দোঁহা

শ্যামাশীষ জানার কবিতা



শীতঘুম

ভাল! আচ্ছা বেশ
ওহে ক্লান্ত সাপুড়ে
এবার সমস্ত লজ্জাকে মাথায় তোলো,
নাচিয়ে নাচিয়ে তোলো তোমার-
সমস্ত লুকানো প্রতিশোধী ফণা

মাথা কেটে নিয়ে সারা শরীর খুবলে খুবলে খেয়েছে
খোলস ছাড়িয়ে সমস্ত নিয়ে গেছে বিবস্ত্র চোখে
এবার তুমিই ডুব দাও  
নিমগ্ন হও

পৃথিবীর সবচেয়ে বুড়ো হাঙরের মুখগহ্বর থেকে ভেঙ্গে আনো একটি নির্বাণ দাঁত
ছিঁড়ে নাও এ অদৃশ্য মায়াজাল
খুলে নাও আমার নির্লজ্জ খোলস

তারপর শীতঘুমে চলে যাব তোমার নির্জন বুকের ভেতর



আত্মসন্ধান
 
["ঘামে যে রয়েছে নুন, তার অর্থ, সমুদ্রে ছিলাম” - রণজিৎ দাশ]


তোমার আয়ুঃস্থানের ঘ্রাণ নিতে নিতে আমি জেনে যাই-
সমস্ত অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের মৃত কাহিনী,
তোমার মনকুয়ার মধ্যে
এখনও জলের চিহ্ন আছে বুঝে
ঠোঁটে করে বয়ে এনে ফেলি
এক-একটি নুড়ি-পাথর

আজও অশক্ত হৃদয় নিয়ে-
কেটে রাখি নিজেদের ডালপালা,
কাণ্ডকে ধীরে ধীরে ছেঁটে ছোট করে-
নরম চোখে বলি “আবার বড় হও”

একদল অসহিষ্ণু মোরগ লাল-ঝুঁটি বেঁধে
কানে কানে ফিসফিস করে বলে যায়
“এখন তোমাদের ঘুমিয়ে পড়ার সময়”

তবুও মনে-প্রাণে সাহস সঞ্চয় করে
বুকের ভেতরে তাঁবু খাটিয়ে বসে থাকি-
সমগ্র মহাকাশের রাত্রিদৃশ্য দেখব বলে।  
একে অপরকে খুঁজে দিই
দুটি বিষণ্ণ নক্ষত্রের ঘুমের ঘর,
তারপর আদিম সর্প ও সর্পিনীর মত
সারা শরীরে অতৃপ্তির লবণ মেখে
অনন্তকাল শুয়ে থাকি মাটির ভেতর...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন