দোঁহা

রশীদ হারুণ-এর কবিতাগুচ্ছ

 


বিম্ব

ভাঙছে যৌনমন্দির। কত ইউনিট কামতৃষা তুমি সহ্য করো! আমি ভাবি, চূড়ার মহাশূন্যতা ঘিরে আইসক্রিম ফুলতে থাকে নীলগোলকের দিকে। এবং আমার বীজথলি হৃদয়ের পার্লামেন্টে বানাচ্ছে আইন। তবে, যাবে ডিম্বাশয়ের বৈয়ামে? মাথাভর্তি হাতগুলি হৈ হৈ। অণ্ডকোষের মহুয়াবাগান ও জোনাকি সভায় সমুদ্র বানাচ্ছে মেছোজল। কিছু রেডমিট শ্বাস। কিছু আঁশগন্ধী আলো। কিছু চিকন চর্বির উল্লম্ফন। আর মগজের মোরগফুলে পিঁপড়ে দৌড়! আমার চেয়েও আমি পঞ্চাশ ওজন! এবং জলের নুন ইতোমধ্যে জীবের উদ্গম খুলে নাচতে চাইছে বায়ূর শুঁড়িখানায়।

এখন ঘড়ির চেয়ে প্রাজ্ঞ আমি।
এখন তৃষ্ণার চেয়ে তৃষ্ণার অধিক আমি।

এবং সময় সিলেবলে তোমার সমস্ত বিন্যাস নাচিয়ে দাও। প্রচুর মৈথুন তৈরি করো হে আল্লাহ! স্তন লিখি। তুলে দেই বাদামের আবরণ। বগলের নুন চেটে, জিভের ব্লেডের লোককথা লিখি। লিখি যোনি— দেহমদ আর পারফর্মিং ফড়িং। এতো সন্নিকট, তবু এতো দূর ওড়ছে তোমার শয্যার বাগানে! ঘামের পুত্রকন্যারা ঝরতে থাকুক— ঝরতে থাকুক নুনের সংলাপ।

নিজেই নিজেকে নিকেশ করে ফেলি—

বিদ্যুৎ, বিদ্যুৎ আরও বেশি ভোল্টেজ, প্রচুর উৎপাদন আমার শিরার সৈকতে ধাক্কা দিক। নিশপিশে জর্জরিত হোক তোমার মাংশের মদ। শয়নঘরে, আমার ইঞ্জিনের জোস ধরানো ফসফরাস জ্বলে— তুমি দ্যাখো, হাড়ের নক্ষত্রগুলি চুরচুর পুড়ে যাচ্ছে। আলোর নিতম্ব খোলো— সুতোর হাইপো হাসি আমার কী কাজে লাগে? শুধু আমি দেখি, পাউরুটির স্লাইস খুলতে খুলতে নীলছাদে ঝোলা সিলিংফ্যান ঘুরছে আমার ভেতর আর সমস্ত মানমন্দির দেখছে শিশ্নের মতো একটি নক্ষত্র ডুবে যাচ্ছে ব্লাকহোলে...

কোথাও আলো নেই
সব আলো তোমাতে পতিত

অন্ধকার নিশপিশ করছে...



দুই পাহারাদার

আমরা শূন্য নিয়ে জগতের মার্বেল-মার্বেল খেলি।

তুমি আর আমি প্রতিদিন—
অপূর্ব বিপর্যয়ের দারু খেয়ে
প্রচুর খিস্তিখেউড় করি, দেহে-দেহে—

এতো গালি কোথায় থাকেন, জানি!
স্বপ্নে-দুঃস্বপ্নে অনন্ত গালির ভেতর আছি, আর,

মর্মে-মর্মে দূরত্বের নগ্নতাকে অবিশ্বাস করি

পাহারায় রাখি তোমার যৌন-মেশিন!



সে, এক কাঁঠালচাঁপা

সে, এক কাঁঠালচাঁপা, কম্পমান, ঝুঁকে দেখছে আমাকে—
ফুলেফেঁপে উঠছে গন্ধের গোলা—
আমি হাসি, আর ঢুকে যাই লীলার টানেলে :

দেহর্বেদের বিছানা এটা, দেহম্যাট্রেস— উবুড় হয়ে থাকি! 
শিরার জ্বলন্তমুখ বিশাল গর্তের সেজদা বানায়;
আরও হা, প্রার্থনা বীজ— শ্বাস-জোনাকির পুঞ্জ উড়ে যায়।

নিজেই বাধিত, কুয়োর ভেতর খাবি খাই—
বলি, আল্লা, কাম দাও আরও— আরও আয়ু—

আমি যেন আয়গুলো রেখে যেতে পারি চৌষট্টি কলায়।



ঝুমুর কিস্কু

ঝুমুর কিস্কুর সাথে লাউডগার লিরিক দেখছি—

বৃষ্টি হচ্ছে…
গাছগুলো খুলছে, খুলছে বৃষ্টির ব্লাউজ

ভিজে যাচ্ছে—
বারান্দার স্তন
মাথার মাদিহরিণ
সাঁওতাল গির্জা
বৃষ্টিখচিত মেয়েকুকুর
মার্কসবাদী ময়ূর

জলের নাভীরা কাটা পড়ে বয়ে দিচ্ছে ছোটগঙ্গা

ডুবে যাচ্ছে—
পিঁপড়ের গোলাঘর
মৃত্তিকার ফুসফুস
তারে ঝোলা অন্তর্বাস
মদের মটকা
খইফোঁটা খুঁটি

আকাশ তলিয়ে গেছে জলেদের চোখে

দিনাজপুরে, ঝুমুর কিস্কু থাকে



দেহতত্ত্ব

মনবিমানের সওয়ারি— অবুঝ আমি—
দেহতত্ত্বের উড়ান পড়ি
আলোতে বা অন্ধকারে হৃদয়ে রমণ খেলি :

দেহে তার লীলাসঙ্গীতের কুঞ্জবন

মানুষের উপাখ্যান যৌনকামী, তারা জানে—
জৈবিক তিয়াসে থাকে ঘোর-ঘোর গল্পের আরক
তুলে নাও মন থেকে ঝাঁক-ঝাঁক চাঁদের চামচ, আর

মধুটুকু ঢেলে দাও মধুর গেলাসে

বুকের রাত্রিতে নীল কুপি জ্বলে, যেন,
থিরথির গজরায় মধ্যযামের ইঞ্জিন

স্যাকরার কারখানা আমি
অগ্নির-জলে জন্মের গহনা গলাই

দয়ালু রাত্রির নিরবতায় দুলেছি, আর,
দেহগঙ্গার অশ্রুর পাড়ে রাত্রি লুট হয়ে যায়




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন