দোঁহা

সৌমিত্র উপাধ্যায়ের কবিতা

 

 

সদাচারী  

আনমনা হলেও স্বভাব সদাচারী  
পাখির পক্ষাঘাত, অঘ্রানের হিমানী
স্পর্শসুখের মোহে নিঃসঙ্গ দুপুরে 
আলোর গতিতে ছোটে পলাশে টগরে      
উজ্জ্বল দেহমন কীটের আক্রমণ    
সফল হয়নি কাদামাটি ঘোলাজল  
উদ্যানে যখন ঘন হয়েছে আলাপ 
সকরুণ হয়েছে আভেরি, আশাবরি 

মুহূর্তে ঝরেছে রস, মায়ার বাঁধন
একদা অন্তরিন একঝাঁক সারস   
স্বচ্ছ সাঁতারে মুক্ত প্রাণের প্রচারক     
স্থানকাল ভুলে বর্ণময় টলটলে   

জলে, ঘন হয়ে মেঘ জড়ায় আঙুলে   
আর পাখনা তোলে রেশমবিশারদ...



তুলোর রসদ

থমকে সময় তবু বিস্ময়, আজও   
চর্যার গান বাঁধে মুখর কবিয়াল
ছোট ছোট রাগ, জ্যোৎস্নার পুরোভাগে 
ধানকাটা মেঠোরাগে শুনেছি ত্রিতাল 

ভেসেছি ভেলকে, নিয়ে তুলোর রসদ  
সাথে দৃঢ়চেতা ঢেউ লোহিতসাগরে
মাথার উপরে ছিল কণামাত্র চাঁদ 
নক্ষত্রও নিভেছে প্রকাশের অভাবে                 
শীতল রাতের প্রাণ শোকের সমান  
কুয়াশা ঢেকেছে ঘন মায়াবী চাদরে
নকশা হারিয়ে দিকভ্রান্ত, চলেছি অন্ধ  
কোথায় কোন লুপ্তপ্রায় মহাসাগরে 

খুঁজেছি প্রণালী সফল সম্ভাবনার 
কেটেছে প্রহর পল একাকী দাঁড়িয়ে.. 


আমাদের কথা

আগুনে পুড়েছে পলক  
মাংস খন্ড ঝুলে পড়ছে দেহ জুড়ে   
অনুমান, 
অপঘাতের কালি লেগেছে শরীরে 

বোবা খ্যাপা আমাদের কথা 
কে আর ভাবে সেভাবে
যখন মুখ থেকে ঝরে লালা 
রোগশয্যায় সূঁচ দিয়ে জল ভরে দেয়
শিরার ভিতরে 

কতটা রক্ত ছিল দেহে   
সাড়া পড়ে গিয়েছিল যখন 
কালশিটে পড়েছিল বুকে   
বিস্ময়ে দেখেছে লোক 
সখেদে জ্বলে যাওয়া কিছু আর্তকে...



মতিগতি

কটুগন্ধে ঠাসা মন্দ আলোয় মহাভ্রম
উর্ধ্বাকাশে বিকেলের রোদ 
সমবেত বৃষ্টির প্রলেপ  
ভ্রান্ত হাওয়ায় নিভে যায় ঝরনা প্রদীপ 

অবুঝ পাহাড় তার মতিগতি 
কেন মাঝে মাঝে দোলে
কেন অতিমাত্রায় তাৎক্ষণিক 

ঘন ঘন মত বদলায় 
উপরে ওঠে নিচে নামে 
চা এর বাগানে খেলা করে 

সাবধান বাণী শোনা যায়
উচ্চতা কমাও নয়তো জাহান্নমে যাও...








একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন