দোঁহা

হে সখা মম হৃদয়ে রহো"

 

 রাধা দীপ্যমান গোস্বামী 
 

পূর্ণেন্দু পত্রী লিখেছিলেন -

যতক্ষণ কাছাকাছি থাকো যতক্ষণ ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকি

আমি যেন মেঘে জলে মেশা কোন আত্মহারা পাখি " |

 আমি যেন সেই পাখি টি যতক্ষণ তোমার আকাশে ওড়াউড়ি যতক্ষণ তোমার বাতাসে তোমার সুগন্ধ আবেশ ততক্ষন মন ভালো করা তোমার পরশ প্রাণে তবু মাঝে মাঝে উড়ে যেতে হয় দিক ভুলে অন্য শহরে পৃথিবীর অন্য কোন খানে পরিযায়ী পাখির মতো মন জানে সে ফেলে এসেছে কারে অন্য শহর কে তাই আপন করে নেবার স্পর্ধা পাইনা খুঁজে |

 যখন তোমার কাছে থাকি স্পর্ধা যেন চেতনায় মননে জানি তুমি আছো তাই সোচ্চার গলা মেলাই নাগরিক মিছিলে ব্যানারে পোস্টারে হাত এ হাত এ যেন সেই স্পর্ধার আস্ফালন আর গলায়  স্লোগান এর উলুধ্বনি সবার সাথে আমিও যেন পৌঁছে দিতে পারি দাবি-দাওয়া-চাহিদা মেনে নিতে নিতে দিন গুলো মেনে নেবার আগে তাই বেছে নিতে পারি সঠিক পথ আর  সেই পথের তুমিই স্পর্ধা জোগানোর পাথেয় |

 সমকালীন চালচিত্র - সবই তোমারই হাত ধরে একাডেমী চত্বরে নাটকের মঞ্চে "মেফিস্টো" , "হ্যামলেট" , "যে জানলা গুলোর আকাশ ছিল" ,"হিবিজিবি বাহিনী",  মধুসূদন মঞ্চে "হেনরি কোথায়" , "আন্তিগোনে" , "ব্রেন" কলামন্দির এ "বিনোদনী অপেরা" যেন ইতিহাস এর পাতায় ফিরে দেখা বর্তমান কে নাটক দেখে বুঁদ হয়ে একা একা বাড়ি ফেরা তোমারি পথ ধরে সুমনের কথায় গান এ সিন্থেসাইজার এর টাপুর টুপুর অঞ্জন এর সোচ্চার ভালোবাসার দাবি সব যেন তোমারি জন্য |

যেন হাত এর মুঠোয় তোমার হাত ধরে পথ চলা - সময়ের অঙ্গীকার কে সাথে নিয়ে |

 তোমার মলয় বাতাসে মনের ভাবনা মিশিয়ে দিই সাদা মেঘের কণার সাথে উড়ে যায় উদাসী ওই গগনের পরশ লাগে আমার প্রাণে |  আমার অন্তরের নীড়ের পাখি তখন কি জানি কি কারণে অধীর হয়ে ওঠে আমিও তখন প্রেমিক খুবই কথায় শূন্যতায় ছন্দ ভেঙে লিখে রাখি মুহূর্তের ভালোলাগা আর ভালোবাসার স্বরলিপি কোনো কোনো টি তার কবিতা হয়ে ওঠে নিজের অজান্তে নিজের কাছে তোমার প্রশয়েই এতো বাড়বাড়ন্ত স্বগতকথনকথোপকথন এ তাই ভরাই লিটল ম্যাগাজিন এর পাতা প্রবীণ - নবীন পুরাতন - আধুনিক এর মেলবন্ধন ঘটে বইমেলায় লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়ন এ নন্দন চত্বরে লিটল ম্যাগাজিন মেলায় টেবিল - এ টেবিল - এ |  কলকাতা বইমেলায় স্বগত কবিতাঞ্জলি প্রকাশ এ সবই তোমার আশ্রয় এ তোমার সাহচর্যে প্রেয়সী আমার কতই নামে না ডেকেছি তোমায় কতই ছবি এঁকেছি ইজেলে কতবার যে ধরা দিয়েছি ধরা পরে গেছি বারবার তোমার প্রেমে হিসেবে রাখা আছে মনের চিলেকোঠায় দিস্তে দিস্তে দীর্ঘ কবিতার অন্তরা তো তুমিই আরোহী - অবরোহী তে বন্দিশে - বন্দিশে শুধু তোমাকে খুঁজে চলা মন খারাপের বিকেলের খবর তাই অপ্রকাশিত থেকে যায় চির গোপন নক্সীকাঁথায় যার সন্ধান জানেনা কেউ তোমাকে ছুঁতে চেয়েই এক পক্ষ কাল যাপন সংগীত |  তবু মনের আশ যেন মেটে না কিছুতেই |

 আর তাই রানওয়ে থেকে উঠে যাবার আগের মুহূর্তে থমকে থাকে চোখের কোণে কয়েক ফোঁটা চোখের জল তোমারি জন্য সুমন বলে "ককপিট থেকে পাইলট বুঝে যান / এসে গেলো তার তোমাকে দেখার দিন " আর আমার অবস্থা তখন তার বিপরীত ককপিট থেকে পাইলট ঘোষণা করেন এবার আমাদের যেতে হবে কবি গুরুর ভাষায় তখন আমি গুণগুণ করি -

এখন আমার বেলা নাহি আর বহিব একাকী বিরহের ভার -"  |

 ভালো থেকো ভালো রেখো




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন