দোঁহা

রাজেশ গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা

 


ভাগশেষ 

১.
মানচিত্রে কাঁটাতার, প্রাচীন ছলাৎ ছল এখনো শেখেনি বাটোয়ারা  
ম্যানগ্রোভ শিকড় বিছিয়ে দেয় ভুল করে এদিকের পলির আঠায়
স্মৃতির ছাঁকা তেলে ভেসে ওঠে ‘আমাগো দ্যাশ!'…চকচক করে ওঠে ঘোলা কনীনিকা
“এতদিন পরও ফসিল আঁকড়ে পড়ে থাকবে, দাদু!”
“কিভাবে বোঝামু তগো, এ আগলাইয়া থাহনে কি মিঠাস!” অব্যক্ত এ কথা ছুঁয়ে টুপটাপ খসে পড়ছে অলীক শিশির…

২.
যে দেশের কোল থেকে খসে গেছে কোলের শিশুটি, 
শুকনো দুধের বোঁটা চুষতে চুষতে কচি ঠোঁট ব্যাথা হয়ে এলে কান্নাই সম্বল 
মাগো, মুখ ফুটে বলনি কেন একদিন হাত ছেড়ে দেবে?
টলমলে পায়ে চলতে চলতে কতবার হোঁচট খেয়েছি, রক্তপাতও উপেক্ষা করেছি
হারানোর চেয়ে আর বড় ব্যাথা কিসে, মা!

৩.
গোয়ালন্দ ঘাট থেকে স্টীমার ছাড়ার পর ভাসতে ভাসতে একটা বিন্দু হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছিল
দুচোখ ঝাপসা হওয়ার আগে পর্যন্ত দেখেছিলাম সাহিল, জহির, আনোয়াররা তখনও দাঁড়িয়ে…সুফিয়া একটু দূরে একা...
ঠাকুরঘরের গা ঘেষে থাকা জবা ফুল গাছটায় ঝেঁপে ফুল ফুটলে কে আর তুলবে সাজি ভরে?
ব্রাহ্মণপল্লী নামটা নিশ্চয়ই বদলে যাবে? এতদিনকার কোন চিহ্নই কি থাকবে না?
কেউ বলতেই পারেনি। জ্যেঠু, বাবা, কাকা কেউই এর আগে বাস্তুভিটে হারায়নি কখনো…



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন