দোঁহা

অসমাপ্ত উপন্যাস




দেবাশীষ ঘোষ

সময়টা ছিল শ্রাবণের এক সকাল, তামাটে ধূসর রং যেন ছেয়ে ফেলেছে সারা আকাশটাকে, যেন মনে হচ্ছে কোন এক
অভিমানী নারী তার চেপে রাখা অশ্রুকে সংগোপনে বেঁধে রেখেছে।

রুদ্র জানালার ধারে দাঁড়িয়ে সিগারেটের শেষ টান দিতে দিতে ভাবছে আঁচলের কথা, আঁচল রুদ্রর বান্ধবী, আজ ওর আসবার কথা। রুদ্র তারই অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে, আর আপন মনে বলে চলেছে একের পর এক কবিতা, রুদ্র লিখতে ভালোবাসে, ছবি আঁকতে ভালোবাসে, ভালোবাসে গুন গুন করে গান গাইতে যদিও, আঁচলের মত অত সুন্দর গাইতে পারে না, এটা রুদ্র সবসময় বলে আঁচলকে,

"এমনও দিনে তারে বলা যায়
এমনও ঘনঘোর বরিষায়
এমন মেঘস্বরে বাদল ঝরঝরে
তপনহীন ঘন তমসায়
এমন দিনে তারে বলা যায়”...

কবিতাটা শেষ হতে না হতেই মিষ্টি গানের কলি ভেসে এলো, খোলো খোলো দ্বার রাখিও না আর বাহিরে আমায় দাঁড়ায়ে...

স্বাগতম, স্বাগতম তোমার জন্যই তো এই অপেক্ষা বলে রুদ্র হেসে উঠলো, কিছুক্ষণ এদিক ওদিক তাকিয়ে আঁচল বলল কি ব্যাপার তুমি এখনও তৈরি হওনি, আজ না আমাদের মুভি দেখতে যাবার কথা আর তুমি এখনও...রুদ্র তুমি, তুমি না আর পাল্টাবে না, এত বছরেও আমি তোমাকে পাল্টাতে পারলাম না এটাই আমার দুঃখ।
 রুদ্র বলল আজ তোমায় দারুণ লাগছে যেন মনে হয় কোন দেবী।

হেঁয়ালি ছাড়ো তো, বলো না কখন যাব আমরা, কতদিন একসাথে সিনেমা দেখিনি, বলতে বলতে আঁচল রুদ্রর কবিতার খাতা গুলো আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রং তুলি গুছিয়ে রাখতে লাগলো।

রুদ্র বলল, এই ওয়েদারে বাইরে যাবার থেকে বরঞ্চ ঘরে বসে আমরা আড্ডা মারি, এমনিতে তো আর সময় হয়ে ওঠে না, হয় তোমার স্কুল নয়তো আমার অফিস, আঁচল বলল, হ্যাঁ সেটা তো মন্দ না, সুন্দর একটা জমিয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে, আর সিনেমাটিক হিরোর থেকে নিজের হিরোর সাথে সময় কাটানোর মজাটাই আলাদা, বলে হেসে উঠল দুজনে।

রুদ্র বলল, দাঁড়াও আড্ডা ঠিক শুধু মুখে জমে না আর মেঘলা ওয়েদার আমি বরং কিছু চটপটা বানিয়ে নিয়ে আসি, তারপর জমিয়ে আড্ডা মারা যাবে, ততক্ষণে তুমি আমাকে একটা গান শোনাও। আঁচল বলল গাইতে পারি তবে একটা শর্তে তোমাকেও আমার সঙ্গে গলা মেলাতে হবে। রুদ্র ঠাট্টা করে বললো, তোমার অমন সুন্দর গলার পাশে আমি গান গাইলে যেন মনে হবে, বৃষ্টির রিনিঝিনি শব্দের সঙ্গে কর্কশ বজ্রের যুগলবন্দী হচ্ছে।

আঁচল অভিমানের সুরে বলল, তাহলে কিন্তু আমি গাইব না কোনদিনই গাইবো না..রুদ্রর এরকম ছোট ছোট ঠাট্টাতেও চোখ অভিমানী হয়ে ওঠে আঁচলের।

রুদ্র বলল আচ্ছা বাবা গাইছি, তবে খাবার রেডি করতে করতে বলে কিচেনে চলে গেল।
দুজনে একসাথে শুরু করল...পরানো যাহা চায় তুমি তাই তুমি তাই গো, আমারো পরানো যাহা চায়, তোমা ছাড়া আর এ জগতে, মোর কেহ নাই কিছু নাই গো, আমারো পরানো যাহা চায়...
এক থালা গরম গরম তেলে ভাজা আম তেল দিয়ে মাখা মুড়ি আর দু কাপ কফি নিয়ে শুরু হলো আড্ডা, কত স্মৃতিচারণ, কত না বলা কথা যেন আজ সব বাধা মুক্ত করে বেরিয়ে আসতে চাইছে দুজনেরই। কথায় কথায় বেলা গড়ালো, কোথাও যেন একটা বৃষ্টি হয়ে গেছে, ঠান্ডা শীতল হাওয়ায়ে বার বার এলোমেলো হয়ে ওর মুখের উপর এসে পড়ছে ওর বাদামি কেশরাশি, তাতে আরো যেন মোহময়ী লাগছিল ওকে।

এবারে উঠি, সন্ধ্যেবেলায় আসবো, ততক্ষণ তুমি শান্ত ছেলে হয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করো আর তোমার উপন্যাসের শেষটা লিখে ফেলো, সারপ্রাইজ আছে সন্ধ্যায়, টা টা বলে আঁচল বেরিয়ে গেল।

আঁচল চলে যেতেই রুদ্র ঘরের টুকটাক কাজ সেরে নিতে লাগলো, তারপর একটা সিগারেট ধরিয়ে বসে পড়লো তার উপন্যাসের শেষ অংশটা লিখতে, প্রায় শেষ, তবু যেন গল্পের শেষটা ঠিক করে উঠতে পারছেনা রুদ্র, লেখা রেখে রুদ্র ভাবছে ওদের দুজনের কথা।

অনেকদিনের সম্পর্ক ওদের, যেন এক দৃঢ় লম্বা অর্জুন গাছ তার পাশে বীজ থেকে একটু একটু করে গড়ে ওঠা কৃষ্ণচূড়া কে প্রেম নিবেদন করে চলেছে বছরের পর বছর, কিন্তু কেউ কারোর কাছে আসতে পারছে না। কোন ঝড়ো হাওয়া কখনো কখনো নুইয়ে দেয় অর্জুনকে তার কৃষ্ণচূড়ার কাছে, আবার কখনো কৃষ্ণচূড়া বিছিয়ে দেয় তার প্রেম অর্জুনের পায়ে প্রভাতের সূর্যকিরণের সাথে।

আঁচল চলে যেতে, রুদ্র কিছুক্ষণ ভাবের সমুদ্রে তলিয়ে গিয়েছিল। গঙ্গার জেটির ওপরে ডুবস্ত সূর্যের আলোর ছটা, সূর্য যেন তার সমস্ত উত্তাপকে শীতল করতে ডুব দিয়েছে নদীর বুকে ঘেঁটে যাওয়া কপালের সিঁদুরের মতো। সূর্য আর নদীর রং এর খেলা দেখতে থাকে রুদ্র আর আঁচল একটা নোঙ্গর বাধা খুঁটির ওপর বসে।

সূর্যের ছটাও যেন আজ চোখ ফেরাতে পারছে না, আঁচলের মুখে সে যেন তার আজকের শেষ রশ্মি টুকু দিয়ে নারীর সৌন্দর্য কে প্রণাম জানাচ্ছে, গঙ্গার হাওয়ায় এলোমেলো চুল, দূরে পালতোলা নৌকায় ভাটিয়ালি সুর, উড়ে যাওয়া বলাকার ডানার শব্দ আর আমার নিস্তব্ধ মনে শুধু তাকিয়ে দেখা, হে প্রকৃতি, হে নারী, তুমি সত্যিই কত সুন্দর তোমাকে ব্যবহার নয়, উপভোগ করতে হয় অন্তর দিয়ে, তুমি এক স্বচ্ছ জলরাশি, তুমি আদি, তুমি অনন্ত, তুমি নারী, যার শুরু আছে শেষ নেই।

