অলক্ষ্য রঙ
মেঘলা অসুখী উচ্ছ্বাস আর অন্ধ শরীর ছুঁয়ে
ভিজে যায় দিন আয়ুর বুকে বর্ণিল পা রেখে
বাক্সবন্দী ডায়রির পৃষ্ঠাগুলো এখনো তাজা!
আঙ্গুল ছোঁয়ালেই উঠে চলে আসে
একটি একটি করে পাপড়ি খোলে
বাজে খোল, সাজে করতাল
ধুলো ঝেড়ে উঠে বসে হারমোনিয়ম
নিথর সময় থেকে কে যেন ডাক দিয়ে যায় ভিতর পানে
নেড়া পোড়া হারিয়ে গিয়ে স্মৃতি শুধু জ্বলছে যেখানে
স্মৃতির ভিতরে ছোট্ট খোলা জায়গা সেখানে
নানান বয়সী ছেলেরা জড়ো হয়ে নৃত্য করছে
সামনে আগুন পুড়িয়ে ফেলছে যা কিছু দাহ্য
আমি মার হাত ধরে অন্ধকার জানলায়
আগুনের কেরামতি দেখে প্রহর গুনছি দোলের
কিন্তু ভয় ও লেপ্টে ছিল অন্ধ কুয়োর মত
মাকে জোর করে চেপে ধরে রং মাখাবে বলে
হঠাৎ করে হানা দিত পালাইকাকু আর
অমনি লুকিয়ে পড়ত মা রান্নাঘরে
ধরা পড়ে গেলে আমার ভিতরঘরে বেজে উঠত
খুনের দৃশ্য দেখার তাড়না
পাকুদি আর দীপিকা মাসির মিলিত চেষ্টায় মা
মাটিতে বসে পড়তো ধরাশায়ী হয়ে আর
ওরা দুজনে মিলে চেপে ধরে আবির গুলাল
নাকে চোখে মুখে দাঁতে ঘষে ঘষে বসে না
যাওয়া অবধি ছাড়ত না আর আমি হলাম
সেই ছোট্ট মেয়েটি যে কিনা
পিচকিরি হাতে গেটের সামনে
ঘাড় গুঁজে দাঁড়িয়ে থাকত
মনে সাধ রং দেবার কিন্তু লজ্জায় স্থির
মা বলত দে রং! এ কি?
রাস্তার লোকটি দাঁড়িয়ে পড়ে বলছে
এই তো দাঁড়িয়ে আছি! দাও রং?
লজ্জা হল দোলের সাবেকি রং এখন বুঝি
তখন ভাবতাম হেরে যাচ্ছি বার বার লাল নীলের কাছে
সেই থেকে দোল মানেই দৌড় দৌড় দৌড়
মিহি সুগন্ধি গোলাপি আবির চিঠির মধ্যে ভরে
পাঠানো হলনা যাদের সেইসব মুখ
নীলাভ সুতোর মত অস্পষ্ট মায়ার মত
জড়িয়ে থাকে দোলের পরতে পরতে
ভাঙা নিধুবনে কে জেগে ওঠে এই অসময়ে
সুতীক্ষ্ণ বরফ ভেঙে সূক্ষ্ম ছলনায়?
কে উঠে আসে স্বপ্নসম্ভব সিঁড়ি বেয়ে
বশীকরণ আবির মেখে কার বন্দনায়?
অনাবিল আত্মস্মৃতির পথে বর্তমান চরণ। খুব সুন্দর লেখা।
উত্তরমুছুন