অন্য পদাবলি
আহত বিকেল থেকে চোখ সরিয়ে নিল
যে কিশোরী, তার পড়ার টেবিলে
গীতবিতান নেই, জীবনানন্দ দাশ নেই
আছে প্রেমিকের শেষ চিঠি;
যেখানে সে সম্পর্কচ্ছেদের কথা লিখেছে
লিখেছে ব্রেকআপ পদাবলি।
তা পড়তে গিয়ে কিশোরীর চোখ ভরে যায় জলে।
আর ঠিক তখন সে বৈষ্ণব পদাবলি বের করে
রাধার অনন্ত বিরহ পড়ে, পড়ে প্রেমিক কৃষ্ণের
স্বার্থপর চলে যাওয়া…
পরদিন সকালে যখন চোখ মেলল মেয়ে
চোখে বিষাদের জল নেই, আগুন দিয়ে সে
অন্য পদাবলি লিখে রাখল চোখের পাতায়...
স্মৃতি দিনলিপি লেখে
কত কথা বলে দিতে পারি, পারি না অনেক
সঞ্চিত সম্বল নিয়ে ঘাস আর খড়ের জঙ্গলে
কতটা লুকোতে পারি দেখি, না হলে সবটাই
ব্যর্থ আয়োজনে কেঁপে ওঠে ত্রিধারা সম্বল
আগন্তুক হাওয়ার ঝাপটে এঁকে রাখে মুখ
বিষাদ ও বালিয়াড়ি পরস্পর বিন্যস্ত স্তবকে
গভীর দুঃখের কথা পড়ে নিতে পারে সহসা
এবং না-বলা কথাগুলো উদ্যত ফণায় জাগে;
কত কথা বলে দিতে পারি, তবু পারি না কেন?
রুদ্ধবাক আমি স্তব্ধ রই নিরন্তর প্রচেষ্টার পর
গুহামুখ বেরিয়ে এসেছে আলোর ঝর্নার দিকে
পাতাখসা সময় গোপন কান্নার ফোঁটা রাখে
অশ্বারোহী চলে যায় গুপ্তপথ ধরে নিরুদ্দেশে
আর সেই আগন্তুক হাওয়া, স্মৃতি দিনলিপি লেখে।