জানালা দিয়ে বৃষ্টির ছাট আসতে রুদ্র সম্বিত ফিরে পেল, হঠাৎ তার মনে পড়ে গেল, আঁচল তো পৌঁছে গিয়ে কোন ফোন করল না। রুদ্র টেবিল থেকে ওর ফোনটা তুলে নিল, রিং করতে থাকলো আঁচল কে, সুইচ অফ রুদ্র ভাবলো হয়তো চার্জ শেষ হয়েছে তাই সুইচ অফ হয়ে গেছে। সে বসে পরল আবার তার লেখার টেবিলে বাইরের ঠাণ্ডা হাওয়া যেন বয়ে নিয়ে আসছে কত স্মৃতি কথা, ভাবতে বেশ ভালই লাগছে রুদ্রের, ওর মনটা যেন আজ ওর বশে নেই।

শাঁখের আওয়াজ শুনে উঠে বসলো রুদ্র, কখন যেন সে আনমনে টেবিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিল, দেখলে চারিদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে, আঁচল আসবে তাই নিজেকে তৈরি করতে হবে, না হলে আবার বকুনি খেতে হবে এই ভেবে একটা সাদা বুটিকের পাঞ্জাবী আর চোস্তা পড়ে নিল। এলোমেলো ঘরটাকে অপটু হাতের ছোঁয়ায় একটু গুছিয়ে নেবার চেষ্টা করলো। ফুলদানিতে গোলাপ, ঘরে ছড়িয়ে দিলো সুগন্ধি, জানালার বড় বড় সাদা পর্দা গুলো হাওয়ায় দোল খাচ্ছে, ঘরটা বেশ মায়াবী হয়ে উঠেছে, এতটা সুন্দর করে সেজে উঠবে এটা কল্পনাতেও ভাবেনি রুদ্র, আজ আঁচলের জন্য দরজা খুলে সে অপেক্ষা করছে জানালার এক পাশে দাঁড়িয়ে।

মুখে তার রবীন্দ্রনাথ…

"আরতিদীপ এই কি জ্বালা, এই কি আমার সন্ধ্যা?

গাঁথবো রক্ত জবার মালা? হায় রজনীগন্ধা।

ভেবেছিলেম বোঝাবুঝি মিটিয়ে পাব বিরাম খুঁজি
চুকিয়ে দিয়ে ঋণের পুঁজি
পুঁজি লবো তোমার অংক।

হেনকালে ডাকলো বুঝি নীরব তব শঙ্খ"...

মৃদু হাতের স্পর্শে ছন্দ ভঙ্গ হলো রুদ্রর। ঘাড় ফিরিয়ে দেখলো, পিছন ফিরতেই স্তম্ভিত হয়ে গেলো, কি দেখছে সে! নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না, সামনে
দাঁড়িয়ে যেন জীবন্ত এক দেবী মূর্তি, কি রূপের ছটা তার, কখনো তো সে এই রূপ দেখেনি তার, রূপের সাগরে রুদ্র যেন ডুবে যেতে লাগল। রুদ্র বলে উঠল, কি অপরুপ লাগছে তোমায় হে অপরিচিতা,

ও আমি অপরিচিতা, তা পরিচিতাটাকে শুনি, না না আজ তোমাকে বলতেই হবে গোপনে গোপনে কোন পরিচিতা কে মনের কোঠায় বসিয়েছ হে কবি। দুজনায় হেসে উঠলো, বললো তোমাকে নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে, ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে চলে যাই দূরে বহু দূরে, যেখানে ঘুম ভাঙবে মিষ্টি পাখির ছোট্ট ঠোঁটের শব্দে, ইচ্ছে করে বৃষ্টিতে ভিজতে, ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে মেতে উঠতে ফুলের গন্ধে, আচ্ছা, যদি এমন হতো দুজনে পাখি হয়ে উড়ে বেড়াতাম এক আকাশ থেকে আরেক আকাশে।

ও বলল, অনেক হয়েছে, এবার এইগুলো ধরো, আমি কতক্ষণ ধরে থাকবো বলো, ইস, আমি সত্যিই খেয়ালই করিনি ঐদিকে ওর হাতে যে দুটো প্যাকেট ধরা।

একটা ছোট্ট সুন্দর লাল গোলাপ রুদ্রর বুকের সামনে ধরে আঁচল বলল, মেনি যেনি হ্যাপি রিটার্নস অফ দা ডে, অবাক চোখে তাকিয়ে রইল রুদ্র, বলল ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না, আনমনে হাতরে যাচ্ছে অনেক কিছু আঁচল ততক্ষনে রুদ্রের ছোট কাচের টেবিলটার উপরে সুন্দরভাবে সাজিয়ে নিয়েছে রুদ্রের বার্থডে কেক, পাশে জ্বলছে সারিসারি মোমবাতি, চমকে উঠল রুদ্র, আঁচলের মনে আছে এই দিন টা। মা মারা যাবার পর একমাত্র ওই এই দিনটাকে মনে রেখেছে। কেক কাটা শেষ হলে একে অপরকে খাইয়ে দিল, রুদ্রের ঠোঁটে লেগে থাকা এক কণা কেকের টুকরোটাকে আঁচল যেন কখন তার অজান্তেই নিজের ঠোঁটের স্পর্শে তুলে নিল।

এই প্রথম রুদ্র আঁচলের গরম নিঃশ্বাসের স্পর্শ পেল, কিছুক্ষণ দুজন স্থির হয়ে রইলো, তারপর লাজুক চোখে দেখল একে অপরকে, যেন এক স্বর্গীয় অনুভূতি ঘিরে ফেলল সমস্ত পরিবেশটাকে।

নিজেকে সামলে রুদ্র আঁচল কে একটা গান গাইতে অনুরোধ করলো, রুদ্রের অনুরোধ ফেলতে পারল না আঁচল ফুলদানিতে রাখা গোলাপ গুলোর উপরে হাত রেখে সে গাইল, তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম, নিবিড় নিভৃত পূর্ণিমা নিশীথিনী সম, তুমি রবে নীরবে...

গান শেষ হতেই রুদ্র জিজ্ঞাসা করল আঁচলকে তোমার ফোনের সুইচ অফ ছিল কেন, তুমিবপৌঁছেছ কিনা জানবার জন্য আমি তোমাকে ফোন করেছিলাম, কিন্তু ফোনটা সুইচ অফ বলছিল।
আঁচল বলল আরে কি হয়েছে জানো, আমি অটো থেকে নেমে পেমেন্ট করার সময় ফোনটা...

কি ফোনটা কি হয়েছে? আঁচল বলল না মানে মনে হয় সেখানেই ফোনটা ফেলে এসেছি, ছাড় ওসব কথা।

রুদ্র ভাবলো আঁচল তো ফোন এর ব্যাপারে এতটা উদাসীন নয়, ওর কথার মায়াজালে রুদ্র তখন যেন এক বাঁধাপড়া জোনাকির মতো, যারা আলোটুকু দেওয়া ছাড়া আর  কিছুই করবার ক্ষমতা নেই।

এক সুন্দর সন্ধ্যা কাটিয়ে আঁচল চলে গেল, আর দিয়ে গেল যেন বহুদিনের পিপাসায় ভরা হৃদয়ে একরাশ স্বচ্ছ ঝরনার জল, যা রুদ্র আগে কখনো পাইনি।

একটা সিগারেট ধরিয়ে টুকটাক ঘরের কাজ করছে রুদ্র, হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো, রুদ্র ভাবলো আঁচল
হয়তো পৌছিয়ে অন্য কারো ফোন থেকে ওর পৌঁছানো সংবাদ রুদ্র কে দিচ্ছে,

হ্যালো বলতেই উল্টোদিক থেকে ভেসে এলো এক নারীকন্ঠ. বেশ ভারী আওয়াজ.

রুদ্র- হ্যালো হ্যাঁ বলুন

অনাজন- আপনি কি রুদ্রনীল চ্যাটার্জী

রুদ্র- হ্যাঁ বলছি কিন্তু আপনি? আর এই ফোনে?

অন্যজন- হ্যাঁ, এটা আঁচল সেন এর ফোন নাম্বার

রুদ্র-কিন্তু আপনি কে? তাহলে কি আপনি ওর ফোনটা খুঁজে পেয়েছেন, ওর ফোনটা আজ দুপুর থেকে পাওয়া যাচ্ছে না।

অন্যজন- হ্যাঁ আমরা ফোনটা পেয়েছি আর এতে লাস্ট কল টা আপনার ছিল বলে আপনাকে ফোনটা করলাম,

রুদ্র -ভালো করেছেন ফোনটা নিতে আমাকে কোথায় আসতে হবে বলুন আমি চলে আসছি।

অন্যজন- আপনি কে হন উনার, মানে সম্পর্কটা কি?

রুদ্র- আমি ওর বন্ধু বলতে পারেন হবু স্বামী, (মৃদু হাসি রুদ্রের) হ্যাঁ ম্যাডাম বলুন কোথায় আসতে হবে আমাকে।

অন্যজন -থানায়

রুদ্র- থানায় কেন?

অন্যজন -আমি জোড়াপুকুর মহিলা থানার সেকেন্ড অফিসার বলছি, আপনাকে এখানে এসে একটা বডি শনাক্ত করতে হবে, আজ দুপুরে চার মাথার মোড়ে এক ভদ্রমহিলা অটো থেকে নামার সময় পিছন থেকে একটা ট্রাক তাকে পৃষ্ঠ করে, আমরা তার আঁধার কার্ড আর ফোন থেকে জানতে পারি ওর নাম আঁচল সেন।

আপনি তাড়াতাড়ি এসে আমাদের কাজে সহযোগিতা করুন। আমরা গাড়ি পাঠাচ্ছি আপনার বাড়িতে। রুদ্র-অফিসার, অফিসার আপনাদের কোথাও একটা বড় ভুল হচ্ছে, আঁচল এতক্ষণ আমার সঙ্গেই ছিল, আমরা দুজনে একসাথে আমার বার্থডে মানালাম।

হ্যালো...হ্যালো... (ফোনটা কেটে যায়)

খোলা জানালার পর্দা ধরে রুদ্র দাঁড়িয়ে ভাবছে আঁচল ওর কথা রাখার জন্য...
আর ভাবতে পারছে না রুদ্র বাইরে বৃষ্টি নেমেছে তার সঙ্গে চলছে বিদ্যুতের তান্ডব নৃত্য। গর্জনে গর্জনে আকাশ যেন ফেটে পড়ছে। রুদ্র ভাবছে পৃথিবী যেন ভেঙে চুরে শেষ হয়ে যাক আজকে হঠাৎ তার কানে ভেসে এলো আঁচল এর গাওয়া গান। বহুদূর থেকে সে যেন ভাঙ্গা গলায় রুদ্রকে বলছে গাও রুদ্র গাও একবার, একবার গলা মেলাও আমার সঙ্গে রুদ্র। রুদ্র কাঁপা কাঁপা গলায় আঁচলের সঙ্গে গলা মেলাতে মেলাতে মাটিতে বসে পড়ে। হঠাৎ শুনতে পায় তার দরজায় গাড়ির শব্দ...
আমরা থানা থেকে আসছি।

রুদ্র কে আর থানা অব্দি পৌঁছাতে হয়নি, পুলিশ অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর ঘরে ঢুকে দেখতে পায় রুদ্রর নিথর দেহ...

এলোমেলো হওয়ায় উড়ে যাচ্ছে টেবিলের উপরে থাকা তার অসমাপ্ত উপন্যাসের পাতা গুলো...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন