মনোহারি
জীবনের প্রসন্নতা কম তবু প্রসন্নের সমূহ বিষাদে এত আনন্দ পাই কেন? যদি সে জাহাজভাসা আলো থেকে অলৌকিক ত্রাণ পাওয়া যেত, নেমে যেতে পারতাম সামুদ্রিক কোনও দ্বীপে, জঙ্গলে গুহায়। আলোর প্রধানতম খেলা সুদূরের অতি কাছে নিয়ে যাওয়া ভাস্বতী তারা। সেখানে কি প্রিয় মাটি আছে? মায়ের সুগন্ধ রাখা আছে বিরহ কৌটোয়? একদিন নিজস্ব ডানার কাছে হেরে যাবে ওড়ার ক্ষমতা। তখন চোখের নীচে সাংকেতিক দাগ, ছোরা চালানোর বীভৎস অভিজ্ঞতা আর অপরাজেয় কৃত্তির আসনে কোনও শ্মশানের শবদেহে আমি। তুমি খুব ভীতু, ন্যুব্জ স্বরে শিউলি ফুলের মতো চেয়ে আছ প্রত্যক্ষ তফাতে। আজ গ্রামের স্বতন্ত্র জন্মদিন। কচুরি পানার ফুলে ধাঁধা লেগে যায়, আপোশে কখনও কখনও যাই। মনোহারি রঙের দোকানে পাখির রক্তে লেখা থাকে মন হরি। এবারই কঠিন লাগে হাঁটা। আর কী? কোন বাড়ি যাব? শ্মশানের শিমুল বৃক্ষে পেঁচা, অগনণ অস্তিত্বকামী প্রাণি আর মরুৎ খ্যাপামো। এভাবেও দেখা হয়ে যায়? দপ করে জ্বলে উঠে পুনরায় নিভে যাওয়া অচঞ্চল আলো, আমি নেভাব কীভাবে? 'এই সেই জলস্থল মধ্যবর্তী প্রস্রবণগিরি'— নীরবে কম্পাঙ্ক পেরিয়ে আরও অসংখ্য অদৃশ্যে মাথা উঁচু করে আছে ঢেউ। সোনার তরীর গর্ভে বিস্মিত তরল আগুন। ওর শেফালির জুজু ধরে ফেলে বড় ভুল হয়ে গেছে। কুশবনে ভয়ানক আতঙ্কের শিস। মানুষের মাঙ্গলিকী এখানে না থাক, কৌতুহল আছে। ভরে আছে বিষথলি পরিপূর্ণ অমৃতে-অমতে।
