দোঁহা

প্রচ্ছন্ন -অপ্রচ্ছন্নের লেখা

 


 সব্যসাচী মজুমদার

আসলে শুরুটা বোধহয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। বাঁশি কিংবা হঠাৎ দেখা সেই চিহ্নই তো বহন করে। কিংবা এন্টিপোয়েট্রির প্রাক এলিমেন্ট কী অচিন্ত্যকুমারে ছিল না! জীবনানন্দও চকিতে চকিতে সচেতন ঘোষণা করছেন নাকী, "কলকাতা একদিন কল্লোলীনি তিলোত্তমা হবে" 'কিংবা' বরং নিজেই লেখো নাকো একটি কবিতা'য়! বাঙালি আসলে চর্যাপদের আমল থেকেই লিখিতভাবে ভাষাসন্ত্রাস ও বিন্যাসবিদ্রোহের ধারা বয়ে আনছে।

ফোর্টউইলিয়ামোত্তর যুগে এই বিদ্রোহের কাজটা তো প্রথমেই সেরে রেখে গেলেন ইশ্বর গুপ্ত। খুঁজলে এরকম অনেক দৃষ্টান্ত পাওয়া গেলেও বুদ্ধদেব বসুর তৈরি করা কবিতাধারণার বিপ্রতীপে দাঁড়িয়ে তারাপদ রায়ই সম্ভবতঃ সবুজ পাসপোর্ট দেখালেন প্রথম। সোচ্চার, প্রত্যক্ষভাবে কাহিনিকে কবিতায় নিয়ে এসে তার শরীরে কোনও পাপড়ি রাখতে চাইল না এই ধারা।পরিচিত পাঠ অভ্যাসে একটা জোরাল ধাক্কা বৈকি। যখন কোন‌ও ঘটনা পরম্পরা মানুষকে প্রবল উত্তেজিত করে এই ক্যাওয়াজ একটা প্রতিনির্মাণের ক্ষেত্র তৈরি করে বৈকি। নজরুল হেন উদাহরণ আর কোথায়!

 


এই ভূমিকার পরে যদি আপনি রাজীব মৌলিকের কবিতা পড়তে বসেন,আপনি নিশ্চয়ই গৌরচন্দ্রিকার পারম্পর্য বুঝতে পারবেন। না হলে আমি বুঝবো তার প্রসঙ্গহীনতা,

"কবিকে চোখ রাঙানি দেখিও না
কবিকে ধারালো ছুরি দেখিও না
তুমি ডাকাত হতে পারো
অন্যের রক্ত ক্ষরণ করতে পারো
নিজের রক্ত কালো করার সাহস তোমার নেই..."
(কবিকে)

রাজীবের প্রথম কবিতার বই 'ঘুণে ধরা শরীর' পড়তে গিয়ে দেখি রাজীব প্রত্যক্ষ স্বরের মাঝে মাঝেই তৈরি করেছেন জাদুর অবকাশ। কোনও কোনও পংক্তি তাই হয়ে ওঠে অনেকটা শ্লোকের মতো। নিশ্চয়াত্মক ভঙ্গি এই প্রবণতাকে দিয়েছে তীব্র ভেদ শক্তি,

"কমলাপুর রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে ভুলে গিয়েছিলাম
আমার একটি পরিবার আছে
পরিবারে একজন দুস্হ মা আছে
তার ওষুধ যোগানের জন্য চারটে টিউশনি আছে
একজন হাড়গোড় ভাঙা বৃদ্ধ আছে
তার বিড়ির আগুনটাও আমার টিউশনিতে জ্বলে"
(কমলাপুর রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে)

আপনি বলতেই পারেন এমত দারিদ্র্যছবি বাংলা কবিতার ইতিউতি সহজ প্রাপ্য। কিন্তু রাজীবের কাছে প্রধান হয়ে উঠেছে ভুলে যাওয়াটা। এমনকি স্বপ্নকেও ভুলে গিয়ে এ অবকাশে কবি একটা চিহ্নবিহীন মানুষ হয়ে উঠতে চাইলেন। যার কাছে বাস্তব আর প্রতিবাস্তব মিশে গিয়ে তৈরি করে একটি অর্থনৈতিক মনোলগ। কখনও কখনও দ্বিরালাপ। যার ভেতরে কিন্তু রোমান্টিক অবসাদ কেবলই উন্মুখর,

"তিনমাস হল আমার কোনও খোঁজ নেই
একটা বিষধর খোলসের ভেতর ঢুকে আছি"
(খোলস)

রাজীব মৌলিক স্পষ্ট আর অপ্রত্যক্ষের মাঝামাঝি রেখেছেন তাঁর প্রান্তিক অবস্হানকে। আর সেখান থেকেই ক্রমাগত করছেন সেল্ফ কন্ট্রাডিকশন এবং তীব্র, আত্মন্মোচন

"এখন মৃত মানুষের গল্প শুনতে মন চাচ্ছে
মৃত মানুষের হাঁটাচলা দেখতে মন চাচ্ছে
মৃত মানুষের মৃত্যু দেখতে মন চাচ্ছে"
(টলেমী)

লক্ষ্য করে দেখুন 'মৃত মানুষের মৃত্যু'র মতো দ্বন্দ্বকে অনায়াসে তুলে দিলেন আর্বান ভাষার হাতে। উন্মোচন ঘটল কবির ধারনার প্রোপাগান্ডা। রাজীব ব্যবহার করে গেলেন 'চাচ্ছে' উঁহু চাইছি নয় 'চাচ্ছে'এবং উপুর্যপরী ব্যবহার করে দেখিয়ে দিলেন তাঁর অবস্থান এবং বিশ্বাসকে। যা সময়ের দ্বিবিধ কৌণিকতাকে স্বীকার করে নেয়। অন্ততঃ রিয়েলিটি প্রধান হয়ে ওঠে রাজীবের এই সমস্ত কবিতায়,

"শেকড় ছাড়া দুটি গাছ
একে অপরকে আঁকড়ে
বেড়ে উঠছে

তুমি একে সম্পর্ক বলতে পার

আমার চোখে এটা নেহাৎই
লতাগুল্ম
যাদের নিজেদের মেরুদণ্ডের প্রতি-

বিশ্বাসটুকু...!"
(লতাগুল্ম)

 


ঠিক এর পরেই পাঠক, আপনার জন্য সাজিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে আরেক তরুণের একটি কবিতার খানিকটা,

"গৌড় নাচের এ বৃষ্টিবেলা
লিরিক পড়ে থাকে শরীরি আবর্তে, তখনও
অশোকের ঘোড়া বনবিথীর নাগালের বাহিরে,
খুরের শব্দে হারিয়ে যাচ্ছে
মাগধী ভাষার উপদেশ নামা"।


আমরা বসে থাকি বিকালের ভিতরে—
বিড়ালের আলস্য ফুরিয়ে যাওয়ার আগে,
একদিন উঠে যাব, যে পথে—
ডাইনির আস্তানা থেকে পালিয়ে গেছে
হ্যান্সল ও গ্রেটেল"।

(দীর্ঘসূত্র)
 বাংলাদেশের রংপুরের মানুষ মারুফা মিতা একই অর্থনৈতিক ও প্রায় এক‌ ঐতিহ্য বৃত্তেই নির্জিত আরেক দৃশ্য তুলে আনছেন ধীর কুয়াশা ছড়িয়ে পড়ার গতিতে। আপনি নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছেন এই অংশে কবি একটার পর একটা সময়কে ডিঙিয়ে ক্রমশঃ পৌঁছে যাচ্ছেন নিজস্ব নির্মাণের স্ফিয়ারের দিকে।অনবরত চলেছে একটা ধীর প্রতিক্রিয়া। এবং অবিরল জাদু ঘটে চলেছে শৈলীর আনাচকানাচে। মারুফার আরেকটি কবিতায় দেখি,

"শীত এলে...
দিনগুলি মাঠের মধ্যে, খড়ের গাদায় ছোটাছুটি বাচ্চা হয়ে যায়
যেনবা মাগরিবের ওয়াক্তে বাড়ি ফেরে
আটকে থাকে নয়ের ঘরের নামতাপাঠে।

উত্তরে হাওয়া দেয় খুব
সানসেডের তলে তেরছা রোদের কারুকাজে—
সাইকাড্যালিক ঘোর কাঁপে তিরতির।
বারান্দায় জবাই করা হাঁসের রক্ত দ্রত জমে ওঠে,
এত নির্ভেজাল সব কিছু
জিড়িয়ে নেয়া বিড়ালের চোখে—
মাংস সংলগ্ন কাটাকুটিগুলো পড়ে থাকে শুধু।
এমন করে শীত আসে—
তোমার মোজার ভিতর ঢুকে পড়ে
বাতিল পাতাদের এক হলুদ বনবাস।"

যৌনতার উন্মুখর আত্মপীড়া ও প্রতিরিরংসার ভেতর বিষাদ এক দিগন্ত অবধি অবসন্নতা তৈরি করেন কবি। যেন একটা ধূসরে অনিচ্ছুক ঢুকে যাওয়ার আগে মারুফা দেখে নিচ্ছেন তাঁর নির্মাণের উপাদান সূত্র। বুঝে নিচ্ছেন তাঁর অবস্থান বিন্দুর কৃষ্টি। তারপর স্বতন্ত্র আরেকটি লেখায় জানাচ্ছেন,

"কেউ কেউ কারাম নাচ থেকে ফিরে গেছে
মুঠো মুঠো বিকেলের বারান্দায়,
বলদিপুকুর থেকে আরও উত্তরে
যেখানে ঘোলা দৃষ্টির ভিতর দৃশ্যবদলের মাঠ শুয়ে থাকে।
 
যাত্রাপথে ফেলে রাখা কুরুশের তৃতীয় ঘর
অতিদূর তীব্র ঘাঘট ব্রিজ,
সবুজ ছড়িয়ে পড়ে
আমরা নেমে যাই। নেমে গেলেই—
বীজপত্রে ধানের ম্যায়ফিল ছেড়ে
সমস্ত ক্ষেত বস্তুগত হয়ে উঠে।
খানিক দূরে আইলের ধারে
পুরোনো গর্তে সন্তানসম্ভবা ইঁদুরের চলাচল,
রাত্রিরে... আরও গভীরে
নিশাচর বন্দুক জাগবে না আর।
এমন শব্দহীনতা প্রাচীন মন্তাজের ধারণা দেয়,
যেন লিখেনি কেউ—
সাদা পাতা জুড়ে শুধু নিঃস্তব্ধতার খচখচ।"


আপনি সবিস্ময়ে লক্ষ্য করুন, প্রতাপ হালদার কিংবা অভিমান‍্য পাল (পূর্বের পর্ব দ্রষ্টব্য) যেভাবে রোদ দেখেছেন লাল কচার গায়ে, ঠিক সেই ভাবেই প্রায় হাজার কিলোমিটার দূরত্বে মারুফা দেখছেন, 'পুরনো গর্তে সন্তান সম্ভবা ইঁদুরের চলাচল।'
আরও লক্ষ্য করুন নদীয়ার রাজীব সাপের খোলসে ঢুকে একটা হিম বিষাদ যাপনের ব্যঞ্জনা যখন আনছেন, মারুফা লিখছেন, "এমন করে শীতকাল আসে/
তোমার মোজার ভেতর ঢুকে পড়ে।"
ভাস্করের শীতকালের ভেতর অতিরিক্ত বিষ কিংবা শ্লেষ মিশে স্বতন্ত্র করে দেয় এই কবিদের।
আবার মারুফা নিজেকে আলাদা করে নিচ্ছেন শব্দ ব্যবহারের ভিন্ন ঐতিহ্য আর অবস্হানের প্রভাবে। যেমন মাগরিব, ওয়াক্ত, কারাম নাচ, কুরুশ, বলদি পুকুর, আতব। একটা ভিন্ন প্রতিবেশ থেকে মারুফা নিয়ে আসছেন আরেকটি ভাষা প্রবণতাকে।

এবং এই পর্যন্ত লিখতে লিখতে সবিস্ময়ে ভাবছি এবং আপনিও এখনও পর্যন্ত অন্ততঃ রাজীবের কবিতাতে তো নয়ই এমনকি সমিধ বা অন্তরের লেখাতেও যৌন সম্পর্কের ও ধারণার কথা স্পষ্ট হয়ে দেখা দেয়নি। বরং বদলে রাষ্ট্রিয় অর্থনৈতিক বঞ্চনাই গাঢ় হয়ে উঠতে চেয়েছে। অপরপক্ষে মিতা লিখছেন,

"ধামাইল নাচের আসর ভেঙে গেলে
কুয়াশায় ঘন হয়ে বসে থাকি,
আমাদের কেমন শরীর খারাপ করে।

ভোরের গামছায় ডালের বড়ি শুকানো হচ্ছে
গভীর আত্মীয়টি উঠে চলে গেছেন—
জলকর পেরিয়ে মহিষখাঁচা ব্রিজ, আরও দূরন্তে
বাকি পথ জুড়ে ক্ষয়ে যাওয়া স্যান্ডেলে গুমগুম জিকর।

চিরুনীতে লেগে আছে তার কবেকার চুল—
সাদা হবে না আর।"

(পিছুটান)

অমোঘ ছবিগুলো পরপর সাজিয়ে একটা বিবমিষা তৈরি করেন কবি। প্রতি-বিবমিষা।মৃতের পৃথিবী জুড়ে ঔদাসীন্য তৈরি হয়।স্পর্ধা বিবর্জিত হয় ঘটমান অতীত কিংবা কবির যাপিত বাস্তবে। নির্মীত ঘটমানে কবি কিছু নিবিড় জিকির তুলে দেন। তরুণের বই পাইনি। হয়তো প্রকাশিত নয়। সামাজিক মাধ্যমে পড়াই সম্বল।

স্পর্শকাতর তারুণ্যে যৌনতা বিবমিষা তৈরি হচ্ছে কী! মানে একটা পৃথক যৌন ধারণা তৈরি হচ্ছে কী...এই প্রশ্নে উতরোল থেকে পৌঁছে যেতে পারি আর এক কবি সৌরভ বর্ধনের কবিতার কাছে

 


 "মাটিতে একটু হাত রাখি, হাত দিয়ে
ছুঁয়ে দেখি বাস্তুতন্ত্রের ইতিহাস, আর্তনাদধ্বনি
লেগে আছে জ্বলনশীল ফুলে"
(বাস্তুতন্ত্রের ইতিহাস ৬)

তাঁর প্রসূতিকালীন পাঠ কাব্যে সৌরভ তাঁর যাপনকালের ব্যঞ্জনা হয়ে উঠতে চাইলেন। কিন্তু সুনিশ্চিত ভঙ্গী। স্হির জানেন তাঁর বিশ্ববিম্বখানি,

"রোদ জানে হাওয়া জানে
                   মাটি কী ভীষণ চিন্তাগ্রস্ত!"
(৬)

কিন্তু সৌরভ এই গ্রন্হে একটা মনোলগকে দীর্ঘ করলেন না। বরং ছোটো ছোটো আয়াতে ভিন্ন ভিন্ন প্যাটার্নে লিখলেন তাঁর বিবিধ সংরূপ। একটা সম্পূর্ণ মানুষ যেমন একটা গোটা দিন জুড়ে বিভিন্ন মনোভাবের আওতায় রয়, এ গ্রন্হে যেন সেই বিবিধ কোণ থেকে কথা বললেন তরুণ,

"ধীশক্তির কাছে মাথা গেড়ে আপস জানায়
বাতুল হয়ে ওঠে আলোসার বস্তু
কবি দেখতে পায় দুধ-মৃত্যু-মিথ্যা'র বস্তবাদ
সর্বহারার যুদ্ধজিগিরও"
(দ্বন্দ্বমূলক ছায়াবলোকন ১)

বিস্মিত হয়ে যাই জীবন্ত জীবাশ্ম আলোসা থেকে সর্বহারার যুদ্ধজিগির‌ পর্যন্ত প্রলম্বনে। কী বিপুল ক্ষমতায় কবি মাত্র তিন পংক্তিতেই সভ্যতার সমূহ স্বভাবের নিত্য বুঝিয়ে দিতে দিতে বারান্তরে লিখে ফেলছেন,

"শ্রেণিহীন তীরন্দাজ! অব্যর্থ রেলবাজেটের চাকায়
লেপে দিই আমাদের গুডমর্নিং বুদবুদ"
(হাড়মণি ও তঞ্চক লিপি)

আপনি ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন কবি তাঁর প্রত্যক্ষ ও স্পষ্ট সারভাইভাল মুড বুঝিয়ে দিচ্ছেন এবং লিখছেন আবার,

"বহুদিন ধরে মানুষের ভূমা-মন দেখে আসছে এরা
সাদা কালো ফুটকির মতন ল্যাংড়া অভিমান
নদীর কফিনে পেরেক ঠুকে চলেছে একমনে"
(৫)

একটা প্রত্যক্ষ প্রোপাগান্ডা যেমন সৌরভের কবিতায় লগ্ন, তেমনই একই সঙ্গে লিরিক্যাল নিজস্বতা প্রত্যেকটা পরিস্থিতিকে বিরাট পরিসরে পৌঁছে দিচ্ছে। ঐ যে আরেক চতুর্থ বিন্যাসে,

"পাহাড়ের সানুতল কেটে কোনও এক বাউণ্ডুলে ছলছাদে বসে রিভিউ লিখছে।"(১৩)

সৌরভের কবিতায় শব্দ এসেছে খুবই বিচিত্রভাবে। তথাকথিত বিজ্ঞানের শব্দ বলে যেগুলি পরিচিত, এ গ্রন্হের অবকাশে তার প্রভুত ব্যবহার দেখি-কার্সিনোজেন, ক্রমজায়মান অক্সিজেন, অ্যাপোপটোসিস, সাইটোপ্লাজম ইত্যাদি। এহেন শব্দ ব্যবহারের সমস্যা হল পিনদ্ধ না হলে আপামর পাঠকের রসক্ষরণে ঈষৎ ব্যঘাত ঘটায়। তবে এ গ্রন্হের সিংহভাগ অংশেই কবি সার্থক। ভূমা ও জীবন, তথ্য আর উন্মোচন একসঙ্গে মিথোষ্ক্রিয়া করে সৌরভের কবিতায়। না চেনা ভঙ্গিতে দৃঢ় বক্তব্য প্রকাশে আস্হা রেখে কবি বস্তুত এমন একটি যৌন পৃথিবীর চিন্তা তৈরি করেন যার ধ্রুব কিন্তু যৌথ খামারে স্বস্হ,

"শঙ্খচিল উড়ে গেলে দেখতে লাগে যেমন সুপ্রাচীন তুলসিবন
আমার ভোরের ভেতর ফুটিয়ে চলেছে বালার্ক গুঁড়োর স্বর"
(২৩)

এ আলোচনার এই অংশের ইতি টানার আগে দুটো নিবেদন আবশ্যক। তিনটি পর্বের লেখায় মোট দশ জন আলোচিত হলেন এখনও পর্যন্ত। তাঁদের মধ্যে প্রথম তিন জন প্রত্যক্ষ ছন্দ কুশলী। সিদ্ধ ছন্দে কথা বলেছেন স্পষ্ট। কিন্তু বাকি সাতজনই 'তথাকথিত 'গদ্য ছন্দে নির্ভর করলেন। আরও একটু সাহসী হয়ে বলা ভালো অনেক ক্ষেত্রে গদ্য ছন্দকেও লঙ্ঘন করে গেলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্রাবৃত্ত বা স্বরবৃত্তের ব্যবহার লক্ষ্য করলাম না। কিন্তু একটা আরবান,একটা প্রান্তিক বিশ্বই বিম্বিত তাঁদের রচনায়। এবং বিশেষ করে স্বরবৃত্ত ঘোর লৌকিক ছন্দ। এটাও কিন্তু প্রথা ভাঙার স্বভাব বলেই মনে করছি।

দ্বিতীয়তঃ কেবলমাত্র যাঁদের গ্রন্হ প্রকাশ হয়েছে তাঁদেরই নয়, যাঁরা সময়ের ভেতরটাকে লিখতে চাইছেন, তাঁদেরকেই এই পাঠযাত্রায় সঙ্গী করবো বলেই যাঁদের বই আছে, প্রচ্ছদ দেওয়া সম্ভব হলো।এখন আন্তর্জাল মাধ্যম যখন প্রধান হয়ে উঠতে চাইছে এবং এই লেখাটিও সেই মাধ্যমেই প্রকাশিত হচ্ছে তাই কেবল বইয়ের ওপরেই বা নির্ভর করবো কেন!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন