দোঁহা

লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডলের গুচ্ছ কবিতা



 হে মায়াসুখ 

নিজেকে স্পর্শ করতে  চেয়ে পাশ ফিরে শুতে চাই 
কোঁচকানো উরুর ছায়ায় বেড়ে উঠে উদোম আত্মকথা
আজ এসেছি তোমার কাছে; আজন্ম পুরুষ, 
ভ্রমণ সুযোগে বেরিয়ে পড়ে হারানো আত্মহত্যার নাভিনিম্নদেশ 
এবার তোমাকে ছুঁলেই জেগে ওঠে সব লোমকূপ 
উত্তাল চোখ নিয়ে শঙ্খ লাগার ঘোর, শীতঘুম ভাঙাতে ভাঙাতে
স্তন খাঁজে মেশাই ঠোঁটের  বারুদ,  জামদানী নখের শিৎকারে শ্বাসহীন জ্বর 
অথচ ক্ষণিকের কাছে বাঁধা পড়ে আছে ক্ষীণকোটি আলোকবর্ষ  আয়ু
যার পায়ে বহুকাল পথের  ক্ষরণ লাগে, সেখানে যোনির দেশ,  
জিহ্বা পান করে সব স্রোত, নাভির গোপন চৌকাঠ ভাঙে উচ্ছল উৎসবে
তরঙ্গবহুল শিহরণে এক নির্ভার অরণ্য মন্থন, ছল্‌কে পড়ে রাত্রিমদ, 
 সে সুধায় বাজে রাগ মালকোষ , বেঁকে যাওয়া শিরদাঁড়ায় আগুন আর 
জ্যোৎস্নায় ছটফটে বজ্র-বিদ্যুৎ , পান আঁকা পেলবতায় মিশতে থাকে ঘাম  
তারপর সেই  ফিরে আসি বাউল ফকির ; ইচ্ছা শব্দে সঙ্গম সাজাই 
আঙুলে আঙুল জড়িয়ে নগ্নতার পাশে খুঁজি  আজন্মের মোৎজার্ট  
শ্বাসদ্রুত স্বরে বলতে বলতে থাকি -  আমার সন্ধিময় প্রাণটা নিয়ে 
তোমার পাপ পূন্য সমেত সব সীমান্তরেখা দাও, হে মায়াসুখ — 



ঋতুমতী আনন্দ বর্ণ 
  
অন্ধকার খুলে দেয় ঈষৎ আনত লাবণ্যের দুটি মোহন চূড়া   
স্বেদকনা গড়িয়ে যায়  নিম্নাভিমুখী জিরো আওরের দিকে  
উৎসর্গ ছাড়া গতি নেই আর   
স্থির জেনো এই সব অগনন আনন্দ বর্ণ নিয়ে কথা বলতে বলতে     
কেবলই  একটা গহ্বর থেকে বাষ্পীভূত হয় উত্তাপ  -     
ক্রমাগত বিস্তীর্ণ নীলের দিকে পৃথিবীর সব ঘাস সবুজ হয়ে যায়  
সটান দাঁড়িয়ে যায় বাঁশ, ঝিরঝির বাতাসে আঁচড় কাটে আকাশের বুকে  -  
সে দাগে গোপন গুমোট, গহ্বরের মুখে জমে আরক্তিম শিশির  - 
 কৃষ্ণকায়ার ঋতুঘ্রাণে ভরাট উত্তাপ,   হেঁটে যায় সুতীব্র ফসফরাস । 
বিজন রাস্তার ধারে একটা নদী আর আলগোছা ঢেউ   
খুইয়ে দেয় বৈশাখ -  তার  মতো নিঃসঙ্গ আর কাউকে  দেখিনি
বাতাসের বনে আমিও তো শূন্যহাত; তেজস্ক্রিয় বলিরেখায় এঁটেল পুরুষ 
লোমকূপে জেগে উঠে  উদ্দাম পৃথিবীর নিবিড় কম্পন    


তোমাকে আকাশ বলি 

আকাশের নির্দেশের দিকে দাঁড়িয়ে - ডানদিক বামদিক
তুমি একলা হয়ে হাত বাড়ালে  -  তোমাকে আকাশ বলি তাই 
সম্মুখে পাতা যে আজন্ম ঊরু  - তার কোন বিছানা নেই , 
পাহাড় থেকে আনা কর্কশ পাথেরের  টুকরোগুলি 
আমাকে রক্তাক্ত করার  প্রতীক্ষায় বিছিয়ে দিয়েছ ধারালো স্তনাগ্র   
আমার স্বপ্নমোহের কাছে শিহরিত উল্লাস   
যদিও জোড়া শালিকের আদর সোহাগ ভাইরাল হওয়ার নয়  
তাদের খুনসুটিতে নেই কামরসেরও কোনো কথা     
এই গুচ্ছ  কাশের হাওয়ায়  ক্রমাগত ভাঙছে উত্তাল শরীর 
মিহি কাঁপনে পালকের বাতাসেরা শিৎকার বোঝে  
সে সুরে ঋতুময় উজবুক রতিকান্ত জল শুষে নেয় জল থেকে 
আমার উচ্ছ্বসিত আনন্দে সঙ্গত করে  বাউল,  একটা স্রোতের মাঝে 
ক্লোরোফিল মেখে হয়ে উঠে ফেনাময় আর ট্রেন চলে যায় জঙ্গল চিরে   
তারপর ক্রোমোজোম শুরু করে দেয় যাবতীয় অনুসন্ধান     














একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন