দোঁহা

নিমাই জানার কবিতা

 



ক্ষুধার্ত ঈশ্বরীর অ্যাব্রাপ্ট নখ ও সম্যক চামুন্ডার ধাতু বীজ

ক্ষুধার্ত ঈশ্বরীকে তিনটি অলৌকিক সম্যক ধাতুর জ্ঞানযোগ ত্রৈলক্য উপহার দিতে দিতে বাগানের চতুর্পাশে রক্তাক্ত দাঁত পুঁতে রেখে নিজেই পায়ের ভেতর ঈশ্বরের নলজাতক ব্রহ্মাস্ত্র আবিষ্কার করলেন, লোমকূপে এক একটি জঙ্ঘার দেশ প্রাণভরে পান করছেন কুম্ভীপাক নরকের দানবীয় রক্ত নৃত্য, সুদৃশ্য কামার্ত তিনি
মৃত মৃত গাছেদের সারারাত ভক্ষণ করলেন আগুন জ্বলছে বলে, গর্ভগৃহ থেকে ঈশ্বরের ঈশ্বর ভয়ংকর প্রাদুর্ভাব ঈশ্বর বেরিয়ে আসছেন, তিনি ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের পরিপূর্ণ ইঙ্গিত, রক্তের ভেতরেও আমাদের একটি শ্বেতধাতুর কাক বসে থাকে সারারাত,
তিনিও হ্রিং ক্রিং মহাভৈরবের মন্ত্র, চামুন্ডে পাশুপত নৃসিংহ দ্রব্য ছুঁয়ে ছুঁয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেন পায়ের তলায়, রক্তাক্ত অথচ স্বৈরাচারীনি দগ্ধ ঝলসানো প্রলয় কুন্ডে নিজেই অমিত স্নান করছেন জলজ আগ্নেয় ধারা নিয়ে, জলপ্রপাতহীন জলপ্রপাতে অক্ষর ধাতু গুলে গুলে পড়ে পার্থ শ্বেত প্রকরণ নিষ্ঠা দ্রব্যের সাংঘাতিক যমের নিষ্ঠায়, গুলিবিদ্ধ অস্ত্রের কারখানায় ধ্বংসপ্রাপ্ত তথ্যটি শুয়েছিল প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে, গুপ্ত ও গুহ্যতন্তু, শ্রীমৎ ধনুকের সর্পিলাকার সাপের তৈজস মন্ত্র নিক্ষেপ করছেন চতুর্থ অর্বুদহীন অভেদহীন ক্রিয়াহীন মহাজাগতিকে, 
কোন কৃষ্ণাঙ্গ বর্ণ নেই মহামায়া ভৈরব গাছের ভেতর থেকেও আমাদের তরল রক্ত প্লাবনের বৃষ্টি ঝরছে এক পক্ষ কালের উদগ্র বাসনাময়, তরল গুঁড়ো গুঁড়ো রক্তের থ্রম্বোসাইট সাংখ্যমান, হত্যা দিয়েছে বলে আমাদের জ্ঞান শেষ হয়ে গেল, রক্তাক্ত পিতাকে তিনিই হত্যা করেন তিনি হত্যা করেন ব্রাহ্মণ দেবদত্ত ও দত্তাত্রেয়, নিজেই শাঁখ বাজান মহাঘোষক, রক্তের স্রোত,  একাকী দুই হাতে পিপাসা মেখে খাচ্ছেন স্ফটিক পিপাসার মতো, ক্ষুধার্ত পাখনা গজিয়ে ওঠে এখানে কোন উলঙ্গ পোশাকে গাছেদের মৃতদেহ বিষয়ক কারখানা নেই, এই কারুবাসনালয়ে একা একাই মহা তীক্ষ্ণ অস্ত্রের ঝংকার তোলেন, মহাশুন্যের ক্রেঙ্কার ধ্বনি নবজাতকের খুরের শব্দ তিনি তড়িৎ তিনি মহা চুম্বক ধাতু অষ্টনাগের শিরোধার্য অক্ষয় সুতা, মহাশূন্য থেকে বেরিয়ে আসেন কামধেনুর পোশাক পরে সহস্র পদাতিক উলঙ্গ নশ্বর একাকী রক্তাল্পতা নদী থেকেও রজস্বলা তাপদগ্ধ প্রতিদগ্ধ অন্ধকারে আশ্রমের সৈন্যদেহ কুড়িয়ে কুড়িয়ে জমা রাখেন বাম হৃদয়স্থলে, সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড খান বিভূতি তৃতীয় লোচন মুদ্রায়,
এতো রক্তের তরল সান্দ্রতা পূর্ণ কৌশিকী অন্ধকার! এ অমাবস্যা ঘোর গলায় নিষাদ বিষাদ তীক্ষ্ণ গলাকাটা অসুর, পিশাচ ও নশ্বর দৈত্যের অপদার্থ ইঙ্গিত পূর্ণ সংকেত, জন্মায় জন্মায় সহস্র মৃতদেহের মতো পাদপ সমুদ্রের স্তন্যপায়ী, ছায়া ময় স্মৃতি প্রদেশে সূক্ষ্ম সমর্পণের পোশাক নিয়ে ধ্যান করছেন অখণ্ড ঋষিনী



অতিলোচনের শঙ্খিনী ও কন্দরপুরের আবাদী উপনদী

জঙ্গায় উপর্যুপরি ঘাত প্রতিঘাত, অসহ্য অলৌকিক কালো বিশ্বের স্তনাগ্র চুম্বন, বৈরাগ্য রেতঃ, কোথায় দুই হাতে বরাভয় মুদ্রা? রক্ত খেত ও খাদ্যনালীতে তিনি স্নান করেন দাহ্য কর্পূর দিয়ে, তমো  শঙ্খিনী
হে পিপাসা পুরোনো নদীতে ভেসে আছে অস্ত্রের কারখানার নিমজ্জিত নিশাচর দাঁত, প্রলয়ে দুর্গন্ধ ভর্তি নদ ছুটে আসে হিংস্র দৈত্য ছুটে আসে বীভৎস মহামায়া ইঙ্গিতে, তিনি ধোঁয়ার মতো উড়ে যান এ প্রলয় কালীন গান্ধর্ব রক্তের উপনদীতে, তিনি আবার সঙ্গম করেন মুদ্রার সাথে বরাভয়ের সাথে মহাপর্বতের সাথে মহা কৈলাসের সাথে মহাপুরুষের সাথে মহাদৈবের সাথে, তিনি চিৎ ও মৃৎ সুষুপ্তি, জাগৃতি নিদ্রা স্বপ্ন পার্থিব মহাপার্থিব তেজ দীপ্তি দম্ভ
তীক্ষ্ণ অতি তীক্ষ্ণ অতীত তীক্ষ্ণ, রজস্বলা তিনি কালকেউটের ছদ্মবেশ ও অতিরঞ্জিত চক্রাকারে পাতালে বসে থাকেন একাই ঐশ্বর্যহীন, পুরোনো হৃদয়ের অস্ত্রের বীভৎস কাশ্যপ ধ্বনিতে চুষে খান তার সাপের পুরুষলিঙ্গ পদেরই অহংকার, রাজসিক নক্ষত্রের বিহ্বল বিরাজার ক্ষেত্রে অষ্টম প্রকারের শৃঙ্গার করছেন ভেসে যাচ্ছে ধাতুরস মায়ারসের শোথ ও বৃক্ষনাথ কল্পতরুর সরীসৃপ গাছেদের প্রণাম মুদ্রা দৃশ্যে, এখানে অতি দৃশ্যের নৈবেদ্য পাত্রটি রাখলাম নেমে এসো ভুজঙ্গ আবাদীদের শক্ত ব্রহ্মাস্ত্র নিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে ফেলো তৃতীয় নয়নের লোল ও রক্তাক্ত চন্দ্রমুখী কন্দরপুরের শ্রী ও শ্রীহীন মুখগহ্বর, ধ্বংসের মহাপ্রাকৃত নদীতে ধাতু বীজ ছড়াচ্ছেন ওঁ মসিদ ওঁ মসিদ যজ্ঞকুণ্ডের চতুর্ভুজ কোণে, পদ্মযোনী
পৃথিবীর নিরক্ষীয় বুকে ঝুলতে ঝুলতে আত্মহত্যার গলায় নাসিকা প্রক্ষালনে ভীষণ ইঙ্গিত ফেলছেন তীব্র শ্বাস তীব্র নাসাগ্র বেদ ও উপবেদের অধ্যায়ে, তিনি পাশুপত নিরাময়ের আখ্যায়িত সোম রসের যজ্ঞ কুণ্ডে ঢালছেন কৃষ্ণ গহ্বরের শৈল্পিক অতীন্দ্রিয় মুদ্রা,
তিনি পুরুষ তিনি চন্ডাল তিনি ভৌম তিনি আদি তিনি সপ্তম ও মূর্ছনার অনন্ত বৈরাগ্যে চন্দ্রমালার মতো অনন্ত জ্ঞানযোগের অতৃপ্ত পিতামহীর ব্রাহ্মণ সত্য আশ্রমিক, দ্বৈত শিখণ্ডী,
বিষাদ লগ্নে ও পরমহংসী তিনি ঔষধি পাহাড় মুদ্রায় একাকী সুগন্ধের পারিজাতময় অমরাবতীতে নেমে পৃথিবীর রিপুময় রসাতল পান করছেন শৈবগন্ধ কুণ্ডলে...



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন