একাক্ষর মন্ত্রের মতো উচ্চারণ-মরণ।

তাকে বীজমন্ত্র মেনে নামিয়ে রাখি শরীরের যাবতীয় সমর্পণ;

দূরে একাকী স্রোতে শব্দহীন যন্ত্রণাহীন ভেসে যায় মুখ, আর
তোমার মোহনায় মিশে যাওয়ার মতো শরীরের সব ঋতুকাল।

অসীমে ঘুরপাক খায় অনন্ত জিজ্ঞাসা-তবে কি ভালোবাসার সমনাম মৃত্যুকাল! 

যদি হয়, তবে নির্বাপিত চিতা ভস্মে একমুঠো সাদা ফুল দিও প্রিয়।




1 মন্তব্যসমূহ

  1. চন্দ্রাণীর কবিতার আমেজই আলাদা! বিশুদ্ধ সৃষ্টিতে ম ম করে বাউল ঘরানার নিবিড় প্রতিফলন। মনের গহন থেকে উঠে আসা ওম ধরে রাখে শব্দদের। যদিও এই লেখারা চন্দ্রাণীর স্টাইল থেকে বেশ কিছুটা স্বতন্ত্র। তবুও মুগ্ধতার এক নিক্তিও কম পড়ে না। দোঁহার এই সংখ্যাটি ঋদ্ধতায় নিজেই নিজের উপমা।

    উত্তরমুছুন
নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন