দোঁহা

শিশির আজমের কবিতা

 

 

করাতকলের শ্রমিক

তুমি জানো তোমার অন্য নাম ছিল?
জানি।
রোদে দাঁড়িয়ে কিছু শুনতে পাও?
না
তোমার নাম যেন কী?
দাঁড়াও, জিগ্যেস করে আসি কুয়াশাকে।

পৃথিবীর শুরু কোথা থেকে
এ এক ফ্যাকড়া
ঈভের অস্বীকৃতি আর প্রাচীন মিশরীয় আত্মা
আমাদের সত্তায় জড়াজড়ি করে শুয়ে আছে

গ্রিক নন্দনতত্ত্ব বোঝার আবশ্যিক শর্ত হলো
মূর্খ হকে হবে তোমাকে
এ না হলে তুমি বুঝবেই না শেকল ও চাবুক দ্বারা সভ্যতায় যা উৎকীর্ণ
তা আসলে কোন লিপিতে

রোমান সম্রাটের পায়ের নিচে খেলতো হিংস্র সিংহ
প্রত্যেক গ্লাডিয়েটর এই খেলাকে উপভোগ্য করে তুলতো
নিজের টকটকে লাল যকৃত প্রদর্শনের মাধ্যমে
মাঝরাতে নির্জন রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে দেখি পরিচিত এই চাঁদটাই যকৃত

স্বীকার করতে দ্বিধা নেই পৃথিবীর যে ধারালো লেজ
ধারালো আর চিত্তাকর্ষক
যা খানিকটা বেশিই আমরা অনুভব করি
তা বেরিয়ে এসেছে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট থেকে

আগরবাতির কল্লোলে শুনতে পাইনি আমাদের জলপ্রপাতের জীবনকাহিনী
আর চাঁদের নিজের আলো নেই
এই কথাটা বারবার কেন আমাদের শোনানো হয়
আর হোয়াইট হাউস থেকেই বেরিয়ে এসেছে পৃথিবীর মাথা

এ কোন ফ্যাকড়া না
এ-ই আমাদের মনে রাখতে হবে
এক স্থিতিশীল পৃথিবীর জন্য
এ-ই আমাদের করণীয়



পেঁচার জীবনবিত্তান্ত

ঘাসের নিচের সেই বিষাক্ত সাপকে ভালবাসি
                     -- শামসুর রাহমান

পেঁচারা কেউ ভাই কেউ বোন
জৈবব্যাবসায় প্রবঞ্চনায় স্বস্তিকর গুহা হতে তারা চ্যূত
স্ফিংসের মাথায় চাঁদ
কীভাবে ঐ অবিবেচক সিঁড়ি সময়ের কাঁধ খামচে ধরে

চোখের সামনে খসে পড়লো রাতের জানলা
তার নীল ডানায় শক্ত চোয়ালের দাগ
এমন কেন হয়
সবুজ কৃষিভূমিতে কার হৃৎপিন্ডের নড়াচড়ায় সহিংস দুর্গের প্রকৃতি ভেসে ওঠে

রাজারা এসেছে কত কত রাজা
তাদের কেউই আমাদের ভাষা ঠিকমতো বোঝেনি
অগণিত যুদ্ধ আর করোটিতে শনশন বাতাস
মা ব্যাঙ্গমা পাতার আড়ালে পুথি পড়ছে

চাষীদের কাছ থেকে মুখ ভ্যাংচানি খেয়েও ঈশ্বর উদার
সেদিন আর আজ একই ঘৃণা
গোলকধাঁধায় হারিয়ে ফেলে তার বুদবুদ
ছোট ছোট বেনামী ভ্রমণে স্মৃতিস্তম্ভগুলোয় নড়বড়ে অবস্থা

নদী ফণা তুলে রেখেছে চারপাশের বহুস্তর জীবনে
পাহাড়ী বায়ু ঝিঁঝিপোকায় আসক্ত
এখন জানা যাবে
পেঁচাদের ভিতর কে কে পেঁচা








একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন