দোঁহা

অরিত্র দ্বিবেদীর কবিতা

  


কুম্ভীলক   

শর্বরী নদীর ধারে দাঁড়িয়ে
দেখি: স্বপ্নের প্রতিবিম্ব নড়ে চড়ে
ছবি শুধু ছবি শুধুই ছবি
কোনো গন্ধ নেই কোনো গন্তব্য নেই।

ওপারে প্রতিবিম্বদের ঘর
আমি আধকোমর জলে আচমন করি,
সূর্যদেব ঢেকে আসেন কালো
কালো মেঘলা অক্ষরে, পরের অক্ষরে...

স্বপ্নদেশ থেকে ভীমকন্ঠ ভেসে আসে,
আলো হয়ে ফুটো করে মেঘ,
নেমে আসে সেই চিরাচরিত অমোঘ বাণী,
দৈব্যবাণী। বয়ে আনে আদেশ:

শর্বরীর জল অপবিত্র করেছিস তুই,
যা ফিরে যা, কাচের দেশে
তুই পাপী, অভাগী, অন্ধকারাচ্ছন্ন মানুষ
তুই ফিরে যা নিজের দেশে

আমি জল থেকে উঠে আসি
সেদিকে চেয়ে থাকে শব্দমেখলা
খেলা করে কচি মাছের মত
আমি, কুম্ভীলক, দাঁড়িয়ে দেখি

শুধুই দাঁড়িয়ে দেখি,
ফিরে আসা ছাড়া আর কিছুই করতে পারিনি কোনোদিনও।
                               
 
অপাপবিদ্ধ

শ্রাবণের শেষ দিনের দিকে
খোলা জানলায় পাতাদের ঝিলিমিলির ফাঁকে
নিজের সব বিবেক দংশনকে
ফিরে আসতে দেখেছি-
মেঘ হয়ে।

দুঃখ উবাচ গন্ধ বওয়া মাটি,
সোঁদালি, আকাশমণি পাতার নীচে
শির শির করে ওঠে হাওয়া, শেখায় স্তব্ধতা।
উচ্চারণ করে প্রতিটা অক্ষরে,
কত ভুল করেছি, কত ভুল করেছি আমি...

তাও মেঘ কাটেনা
ফেরেননা ওঁরাও, জমে আসে জমাটি
বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে দেখি নির্বোধ এক শিশু
ডাকে-হাতছানি দেয় জানলা দিয়ে,
আমি যাই না, নিজেকে যেতে দিতে চাইনা।

সে শুচিতা আমার আবিল হয়ে গেছে
তাই দাঁড়িয়ে থাকি মাঝবৃষ্টিতে,
শ্রাবণের ওই শেষ দিনের দিকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন