শৃঙ্গার
চোখের ভেতর থেকে লাফিয়ে এল দুটি সাপ
অতর্কিতে জড়িয়ে ধরল কোমর
হিসহিসে চোখে একটি নীচে নেমে গেল
আর অন্যটি উঠে এল ক্রমশ উপরের দিকে
তখনও নক্ষত্র ঘ্রাণের উপত্যকায় দেয়নি ছোবল
উত্থিত ফণার নীচে চেপে ধরেনি অস্থির চেতনা
জ্যোৎস্না রাতে চন্দ্রকেতুগড়ের সম্রাটের কোলে এক কৃষ্ণা রমণী
যেন সুন্দরবনের বুকে নরম থাবা ফেলে হেঁটে যায় ক্ষুধার্থ বাঘিনী
তার আঁচড়ের প্রতিটি দাগ এখনও লুকিয়ে আছে মাটির ভেতর
আজও রাতের অন্ধকারে চন্দ্রকেতুগড়ের মাটিতে কান পাতলে
গভীরের পাললিক স্তর থেকে উঠে আসে আদিম শীৎকারের ছন্দ
এইসব স্মৃতি প্রেমের মত জেগে ওঠে শরীরের অতল গ্রন্থিতে
আধুনিক খননে খুঁজে পাওয়া ধংসনগরীর সর্প-সর্পিনীর মত
আজও আমরা শুয়ে আছি যেমন দুটি নিভে আসা ছায়াপথ
আকাশে আঁকা আছে পাশাপাশি অথচ অযুত আলোকবর্ষ দূরে
ধ্যানবিন্দু
স্বপ্নের ভেতর হেঁটে যায় জঙ্গলের নীলাভ শরীর
বনের মধ্যে একটি গোপন পুকুর ভীষণ একাকী
তার স্নিগ্ধ জলের উপর কলমী ও শালুকের পাতায়-
খোলা চুলে নরম পায়ে হেঁটে যায় এক ডাহুক পত্নী;
কোথায় যায়? ঠিক কোথায়? কেন, যতটা দূর প্রেমে!
ছিঁড়ে ছিঁড়ে যাওয়া স্মৃতিরা ভেসে ওঠে
তার সাথে নেচে ওঠে শামুকের চঞ্চল ভ্রুণ
চারপাশে সাজানো রয়েছে অসংখ্য অদৃশ্য আয়না
সবকিছু দেখা যায় শুধু নিজেকে দেখা যায়না
সত্যিই কি দেখা যায় সব? আদৌ তা সম্ভব?
এসব ব্যর্থ জন্মকে ছায়াদান করতে
সমগ্র মহাকাশ জুড়ে নৃত্যরত ভ্রষ্ট জ্যামিতি
আদিম নক্ষত্রের ঝরোখা জুড়ে সাজানো ব্যক্তিগত চিতাকাঠ
তার ভেতর ধ্যানবিন্দুর মত বসে আছেন বিস্ময় ব্রহ্ম