দোঁহা

আত্রেয়ী চক্রবর্তীর কবিতা

 


চন্দনচর্চিত

১.
যে চরণত রাঁখু এ যৌবনভার ও সুধা,
চুল এলিয়ে পদ্মপ্রণাম আঁকি যে স্থানে 
তাকে মানত বলে ডাকি, নিগূঢ় প্রেম

আমি আনোখা কৌস্তভমণি তাঁর
আমারই রাধাঅঙ্গের নীল পীতবাস সে—

বেফিকর নাগর, বখাটে কৃষ্ণ কানহাইয়া


২.
কী যমুনা গড়াচ্ছে সখী
শ্রাবণতটে পিচ্ছিল জীবন, চোখ আন্ধার এবে

ও-পাড়ার চাঁদ, রসিক কানু তুমি খুব 
ভোর ঘুরিয়ে দিচ্ছ নিম্নরসকলি বেশে 
আমি হ্লাদিনীশক্তি, আদিম স্তন্যস্বাদ
সত্য মেঙে খাই

তুমি তবে মায়াজোছনা, নাভিতিলে
আইসো এইবার
নতজানুপাপ, আনন্দসুখ


৩.
ভিজিয়ে দিয়েছে ও-দৃষ্টি
বাইরে অকালবোধন রোজ

পায়ে হাত রেখে দেবীবন্দনা গাইছে প্রিয়মুখ—
'শান্ত হও, রাধাভিমান ছুঁয়ে দাও জিভে'

আমি কুড়িয়ে নিচ্ছি কচিভুট্টা-দাঁত
পরম ইশ্বর-যত্ন, লজিজ মিঠাক্ষীর


৪.
যেমতি ভেবে বাটতে বসেছি শ্বেতচন্দন, আঃ-প্রলেপ 
সে হারামজাদা কাম, মাতাল নেশাড়ু এক
হাওয়া হয়ে খুলে দিচ্ছে পত্রলেখা, 
কোমরবন্ধনীস্তব

কৃষ্ণপাখ, তোমায় ছাড়া এ রমতি মিথ্যে
মৃগমদ তিলকম্ আঁক সব —
অর্ধশশী নখপদ

তুমি কে যুবক?
ঝিমিয়ে দিচ্ছ নেত্রকুসুম, জুড়োচ্ছে বনানী, 
রতিদণ্ড

স্থির

স্থিরা


৫.
এমন থমকায়ে যাচ্ছ, যেন আগমবেদে ভুলেছ ভান
সহাস্য খেল শিখছ মধ্যরাতে

সাঁই, দু-মুঠো রোদ দাও
বিকচ এ পদ্মে রাখো হাত, ওষ্ঠশূল–

ওলো রাধিকেপ্রণয়ী, এ-চোখে লাল আবির উড়ায়েছে কে!
পবিত্র লোকাচার, বিবাহ সংকেত
এয়োজল সব

জিভ নাও, পলাশ আঁচড়
থিরথির-গা
তোমার নারীটিরে করো বৈতরণী পার…

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন