দোঁহা

অমিত চক্রবর্তীর কবিতা

 


 একই ব্যথার প্রতিফলন

একটা আস্ত জীবন সে কাটিয়ে দেয়

কোনোরকম অনুতাপে না ভুগে। একবারও পেছনে তাকানো নেই,

থেমে থেমে উদ্বিগ্নভাব বা অনুশোচনা, একবিন্দু নেই

শরীরে। প্ররোচনা কিন্তু কম ছিল না আমাদের,

অন্য অনেক মেয়েকে দেখেছি ডুবে যেতে, তলিয়ে,

সাঁতার জানলেও পুরো অসহায়।

                     অন্তরিন আয়নার মত এক সূর্যমুখী

বেয়াড়া ঘোরে সে থাকে, আমার একবার তাকে

জাগাবার শখ হয়েছিল। আর সেই মুহূর্তেই

সে কাছে এসে দাঁড়ায়, আর আমি বুঝতে পারি

নরম আলো কাকে বলে,

ডুবে গেছে অথচ যায়নি সূর্য, গোধূলির পাতাজুড়ে

বেদনা গুমরে উঠেছে।

 

এ জিনিস ভেঙে ফেলতে নেই, মুছে দিতে বা

সাড়া জাগাতেও নেই। অপরিকল্পনা থেকেই

শেষ তরঙ্গটা আসবে, শেষ বোঝার মুগ্ধতা। বুঝে ফেলা

আর মানসিক ভাবে দৃঢ় হওয়া, একই ব্যথার

প্রতিফলন বলে মনে হয়।    



 ড্রাম বাজিয়ে খরগোস কি খেলনার ভাল্লুক


 

কি যেন সেই কথাটা, সে বোধহয় একটা পুরোনো গান,

ভাঙাতরীর অথবা এত মেঘ এত আলো, সবই গাঁথা আছে

কোঠায়, বুড়ো লোকের দালানে, অথবা ইউটিউব চ্যানেলে।

বসে আছে নিঃসঙ্গ সে, একা, বন্দনার অপেক্ষায়।

স্মৃতি সঞ্চয় একটা, গ্রামার বইয়ের ফুটনোট, কিন্তু আমি দেখেছি

তারও একটা আলাদা আকর্ষণ আছে। অনেকটা বিশ্বাসের মত।

তুমি যদিও লজিক–অন্ত প্রাণ, সৌখিন ওষুধ তোমায়

নাড়া দেয় না, কিন্তু রুক্ষ ভাবটা যদি কমাও একটু,

বর্ম নামিয়ে রাখো দু’ এক মিনিট, দেখবে স্মৃতির আসল টান,

চোখে অজান্তেই জল চলে আসবে। মনে পড়বে

আম-জাম বাগানে দস্যুবৃত্তি, পুরোনো প্রেমিকার সাথে খুনসুটি,

অথবা কাজ থেকে ফিরে অলস বিকেলের চা।

এই ধরণের বিরাম থেকেই রিচার্জ হয় ব্যাটারির,

ড্রাম বাজিয়ে খরগোস কি খেলনার ভাল্লুক

আবার ঘুরতে থাকে মেঝেময়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন