আহতঋণ
সীমাহীন দুঃখ পেরিয়ে যদি ঠাঁই পাই তোমার চৌকাঠে, গিলে ফেলতে পারি সমস্তরকম গরলতা।
দীর্ঘজীবনের সব অনুতাপকে দু পায়ে পিষে দিয়ে ছুটে চলে যেতে পারি চিলেকোঠার গোপন অভিসারে, নিজে হাতে সাজিয়ে নিতে পারি নিজেরই বরণডালা;
কী অদ্ভুত দেখো, কিছুদিন আগে অবদিও তোমার ত্রিসীমানায় অন্য কারোকে দেখলে আমার মস্তিষ্কে জ্বলে উঠলো সাত মশালের আগুনসম তেজ। আর আজ তোমার ঘরের পর্দা সরাতেই দেখি সেখানে খেলনাবাটির সংসার পাতা রয়েছে অসাধারণ যত্নতে, তিনটি কাঁসার থালাতে সাজিয়ে নিয়েছো আজীবনের সমারোহকে।
তুমি বলেছিলে ভালোবাসলে নাকি মানুষের গায়ে আলোর ফুল ফুটে ওঠে,আমার গায়ে সেই ফুল কোনোদিন ফোটেনি বলেই কি তুমি চৌকাঠের ওপারে অন্য সংসার সাজিয়ে নিলে? যেসব পাতা দিয়ে ঢেকে রেখেছিলাম যাবতীয় শোক-সন্তাপকে, তাদের শিকড় থেকে উপরে ফেলে দিয়ে শুধু ফুল খুঁজে চললে তুমি।
শুধু সাজটুকুই দেখলে, আড়ালে তার আহতঋণ এড়িয়ে গেলে সযত্নে।
বন্ধুতা
ভাসিয়ে দিলেম অক্ষরতরী অথৈ তোমার জলে,
তারপর থেকেই সব কবিতা শোক হয়ে জ্বলে ওঠে।
আর যেসব জবানবন্দি পুরোনো হওয়ার নয়, তার ওপর ফুল হয়ে ফুটে থাকে আমাদের ভালোবাসা।
সে সম্পর্কের নাম হতে পারে চন্দ্রমল্লিকা, বা কচুরিপানার মতন প্রবহমান কিছু;
কিন্তু আসলে তো লোকে যাকে প্রেম বলে, আমি তার নাম দিয়েছি বন্ধুতা, যার ওপর টলটল করছে একজীবনের সমস্তরকম চাওয়া পাওয়ার ইস্তেহার।
ক্ষমা
ক্ষমা করে দিও আমায়।
আমি তোমার মতো করে ছেড়ে যেতে পারিনি কিছু মায়া।
এক শতাব্দীকাল ধরে জড়ো করেছি অন্ধকার আর বুকের ভেতর পিদিম জ্বলেছে অনর্গলের ব্যথায়...
ক্ষমা করে দিও আমায়, আমি ভরাট আসরে চিৎকার করে বলে ফেলেছিলাম-"ভালোবাসি"।
ক্ষমা করে দিও আমায়।
