শিমুলচিহ্নিত ভালোবাসা
মাঘ শেষ না হতেই বাতাসের চোখে লাল শামিয়ানা
পাগলপারা সে বাগানের ঘরে ঘরে ডাক দিয়ে যায়:
‘ওঠো! তোমার আর এখন একেলা ঘুমিয়ে থাকা নয়!’
ও শিমুল! এইভাবে আর কত! সভ্যতার বীজ নিয়ে শিখিয়েছো-
ফাল্গুন এলে প্রেয়সীর সিঁথি এবং প্রয়োজনে রাজপথ
কীভাবে রাঙাতে হয়; আমরা তা মেনেও নিয়েছি।
তাই তো ফাগুন এলে আমার বোনেরা পলাশের মালা গাঁথে,
আর আমি আমার যুবতীর খোঁপায় দিই প্রস্ফুটিত লাল;
এবং উদাস দুপুরে খুঁজে ফিরি
আমাদের অস্ট্রিক আত্নীয়ের পদচিহ্ন-
যে তার যুবতীকে নিয়ে
বরেন্দ্রীর শিমুলচিহ্নিত ইতিহাসের রাঙাপ্রান্তরে লুকিয়ে আছে।
ভালোবাসার গল্প
বাংলা, তোমাকে ভালোবাসি অন্য সব ভাষার চেয়ে বেশি
সেটা একারণে নয় যে-
জগতের সকল সোনাদানা কেবল তোমার আঁচলে
আর অন্যসব ভাষার ভাণ্ডারে শুধু
লোহা তামা, ব্রোঞ্জ ও পিতল;
তোমাকে বেশি ভালোবাসি একারণে যে
পৃথিবীতে এসে যে শব্দটি প্রথম উচ্চারণ করেছিলাম,
সেই একটিমাত্র শব্দ ছিল তোমার স্বরবর্ণ আর
ব্যঞ্জনবর্ণের বৃক্ষে রচিত সাতরঙা বাগান
যার ছায়া ও মায়া, রস ও কষ
আমাকে দিয়েছিল ভালোবাসায়
বেড়ে ওঠার সহায় ও সাহস, দেশ ও দুনিয়া।
অতঃপর তোমাকে সাথে নিয়ে মক্তবে আরবি শিখেছি,
পাঠশালায় ইংরেজি; সিনেমা দেখে হিন্দি:
পেয়ার কিয়া তো ডরনা কিয়া!
কোনোটাই খারাপ লাগেনি;
তাদের প্রেমেও পড়েছি যদিও আমার
প্রথম ভালোবাসা হয়ে রয়ে গেছো তুমি
ঠিক যেমন মলি, আঁখি, ইতিদের ছাপিয়ে
ভালোবাসার সুবজ ক্যানভাসে
দিনেরাতে ভেসে ওঠে
সপ্তম শ্রেণির বই হাতে মহুয়ার মুখ।
হয়তো মনে আছে তোমার, হয়তোবা ভুলে গেছো,
ইস্কুল যাওয়ার পথে
হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ একদিন চুমু খেলাম
মহুয়ার প্রভাতীরঙের গালে;
সেদিন তার গাল ফোলানো কাঁদন থামাতে
অব্যর্থ যে শব্দগুলো উচ্চারণ করেছিলাম,-
সেসব শব্দ ছিলো একটু ভিন্ ধরনের,
বলা যায়, তোমার প্রাপ্তবয়স্ক বর্ণমালার বাগান
যা বাইবেলের গন্দম বাগানের চেয়েও সুন্দর
এবং রসে-গন্ধে, সৌন্দর্যে-সম্মোহনে টইটম্বুর;
তার স্রোত আজও বহমান
আমার বাকল-ফাটা সত্তায়;
সেই ফল্গুধারা মাঝে মাঝে বাইরে আসে
কখনো কবিতা হয়ে
কখনো-বা হয়ে গান
যেভাবে পাহাড়ের অন্তরধারা
প্রকাশের বেদনায়
কোথাও ঝরনা, কোথাও-বা স্রোতস্বিনী।
আচ্ছা, স্বর্গের ভাষা কি? হিব্রু, আরবি অথবা সংস্কৃত?
হয়তো হবে এ তিনটির কোনো একটি! অথবা একাধিক!
তা সে যাই হোক,
মধ্যপ্রাচ্যের অভিবাসী দুজন বাঙালির দেখা হলে
রাস্তায় কিংবা রেস্তোরাঁয় ,
অথবা বহুভাষী শব্দে সচকিত কোনো এয়ারপোর্টে,
তাদের ঠোঁটে যেমন ফুটে ওঠে বাংলাভাষা,
যদি স্বর্গ বলে সত্যিসত্যি কিছু থেকে থাকে
এবং সেই স্বর্গে ঠাঁই হয় এই আমার আর মহুয়ার,,
স্বর্গীয় ভাষার সিলেবাস লংঘন করে,
এই আমি সেই দিনও বলবো, ‘তোমাকে ভালোবাসি মহুয়া!’
- প্রথম পাতা
- বিষয়
- _গল্প
- _কবিতা
- _প্রবন্ধ
- _ভ্রমণ
- _ফটোফিচার
- _বাংলাদেশের কলম
- _ধারাবাহিক
- _ফিল্ম রিভিউ
- _পাঠ পরিক্রমা
- Editions and Archive
- _২৫শে বৈশাখ
- _বৈশাখী সংখ্যা
- _স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা
- _প্রাক শারদ সংখ্যা
- _ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংখ্যা
- _শারদ সংখ্যা
- _মাহশা ইরান সংখ্যা
- _দীপাবলি সংখ্যা
- _ঋত্বিক ঘটক সংখ্যা
- _শক্তি চট্টোপাধ্যায় সংখ্যা
- _শীতকালীন সংখ্যা
- _প্রথম বর্ষপূর্তি সংখ্যা
- _বইমেলা সংখ্যা
- _ভাষা দিবস সংখ্যা
- _দোলযাত্রা সংখ্যা
- _পয়লা বৈশাখ সংখ্যা
- _কার্টুন সংখ্যা
- _শারদ সংখ্যা ১৪৩০
- _বিশেষ সংখ্যা
- _রক্ত করবী সংখ্যা
- Contact Us
- Editorial Team
- About Us