দোঁহা

রিয়া চন্দ্রের কবিতা

 


 পূর্বরাগ

কত দীর্ঘ বিনিদ্র রাত বেলফুল হাতে রোজ
মর্মতল স্পর্শ করে যায়, বাউলের নিঃস্বতা 
থেকে দূরে যেমন ভীষণ অনন্ত প্রবাহ 
নিষ্পলক চেয়ে থাকে স্খলিত তারাদের দিকে 
তেমনি আকাঙ্ক্ষায় প্রাচীন সে শ্রাবণ দেখেছিল
চন্দ্রাহত রাত, বিপথগামী দৃষ্টির প্রণয়
অন্তিম গোধূলি নিয়ে দারুণ জলের উচ্ছ্বাস 
আছড়ে পড়ছে অবিরত, তখন সোহাগী উঠোন
পেরিয়ে প্রবেশ করেছে তোমার প্রদাহ
কী করে বোঝাব এ স্রোতকথা আলো চেয়েছিল
তুমি তাকে দিলে মুকুলিত প্রেমের তন্ময়তা
এমন নৈসর্গিক দুয়ারে এসে নির্বাক থাকি
তোমার শরীর-কাব্য ছুঁয়ে ফেলার আগেই
সব ভালোবাসাবাসি ঈশ্বরপ্রদত্ত হয়ে যায়

বিষণ্ণতা থেকে দূরে

অনায়াসে ভেঙে যাচ্ছে শব্দদের যাত্রাপথ 
তারপর শয্যার কথা উঠলেই মনে হয়
হঠাৎ যেন এক মায়াবী রমণের মেঘ 
বয়ে আনে অজানা কোনো ক্ষয়প্রাপ্ত রাগ
ভোরবেলায় আজানের সুরে পাখিদের 
মাঙ্গলিক গান, সহজিয়া বোধনের ফুলে
ভেঙে যায় স্নায়ুমুখরতা, স্বপ্নের থেকে দূরে
তখন শহরজুড়ে ভীষণ কুয়াশার চাদরে 
শীত নেমে আসে, দেহময় সাঁঝবাতি জ্বেলে
ও কানাই, বাজাও বাঁশি। জন্মাবধি স্পর্শকাতর
চেয়ে দেখো, নীলরাত্রির ঘনিষ্ঠ অতল
যার আনত মুখে লেগে আছে শ্যামচাঁদ আলো
এমনই রাঙা সমারোহের নৈশসফর থেকে 
তৃষ্ণা গড়িয়ে যায় নিরালার দিকে
ধীরে ধীরে ফুটে ওঠে প্রেমার্তমঞ্জরী
আহা! এ আলাপহীন মোহমাস...



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন