ভাদ্র ৩
কাল ভাদ্র, মনে পড়ে?
চিরন্তন স্টেশনের কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছিস তুই
বরাভয় কিচ্ছু নেই
কোথাও তাহার কোনও পদচিহ্ন অক্ষত নেই
নেই সীমা
পারাবার
অভূতপূর্ব এই দুপুরের রোদ্দুরের ধারা
ধারা ধরে হেঁটে যাচ্ছে আরূঢ় মানুষ প্রান্তরে
প্রান্তরে প্রান্তরে পদক্ষেপের মতো ঘরদোর
ভিতরে ভিতরে তার সুফলার তীব্র আঁধিয়ারা
এই অন্ন
এ মনসা
এ তীক্ষ্ম সাপের মতো রোদ
কাহাকে শোনাও তুমি তোমাদের আত্মনাশগুলি
পথের পাথরে কাটে পায়ের নিচের উপশিরা
পথের রক্তে কাটে তোমাদের জন্মহীন নাড়ি
তবু দেখো ধান্যক্ষেত্র
অবাধ্য হয়েছে কার চুলে
চুলে তার বিলি দেয় ধানের দুধের মতো ছেলে
ছেলেটি পরম
সেই পুরুষ পরম আগুনই তো
যে অগ্নি মুখে করে খেলো তুমি বিশ্বমহীয়সী
এই ভরা ভাদরের অবজ্ঞার বল্গাহীন জলে
ভেসে যাও ভেসে যাও বেহুলার স্তন ছিঁড়ে নিয়ে
টুপটুপ রক্ত
ঐ দেখো কার বুক থেকে ঝরে
লখিন্দরের হাওয়া এসে লাগে রাঢ়ের অন্তরে
"ভাত দাও! ভাত দাও!" —ডেকে ওঠে ঋতুমতী নদী
তুমি ভাদ্র, তুমি অন্ন, তুমি মোর একান্ন সতী…
সাঁই
যে তোমার নাভিমুখ ছুঁয়ে গেছে বাউল বাউল
তাকে তুমি চেনো না, চেননি কখনও
ঠোঁটের বসন্ত দিয়ে যোনিপথে এঁকেছ বিরহ...
বাদামি রোমের চোখে
ভেসে উঠে ডুবে গেছে
যে তোমার কামনা-উল্লাসে
তাকে তুমি চেননি তো
তাহাকে চেনেনি আর কেহ!