দোঁহা

রবীন বসুর গুচ্ছ কবিতা


 সময় কষ্টের কথা

সমস্ত সন্ত্রাস থেকে মুখ তুলে ধরে রোদসূর্যতোরণ দেখেছে আক্রমণ সমুদ্যত শত্রুর বর্শিত বর্শা ছুটে আসে দ্রুততায় বীরের বিচিত্র শৌর্য তাকে করে প্রতিহত।

এভাবেই দিন গেল, ইতিহাস হেঁটে আসে রুগ্ন রুক্ষ বালুভরা মৃত প্রান্তরের দেশে, এখানে কপালঘামে কৃষকের মাটি ভেজে যন্ত্র কথা বলে শ্রমে, তবু অনাহার শেষে।

ভগ্ন সভ্যতার মুখ বিকৃত অস্থির বলেগুহামানবীর মনে একটুও শান্তি নেই সন্তানসন্ততি সুখ, দেহের চাহিদা যেন ঘোরতর অমঙ্গল ডেকে আনে দিনান্তেই।

এইসব যে প্রত্যাশিত রেখাচিত্র গুহালিপি 

সময় কষ্টের কথা লিখে রাখে দাহ্যলিপি।



শান্তিকল্যাণ

আপাত শান্তি প্রস্তাব মূলতুবি থাক নখের ধার বাড়ুক থাবার কৌশল পরিকল্পনামাফিক এই যে ত্রিকোণ ধ্যাষ্টামি আর চালাক আবহমণ্ডল মুখ বের করে থাকে, দৃষ্টি খরতর এইবার অব্যর্থ লাফ ঘাড় বা গর্দান মটকাতে মটকাতে যাক সমূহ বিনাশ দু'পক্ষের মাঝখানে তৃতীয় পক্ষ নেই ভান ভনিতা ছাড়া এত যে আক্রান্ত দম্ভ খসে খসে পড়ে, জয় পরাজয় শিকেতে দোলা খায়, নিপুণ দোলন মানচিত্র এঁকে দেয় শক্তির গরিমা প্রভূত প্রভুত্ব নিয়ে জেগে ওঠে দিন আপাত শান্তিকল্যাণ স্থির হয়ে থাক্।

 

নবজন্ম

বুকের ভিতরে নরম শোক, কোথা যাও মাঝি 

তোমার দাঁড়ের শব্দে উড়ে গেছে জলভাসা পাখি

রুপোর স্রোতের থেকে দুঃখ খুঁটে নিয়ে নারীও

ভেসেছ দূরে; ঘাটহীন আঘাটা প্রান্তরের ছবি

দোলায় দৃশ্যের জাদু মোহিনীঅট্টম হয়ে নাচে

যে রহস্য জলে আছে, আকাশে বা অন্ধকারে

তোমার বাহুর টানে আন্দোলিত গতি ও গমনে

সে নারী সঁপেছে প্রাণ তার কান্না ফোঁটা হয়ে ঝরে

অধরা দৃশ্যের কাছে মায়াস্বপ্ন হাঁটু ভেঙে বসে

সুগন্ধি রুমাল নিয়ে প্রেমিকারা বনভোজন সারে

দিনান্তে হাসির সাথে বিষাদের সন্ধ্যাতারা জাগে

করুণ প্রেমিক শুধু কালপুরুষ চোখে নিয়ে হাঁটে

এভাবেই নদী ডাকে, স্রোত আর জলের চিৎকারে 

মাঝির সমস্ত শরীর শ্যাওলা মেখে নবজন্ম পায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

মোট পৃষ্ঠাদর্শন