দোঁহা

আদিত্য প্রত্যূষের কবিতা



 কালিংপং(গুচ্ছ কবিতা)
 

ফুলস্কেপ ঢেউ

জলের উপর কলংক
রোদের পিঠে শুকিয়ে
শুদ্ধ ঝড়ের সময় ফুল ফোটা দেখে
দুটি হাঁসের ফুলস্কেপ ঢেউ
প্রাণের অলিন্দে নাচে

মুগ্ধতা সেতুর মতোই জোড়া লাগায়

মিনারে মিনারে প্রাচিন আলো জ্বলে
নিঃসংকোচ বরফ জমে
মজে ওঠে প্রেমের বোয়াম

হাওয়ায় হাওয়ায় সুগন্ধ

নৌকো মোম হয়

পুড়তে পুরতে যায় পতঙ্গ

মৃত্যুর জন্য কোনো শোক নয়
রাস্তা বুক ঠুকে বলে এগিয়ে চলো

এই নাও আলো! আমি সঙ্গে আছি


আগুন ও পিপাসা

পোক্ত হাতের উপর মোলায়েম

শার্টের কাঁধে আদরের হলুদ জ্বর

প্রজাপতির ডানার রিক্ততা বর্ণময়
ভোরের স্নিগ্ধ স্তনে ওষ্ঠ রেখে হাওয়া
ফুরিয়ে যায়

মোমের দেহে কিছু কী আসক্ত হয়!

কঙ্কালের ভেতর-স্পন্দিত মেঘ জমে

দুপুরের পিয়ন এসে জাগায়
চোখের কোটরে মৃদু হাসির কলতান

এখনও ঘুমোতে পারেনি একচুল
তোমার জন্যই কোনো আগুন


পাখি হওয়ার গান

জন্ম আর এই লড়াই

কাউকে প্রতিহত করতে নয়

নিজের ভেতর নিজের বৈপরীত্য ভাঙতে

এই অমোঘ সত্যের কাছেই বীর্য্য স্খলন

দেখা গেছে কোনো সত্যই স্থির নয়- নদী বহমান

সুতরাং জলের ধর্ম থেকে গামছা নিংড়ানো

কিছু সবুজ পাতা বড়ই অসহায়

আমার করুণ কাতর অনুভব তাদের জন্য কেউ করবে না অনুবাদ

তবুও এই অর্ধ ও পূর্ণ জড়ের রাজ্যে

আমিও নিছক একটি গাছ!  অধম থাকতে চাই

পাখিরা ডালে বসে গান গায়

উড়ে যায় অনন্ত আকাশ



কোমল ধংসের কাছাকাছি

অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে
দৃষ্টির অদৃশ্যতা সে জানতো

সুচের তীক্ষ্ণতা ঐক্যকে বিদ্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়
কাগজের নৌকা বানাতে মন যখন ব্যস্ত থাকে
বৃষ্টির ফোঁটা তার দিকে নরম উঁকি বাড়ায়

জানালা খুলে দেখি গাছের পাতা মাঝে মাঝে দূরের নদী মনকে আমন্ত্রণ জানায়

অক্ষর অন্ধ হয়ে জন্মালে মায়ের গর্ভ কাঁপে
এবং
মোমবাতির শিখাও

ঈশ্বর সর্বনাশের কাছে প্রকাশিত এবং...

অনন্ত বহুবর্ণের রক্তবীজে তাঁর বিখ্যাত সত্তা
তাই আজ অদম্য আকাশে চাঁদ উঠেছে


একবুক জলের কাছে

পুরোনো বাতাস ঘর থেকে বেড়িয়ে
আকাশ দেখতে গেল

বিহঙ্গের ডানায় মুক্ত-প্রাণের সন্তরণ
আর আবছা বর্ণমালার সমাবেশ

পর্যবেক্ষণগুলি প্রস্ফুটিত হলে বাতাস পুনরায় জিজ্ঞেস করে বন্ধ কেন ঘর?

দরজায় স্থবির নিঃশ্বাস শুভ্র আকাশে জিজ্ঞাসার রংধনু

মাটির মোলায়েম আদরে পিঁপড়ের দুষ্টুমি

আমি সংসার উল্টো করে সাজাই
আমার স্বাধীনতা অন্যের ঘাড়ে সুড়সুড়ি বোলালে
কিছু কাঁটাতার নতুনরূপে সজাগ

বুলেটের ঘুম ব্যলোটের মিহিন মসনদ
দীর্ঘ আরাম কেদারায় এলিয়ে পড়ে

মাটি থেকে মূল কাণ্ড এবং শাখাপ্রশাখার বিস্তার
আবার পাতাদের ফিরে আসা মায়ের কোল

সবকিছুই আরোপিত! প্রথা- প্রচলিত বিশ্বাসের উর্দ্ধে উড়তে চায় না প্রজাপতি

আর আলো সব স্ফুলিঙ্গের জন্য জমিয়ে রাখে
পাথর থেকে পাথরে
ফসিল থেকে প্রত্ন ফসিল এবং...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন