দোঁহা

অমিত মজুমদারের কবিতা

  


সাদা কালোয় বেঁচে থাকি 

কিছু মায়া থেকে যায় কিছু মায়া চলে যায় দূরে 
বাতাবি লেবুর ঘ্রাণে বাঁশি তার সেরা শ্বাস টানে 

মাছের চোখের মতো কাকের বাসায় চেনা সুরে 
গভীরে লুকিয়ে থাকা নবাবী বিরহ কিনে আনে। 

আমার শ্রাবণে দোষ। নাড়ি বাঁধা বারিধারাগুলো 
মায়াবী আঁচল পেতে জমিয়ে দিয়েছে চোরাগলি 

আকাশে বাদুড়ঝোলা উড়ে যায় পরবাসী ধুলো 
তাদেরই শরীরে মেখে পুড়েছে প্রেমের কথাকলি। 

তোমার ভ্রমণ সাঁকো সাজিয়ে দিয়েছে জলবায়ু 
নীরব দাঁড়াতে চেয়ে কেউই পারেনি থেকে যেতে 

আঁধার কাহিনী লেখা মোটা মাথা নিয়ে পরমায়ু 
একাই এগিয়ে এসে উঠেছে বানের জলে মেতে। 

তুমি তার মায়া হয়ে  থেকে যাও উদাসী আলোয় 
আমিও দাবার ছকে বেঁচে থাকি সাদা ও কালোয়


ফেরিওয়ালা চলে গেছে 

গড়ানো ঘামের সাথে নীচে নামতে নামতে দ্রুত বাস্প হয়ে যাই 
বিষন্ন দেশে তুমি নদীমাতৃক। নদীকে শিখিয়ে দাও ঠাণ্ডা স্রোত।  
শেষ আইসক্রিম বিক্রি না হওয়া বাক্স কাঁধে গ্রামের রাস্তা দিয়ে
হেঁটে যায় ঈশ্বরচন্দ্র ফেরিওয়ালা। অখণ্ড তৃষ্ণা তার গ্রাম জুড়ে 
সে জানে নদীর ওপারে আর একটা মহাশূন্য তারই অপেক্ষায় 
খিদে, মাটি আর জলে পা মিলিয়ে সেখানেই যেতে হবে তাকে। 
শরীরে অবক্ষয় নামলে তলপেটের ব্যথা রোদ খুঁজতে বেরোয় 
অনেক বাড়িতে রান্নাঘর না থাকলেও সব গাছে রান্নাঘর থাকে 
তীব্র রোদের সালোকসংশ্লেষ গন্ধে সেও বাস্প হতে শুরু করে। 
তার বাক্সে জ্বলছে মেরু প্রদেশের বরফ। ভেতর আর বাইরে 
তুমুল বিদ্রোহ। তীক্ষ্ণ বরফের জল কিংবা উষ্ণ ঘামের শ্রমবিন্দু 
সবাই স্বাধীন নদী হয়ে উঠতে চায় এই বন্ধু বাৎসল আইসল্যাণ্ডে। 
এমন সময় আমিও শীতল হতে থাকি। আরও শীতল হও তুমি 
ঘাটে পা ধোয়ার অছিলায় একছুট দিয়ে তোমার কাছে চলে যাই 
ততক্ষণে ফেরিওয়ালা চলে গেছে ঘাট পেরিয়ে অনেকটা দূরে 
তার বাক্সের শেষ আইসক্রিম এখনো পুরোপুরি গলতে পারেনি। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন