![]() |
ছবি সৌজন্য. ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও ইন্ডিয়া টুডে |
দেবাশিস ভট্টাচার্য
গত কয়েকদিন ধরে চলা অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে সারাদেশ জুড়ে যা যা ঘটনা ঘটে চলেছে তা দেখে একটাই কথা বলা যায় আমাদের গর্বের সেনাবাহিনীতেও ভেদাভেদের রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটলো। "মিলিটারি রিক্রুটমেন্ট পদ্ধতি" যা দেশের সুরক্ষা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নের সাথে জড়িয়ে আছে সেখানে এই ধরনের অভিনব প্রকল্প কিভাবে ভাবনায় এলো তা দেখে বিস্মিত হতে হয়। বেশি দিন আগে নয়, আমরা দেখেছি দিল্লিতে ইন্ডিয়া গেটে দেশের স্বাধীনতার আগে যে সকল সৈন্য শহীদ হয়েছেন ও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে শহীদ সৈন্যদের আত্ম বলিদান নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান। সেনাবাহিনীতে নিয়োগ নিয়েও আরেকবার ভেদাভেদের রাজনীতিকে সামনে এনে দিল। একইদিনে দশ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি ও সেনাবাহিনীর তিন বিভাগে অগ্নিবীরদের নিয়োগ নিয়ে ঘোষণা দেশের তরুণ সমাজকে হতভম্ব করে দিল, তাঁদের বহু কাঙ্খিত স্বপ্নের ভরাডুবির আশঙ্কায় দেশজুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হলো, তাৎক্ষণিক ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখলাম দেশের প্রচুর সম্পত্তি নষ্ট করার মাধ্যমে।
যাঁরা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চায় এবং সাধারণ মানুষের সামনে অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে বহু প্রশ্ন তৈরি হল। সঠিক জবাব কারোরই জানা নেই। পক্ষে-বিপক্ষে অজস্র মতামত, বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা, রিপোর্টিং আমরা দেখলাম। অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম তিন সার্ভিসের বিভিন্ন র্যাঙ্কের উচ্চপদাধিকারীরা এই প্রকল্পের সমর্থনে মিডিয়ার সামনে এসে যে বক্তব্য রাখলেন আর ওই একইভাবে তিন বিভাগের একই র্যাঙ্কের যাঁরা অবসরপ্রাপ্ত পদাধিকারীরা তাঁরা সম্পূর্ণরূপে এই প্রকল্পের বিরোধিতা করলেন। যাঁরা সেনাবাহিনীতে চাকুরিরত তাঁরা যেমন এই প্রকল্পের কিভাবে আগামীদিনের আমাদের দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করবে, সেনাবাহিনীতে তারুণ্যের প্রভাবে আধুনিকিকরণ হবে, অগ্নিবীররা এই প্রকল্প থেকে কি কি সুবিধা পাবে তার ফিরিস্তি দিয়েছেন ঠিক তার উল্টো দিকে একাধিক বিষয় নিয়ে অবসরপ্রাপ্তরা বিভিন্ন প্রশ্ন তুলেছেন। স্বভাবতই এক বৈপরীত্য অবস্থান আমাদের সকলের চোখে পড়ল।
অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে অনেক প্রশ্ন তোলা যায় এবং আমার মনে হয় তা সঙ্গত কারণেই আছে। যেহেতু এই প্রকল্প দেশের প্রতিরক্ষা সম্বন্ধীয়। তিন সার্ভিসের যেটা প্রথম অগ্রাধিকার তা হলো "অপারেশনাল রেডিনেশ"। একজন প্রাক্তন বায়ুসেনা কর্মী হিসেবে আমার প্রশ্ন এই রেডিনেসের সাথে আপোস করা হবে না তো! মাত্র চার বছর পর যে ৭৫% অগ্নিবীররা সেনাবাহিনী ছেড়ে চলে আসবেন, বলা ভালো তাদের বাধ্য করানো হবে, তাঁদের জীবনে পরবর্তী সময়ে কি হবে, এই নিয়ে যে বিশেষ চর্চা চলছে, যা সংগত বলেই মনে হয় কিন্তু যে বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না তা হল এই অগ্নিবীরদের ছয় মাসের প্রশিক্ষণের পর কিভাবে কাজে লাগানো হবে। বলা হচ্ছে রকেট সায়েন্স জানার প্রয়োজন নেই, আমি বলছি আছে। আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবহারে তার প্রয়োজন আছে। এতদিন যেভাবে তিন বাহিনীতে নিয়োগ করা হতো তাঁদের মূলত দুটো গ্রুপে ভাগ করা হত। এক, নন টেকনিক্যাল ট্রেড, দুই টেকনিক্যাল ট্রেড। বেসিক ট্রেনিং ছাড়া সব ট্রেডের প্রশিক্ষণের বিষয়গুলো সম্পূর্ণ আলাদা, প্রশিক্ষণের জায়গা গুলোও সব আলাদা। যাঁরা এই প্রকল্পে নন টেকনিক্যাল ট্রেডে নিযুক্ত হবেন তাঁদের ছ-মাসের বেসিক ট্রেনিং দিয়ে অন্তর্ভুক্তি হয়তো সম্ভব হবে কিন্তু যাঁরা টেকনিক্যাল ট্রেডে নিযুক্ত হবেন তাঁদের ছমাসের বেসিক ট্রেনিং দিয়ে বিমান বাহিনীর কাজে অন্তর্ভুক্তি কার্যত অসম্ভব, যতই পরে অন জব ট্রেনিং দেওয়া হোক না কেন বা আজকের যুবসমাজ জন্মের পর থেকে যতই কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোন দেখে অভ্যস্ত হোক বা টেকনিক্যালি দক্ষ হোক।
তিন সেনাবাহিনীতে বলা হচ্ছে আধুনিকিকরণের কাজ চলছে, উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন মেশিনের প্রশিক্ষণে কিভাবে অগ্নিবীররা কতটা সময় পাবে বা তাঁরা দক্ষতা অর্জন করতে পারবে তা একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে। এই আধুনিকীকরণের সাথে মানিয়ে নিয়ে চলা এত কম সময়ের মধ্যে সম্ভব কিনা সেই প্রশ্নের উত্তর সেনাবাহিনীর পদাধিকারীরা দিতে পারছেন কই? এখনো পর্যন্ত এয়ারফোর্সের প্রশিক্ষণের যে সিস্টেম চালু আছে তাহল ছয় মাস বেসিক ট্রেনিং তারপর দুই পর্যায় এক বছর এক বছর করে দু'বছরের নির্দিষ্ট ট্রেডের ট্রেনিং তারপর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিমান বাহিনীর সাথে যুক্ত করানো। আমরা সবাই জানি আমাদের দেশের বিমান বাহিনীতে বিভিন্ন রকমের বিমান আছে হেলিকপ্টার থেকে শুরু করে ট্রান্সপোর্ট ও অনেক রকমের যুদ্ধজাহাজ, নাম করে বলতে গেলে পুরনো মিগ যুদ্ধ জাহাজের বিভিন্ন ভেরিয়েন্ট, জাগুয়ার, মিরাজ, সাম্প্রতিক যুক্ত হয়েছে তেজষ ও রাফাল। এছাড়াও আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি সম্পন্ন রাডার, মিসাইল, যোগাযোগব্যবস্থা, জ্যামার ইত্যাদি। যে যেমন যুদ্ধ জাহাজের বা মেশিনের সাথে যুক্ত হবেন তাঁর জন্য আলাদা আলাদা যুদ্ধ জাহাজের কারিগরীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়, যার নাম "মেনটেনেন্স কনভার্শন ফ্লাইট"। আনুমানিক ছয় মাস সময় লাগে এই প্রশিক্ষণের। তাহলে দেখা যাচ্ছে একজন টেকনিক্যাল ট্রেডের বায়ু সৈনিকের মোটামুটি তিন বছর লেগে যায় নির্দিষ্ট মেশিনে কাজ করার যোগ্যতা অর্জনে। তারপর তাঁর অন জব প্রশিক্ষণ শুরু হয় যাতে প্রায় আরো এক বছর লেগে যায় অর্থাৎ যেখানে কমবেশি চার বছর লেগে যাচ্ছে একজনের যোগ্যতা অর্জনে সেখানে একজন অগ্নিবীরকে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ দিয়ে, চার বছর বাদে সেনাবাহিনী থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। অর্থাৎ যোগ্যতা অর্জনের আগেই তাকে ছেড়ে দিতে হবে। যোগ্যতা অর্জন মানেই দক্ষতা অর্জন নয়, যা ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সুদক্ষ কারিগর হিসেবে একজনকে গড়ে তোলে যে কোনো সময় যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রাখার জন্য। সেই সুযোগ এই অগ্নিবীররা পাবে না এতে যা হবে আবার সেই ভেদাভেদের কাহিনী। সেনাবাহিনীতে একেবারেই যা অনাকাঙ্ক্ষিত। যেখানে একটা টীম হিসেবে কাজ করা হয় তা হবেনা শুরু হবে অবিশ্বাস ও অনির্ভরতা। দুটো আলাদা শ্রেণীতে পরিণত হবে, কে কম কে বেশি দক্ষতার প্রশ্ন এসে যাবে। মাত্র ছয় মাসের প্রশিক্ষণে যে এই ধরনের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করার ছাড়পত্র পাওয়া এককথায় অসম্ভব তা বলে দেওয়ার অপেক্ষা থাকে না। মানব শক্তি বন্টন ও ব্যবহারের ব্যাপক অসুবিধা হবে। অগ্নিবীরদের মধ্যে এক ধরনের অসম অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা শুরু হবে। সেনাবাহিনীর যে মূলকথা অনুশাসন ও কার্যকারিতা দুটোই নষ্ট হবে। অগ্নিবীররা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে, দায়িত্ব পালনে মনের জোড়ের অভাব দেখা দেবে। আগে ছিল ট্রেন্ড সৈনিকদের সার্ভিসে রেখে দেওয়ার চেষ্টা, বিশেষ করে যাঁরা বিদেশ থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হন, বিভিন্ন মেশিনের স্পেশালাইজড ট্রেনিং প্রাপ্ত হন তাঁদের টার্মস অব কন্ট্রাক্ট বাড়িয়ে দেওয়া হত কেননা এত খরচ করে প্রশিক্ষণ দিয়ে যদি তাকে কাজেই না লাগানো যায় তাহলে সেনাবাহিনীর কি লাভ! আমাদের দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের বিমান ও আধুনিক টেকনোলজির জন্য এখনও বাইরের দেশের ওপর নির্ভরশীল।
যে কোন অর্গানাইজেশনের উৎপাদনশীলতা নির্ভর করে দক্ষ মানবসম্পদ ও উচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহারের সামঞ্জস্যের ওপর। অর্থাৎ কি দেওয়া হচ্ছে আর কি পাওয়া যাচ্ছে তার অনুপাত।
তাই প্রশ্ন ছয় মাসের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অগ্নিবীরদের নিয়ে অপারেশনাল রেডিনেশ রাখা সম্ভব হবে তো? যেখানে আমাদের দেশে দুই সীমান্তে পাকিস্তান ও চীন প্রতিনিয়ত ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে! সীমান্তে চীন-পাকিস্তানের অনুপ্রবেশের চেষ্টা, গোলমালের চেষ্টা প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে এইরকম একটা প্রকল্পের অনুমোদন ও তার সফলতা আশা করা যায় কি? আমরা যখন দেশের বিভিন্ন শহরে যাই একটা বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য যুবক-যুবতীরা আর্মি,এয়ারফোর্স, নেভী তে যোগ দিন, এরপর আর মনে হয় না এই বিজ্ঞাপন আর দেখা যাবে। এখন বলা হচ্ছে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র নয় কিন্তু এটা ভুলে গেলে চলবে না প্রায় ৭৫ বছর ধরে চলে আসা সেনাবাহিনীতে নিয়োগের যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, কর্মসংস্থানের যা মানচিত্র তা হঠাৎ করে এইভাবে বদল করে দেওয়ার চেষ্টা কতটা ফলপ্রসূ হবে ভেবে দেখতে হবে। দেশপ্রেমের আবেগ দিয়ে বলা হচ্ছে এই সেনা প্রকল্পের বিরোধিতা অযৌক্তিক, কিন্ত মনে রাখতে হবে সেনারাও রক্তমাংসের মানুষ তাঁদেরও পরিবার আছে মা-বাবা ভাই-বোন আছে। জীবনে স্বপ্ন আছে। আজ দেশের শিক্ষিত যুবক যুবতীদের মধ্যে বেকার সংখ্যা গত ৪৫ বছরের মধ্যে যে রেকর্ড বৃদ্ধি হয়েছে সেখানে দাঁড়িয়ে হয়তো আজকের যুব সমাজ কোন উপায় না দেখে যা পাচ্ছে তাতেই আকৃষ্ট হবে কারণ তাদের কাছে আর কোন অপশন খোলা নেই, আর সেখানেই অগ্নিবীরদের অগ্নিপথে পথভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।
ইতিমধ্যেই এয়ারফোর্সে নিয়োগের নোটিফিকেশান জারি হয়েছে, বিশাল সংখ্যক যুবকেরা আবেদন করছে। এ দেখে কারোরই বুঝতে অসুবিধা হয় না আজকে দেশের বেকারত্বের করুণ চিত্রটা। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকেই বলি দেশপ্রেমের আবেগ জাতীয়তাবাদের স্লোগান মোটেই কাজ করছে না। আজ বিভিন্ন শিল্পপতিরা বিবৃতি দিচ্ছেন তাঁদের সংস্থায় এই ৭৫% অগ্নিবীরদের নিয়োগের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এনারা এতদিন কোথায় ছিলেন যখন প্রতিবছর প্রায় ৫০ হাজারের ওপর সৈনিক সেনাবাহিনী থেকে বেরিয়ে আসছেন, তাঁদের কতজনকে এই সংস্থায় পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে বা নিযুক্ত করা হয়েছে! পরিসংখ্যান বলছে ex-servicemen কোটার মাত্র এক থেকে দুই শতাংশ অবসরপ্রাপ্ত সেনা নিয়োগ হয়। যে সমস্ত অবসরপ্রাপ্ত সেনা আগেই অবসর নিয়েছেন তাদের জীবনযাপনের সাথে এই অগ্নিবীর যাঁদের সেনাবাহিনী থেকে চলে আসতে হবে তাঁদের মধ্যে আবার এক ভেদাভেদের সমস্যা তৈরি হবে, এক নতুন সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি হবে। যেভাবে অগ্নিপথ প্রকল্পের গুণকীর্তনের জন্য তিন বাহিনীর প্রধানসহ উচ্চপদের আধিকারিকদের ময়দানে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে তা অতীতে ডিফেন্সের কোন প্রকল্পের জন্য এভাবে দেখা যায়নি। আবার একইভাবে অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিকদের অনেকেই যেভাবে এই প্রকল্পকে 'অপ্রয়োজনীয়' অলাভজনক বলে মনে করেছেন তাও অভূতপূর্ব। অগ্নিপথ প্রকল্প যাঁরা রচনা করেছেন, এই নিযুক্তির ধরন যাঁদের মস্তিষ্কপ্রসূত, যাঁরা বলছেন দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ, তারুণ্যে ভরপুর করার জন্য আবশ্যিক, কিন্ত মনে হয় অনেক বেশিই অর্থনৈতিক কারণে সেনাবাহিনীর বিশালতাকে এভাবে ছেঁটে ফেলার চেষ্টা, তাঁরা দেশের সুরক্ষা সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ভবিষ্যতের জন্য এক বিশাল ঝুঁকি নিয়ে নিচ্ছেন না তো?
তাই রাজনীতির বাইরে এসে খোলামনে দেশের স্বার্থে, এই বিশাল বেকার যুবসমাজের স্বার্থে গভীরভাবে আরেকবার ভেবে দেখতে হবে। আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি তিক্ত। একজন প্রাক্তন বায়ুসেনার সৈনিক হিসেবে এই অনুরোধ আমি করতেই পারি। ভবিষ্যতে এই প্রকল্পের অর্থনৈতিক ও সামাজিকীকরনের প্রভাব সুদূরপ্রসারি হবে তাতে কোন দ্বিমত নেই।