পোড়া মাটির হাট
১.
চৈত্র আগুন ঝরছে।
শালপাতার ফাঁকে ফাঁকে
সম্পর্কের কোকিল ডেকে যায়!
দোহারা গড়নের একটি পৃথিবী
মেলেদিয়ে সময় পোহালে
পোড়ামাটির হাট!
আসুন, তার সাথে আলাপ হোক
সাঁকো হোক হৃদযোজন দূরত্ব টুকু!
২.
বিক্রয় অযোগ্য অভিমান গুলি
তাঁতের শাড়ি, সুতির শার্ট, গোলাপি গামছা হয়ে ঝোলে।
মতিলাল কুন্ডু
ধুলো ঝেড়ে তাদের গায়ে হাত বুলিয়ে দেয়।
চৈত্রী সেলের গমকে ফুলে ওঠে শাড়ির আঁচল
যেন তার গর্ভবতী বৌয়ের শরীর।
৩.
সোহাগী মান্ডীর খোঁপায় কাঁসাই বাঁধা থাকে
আর শরীরে বনসাই প্রস্তাব!
নাগরের নজর পড়েনা তবু্ও
তীক্ষ নোলক বুঝে ফেলে সম্পর্কের ক্রয় বিক্রয়!
৪.
নভোনীল রঙের ওপর সাদা বিন্দু বুটিকের কাজ
শাড়ি নয়, যেন অলৌকিক ময়ূর নামিয়ে দিলে
চোখের সামনে। শ্রাবণী ময়ূর থৈথৈ করে।
দোলা কাকীমা হাতে ছুয়ে দিতেই
দেখেন ময়ূর কখন পালক ঝরিয়ে
আবছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ হয়ে যায়।
শাদা পাঞ্জাবী চোখে চশমা, যুবক সেগুন শরীর!
গোটা হাট তখন রামানন্দ কলেজ ক্যাম্পাস!
৫.
পোড়া মাটির হাট থেকে চৈত্র উৎসব ভেসে আসে
বুকের সরোবরে নামে শ্বেতকায় হংস যুগল।
বিকেলও ফুরিয়ে এলো
মাটির নর্তকী, কানের দুল, সজল জিলিপির মাঝে
বীণা ম্যাডাম ঘরে ফিরেন
চিবুকে ইতিহাসের কাঠিন্যে নিয়েও
হৃদয়ের সম্পর্কে এখনো কি দুচার কথা বলা যায়!
৬.
রঙের গ্যারান্টি আছে
নিয়ে যান, আপনার জন্য টুয়েন্টি ফাইব পার্সেন্ট ছাড়
বিড় বিড় করতে করতে থম মেরে যায় মতিলাল!
ছাই ভার ঘট ভাসতে থাকে কাঁসাই কোলাজে!
দূরে
আরো দূরে
লাল হয় পয়লা বৈশাখ!