দোঁহা

তমোঘ্ন মুখোপাধ্যায়ের কবিতা



  

 পুনশ্চ

 ছাই, বিলাসের শব্দ লেখার আঙুল কেটে পুনরায় ঘনরক্ত রাত...
এভাবে সমস্ত মুখ মুখ হিসাবেই বুঝে একা-একা জলে ফিরে যাওয়া।
আর কেউ শান্ত হলে তার পোশাকের মধ্যে ইতস্তত নখের গমন
যদি বা দেখেও থাকো, চোখ বন্ধ করো, চোখ
                                                     আড়ালের পরিধি বোঝে না।
কেন অর্থবহ হবে সব উপদ্রব, শব্দ, কেন এই অর্থগামী হওয়া?
নিজেকে উদ্ধার করে বালিঘরে ঠুসে দিচ্ছ,
                           নাকি বালি তোমার হাঁ-মুখে
খাদ্য, সারাৎসার হয়ে ঢুকে যেতে থাকে? আজ গুঁড়ো গুঁড়ো অঙ্গ উদ্ধারের
জিয়ল প্রচেষ্টা এই কালো উপকূলে আরও একা, সর্বনাশা করে দেয়।

ছাই, বিলাসের রক্তে আঙুল গড়াচ্ছে... কোনও আগুপিছু প্রজন্ম ছিল না।
কার ছেলে হই? কার মেয়ে? কার টোপ? বাবা? কার মুহুর্মুহু আততায়ী?
একা সম্ভাবনা হয়ে শান্ত থাকা, নখ ফের
ইতস্তত পোশাকে পোশাকে ছাই, বিলাসের শব্দ রেখে যাচ্ছে—
বন্ধ চোখে স্নায়ু ধাতু কেটে দৃশ্য হল।

একেও ব্যাখ্যায় ফেলে সামাজিক হতে চাওয়া, হতে চাওয়া জগৎ-প্রতিভূ
                ঘনরক্ত রাত ভেঙে দিনের কসাইঘরে অনভ্যাসে চিৎ হওয়া শুধু।

 আঙুল প্রদাহদাঁড়, বালিপ্রবাহের মধ্যে ঘরের জ্যামিতি ধ্বংস করে।

ফেরার আস্তানা নিজে মুছে মুছে অন্ধকারে জল্পনায় এতদূর এলে।
                                   লেখো রক্ত, পরিত্রাণ, অহেতুক কাহিনি লিখো না।


 

আবাহন

এসো স্বভাবদোষে, ঘৃণায় এসো, দ্যাখো কীভাবে বীতশোক দু’-ঊরু আজ
মাটি ছোঁয়ার পর আকাশে যায় চোখ; স্মরণে কেঁপে ওঠে বলাৎকার
অপশাসিত কিছু শরীরী আবহের, এবং যতটুকু অজ্ঞতার
মণ্ড রয়ে গেছে মনে ও হুতাশনে। এসো হনন-লোভে, এসো নিলাজ—
কেননা নতজানু মানুষ দেখে ফেলা চোখ যেদিকে যায় নরক সব।
কাকে মেনেছ প্রভু? কাদের সহচর? কাদের ঘরে আনো? অন্ন দাও?
যে-কেউ প্রতারিত, আঘাতজর্জর, যাদেরই ভালবেসে শরীরে নাও,
চামড়া অব্দিই তাদের ছলাকলা, রক্তে মিশল না প্রমেহ, স্তব।

শরণাগত দুই ঊরু কীভাবে নেয় দেহ ও দেহাতীত জন্মভার?
এসো মাটির কাছে, আঙুল রেখে বোঝো কীভাবে শেষ হয় শ্রী, বৈভব;
বোঝো আকাশে যাওয়া চোখের বিফলতা; আকাশ চিরকাল নিরীশ্বর।
দৃশ্য নেমে আসে, দৃশ্য মহাডোম, মনোশ্মশানভূমে মৃতের হাড়
জ্বালাতে থাকে আর ছড়ায় সেই ঘ্রাণ খুঁজেছ যার স্থিতি আশৈশব।
ফেরো স্বভাবদোষে, অপশাসনে ফেরো, ও মন, মৌতাত, অনশ্বর!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন