একটা বই দাও
এখুনি একটা বই দাও,
হোক না তা কোনো কাব্য,
ওতে ডুবে যেতে চাই নৈঃশব্দের গভীর দহনে,
তার ছাই ছুঁয়ে জানবো আবেগের একেকটা চরণ,
উড়ে যাবে নিঃসঙ্গ প্রহরের নিসর্গ অভিলাষ,
ভারী হবে আঁখি পল্লব দ্বীপের মতো বেদনায়, অশ্রুতে,
তবু সে রয়ে যাবে মায়া অঞ্জন আশ্বস্ত আসক্তিতে।
যদি কোনো গল্পের বই দাও,তবে তাই হোক,
আবৃত ডানার কাহিনী আমায় করুক আশ্রিত আশ্রমিক,
স্বাভাবিক গাছের ছায়ায় ছেয়ে দিক পান্থজনের মোহ,
এখানে পাতারা খসে এসে মাটিতে খোঁজায় মগ্নতার মুখ,
পাঁজরে যদিও তার বেজে যায় বিদগ্ধ বেদনার আবহসুর।
আর কিছুই না থাকে তবে দাওনা ঐ বর্ণপরিচয়টাই,
ঈশ্বরের স্বর আর ব্যঞ্জনে পাকাই খিদের খুদ জাউ,
হলন্ত শব্দ আর শিশুর জিহ্বায় ফুটুক নিত্যসেবা ফুল,
কাঁচা হাতের আঁকিবুকি আর দুলে দুলে আবৃত্তির সুরে, জেগে উঠুক দিশেহারা পাড়ার বেঁধে বেঁধে থাকার নৈপুণ্য।
মানুষ ফিরুক তার চৈতন্যে, একান্তই আত্মার
ঘরে।
পুকুর ঘাট
বহু বার মনে হয়েছে একটু পুকুর ঘাট থেকে ঘুরে আসি,
কতদিন ধুয়েছি সেখানে বাসন কোসন,
ডুবিয়েছি নিজের গা অম্লান বদনে,
পাড়ের গাছেরা বেয়াড়া আলসেমিতে থাকতো ঝুঁকে,
পুকুরের মুক্ত সে ঘাট ছিল জীবনের যাপন সেতুর মতো।
এখনো কি সে সব ছায়া পড়ে আছে জলের আঁচলে,
এখনো কি উঁকি দেয় ঘাটের কাঠে ছোট মাছেরা,
কথা বলতে চেয়ে ভুট কেটে কেটে ছুটে আসতো অনেকেই,
বলার উপযুক্ত নয় মনে হওয়া কথাটা আর বলা হয়নি পরে,
ছায়ার ঘোমটায় ঢাকা মায়াবী কালো জল উঠতো নড়ে ,
তার তরঙ্গ দোল ছুঁয়ে দিয়েছে পাড়ের প্রতিটি কোণায়,
খসা পাতায় পাঠিয়েছে ঈশারা লজ্জিত ভাস্যে,
আজ ফিরে গেছে সব কুশীলব একে একে দূরে একান্ত উৎসন্নে,
শুধু ভিটে আঁকড়ে পড়ে আছে হয়তো সে ঘাট স্মরণের অকুস্থল।
