দোঁহা

মোহনা মজুমদারের কবিতা


প্রণালী

ধূলার ভেতর নগ্ন-ঘুমোচ্ছে চাকা। গুহার অবয়ব টুকু শূন্যে বেঁধে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিতে গিয়ে দেখি পাতালে মেঘ, বৃষ্টির অপেক্ষায়, খসে পড়ছে বিন্দু বিন্দু মুখ ।
বিশ্বাসঘাতকতায় বন্দনা টুকু লেপ্টে মাংস খাওয়ার ফন্দি এঁটেছিলাম। এসেছিলে? কিংবা আসোনি। স্বপ্নগুলো উড়ে গিয়ে চোখের জলের ওপর বসে...তারপর বাষ্প, বাষ্প, মেঘ, ধোঁয়াশা।

একদল পিঁপড়ে ঘর গড়বে বলে এগিয়ে যাচ্ছে, লাইন করে একজনের পেছন একজন, এগোতে এগোতে পিছনে ফেলে মাটির তাল, যা দিয়ে ওদের ঘর গড়ার কথা ছিল। বোস কাকুর বাড়ির ভাঙা দেওয়াল, ছাদে শুকোতে দেওয়া আচারের গন্ধ সব...সব পেড়িয়ে ওরা এগোয়, এগিয়েই যায়, জানলার কাচে তখনও থকথকে রোদ জমাট বাঁধছে, এখনও কি তবে প্রলয়ের নির্ঘন্ট সাজাচ্ছে নকুলদানা?

আমি যা লিখতে পারিনি, তার গর্জনের শব্দ নদীর ভেতর কান পেতে শুনি… রক্ত, রক্তাক্ত সন্ত্রাস। এই অনাদি কালের হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস তোমার জানার কথা নয়, অনির্বাণ। সন্ধ‍্যে নেমেছে, দোয়েল পাখির দল থার্মোমিটার টপকে উড়ে যায়, গুহার দিকে, না না গুহার ওপারে আস্ত এক সমুদ্রের গর্ভে।




নভ

ছয় বনমালী লেন ধরে ভাঙা আলোর 
চাকা বয়ে চলেছে। পাশে রক্তবীজের কারখানা।
শূন‍্য ইন্টারনেট জোন পেড়িয়ে পুতুল নাচের শহর,
আমরা সেখানে রোদ মাখি, খেলা কর।
বহুকাল আর মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙে না ,তবু 
জোনাকি রঙের রোদ এসে
 চুমু খায় আমার কঙ্কাল, ঘর থেকে বহু দূরে 
সোনালী কাস্পিয়ানের ভেতর।
আগুন আর চোখের পলকহীন আত্মপীড়ন-
এও কি তবে নিমেষরহিত জাগরুক?
তুমি কি সত্যিই দাড়িপাল্লায় মাপো? তরঙ্গে ধাবিত 
গোপনীয়তা? এসো প্রাত‍্যহিক! আমরাও 
শুক্লপক্ষে বিন্দু-বিচ্ছুরণ যোগ করি-
ইথারে তখন বিরল নিলীমা।
উড়ে যায়, উড়ে যায়-
ঠিক তারপর উড়ে যায় সংলাপহীন কলঙ্ক।







একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন